Ajker Patrika

গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ১০
গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ

আজ ৭ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবস। তৎকালীন মহকুমা গোপালগঞ্জ ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের এই দিনে পাক হানাদারের কবল থেকে মুক্ত হয়।

গোপালগঞ্জে পাক হানাদারদের হাত থেকে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ থেকেই। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মুক্তি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল গোপালগঞ্জ।

মুসলিম লীগ নেতাদের সহযোগিতায় ৩০ এপ্রিল গোপালগঞ্জে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী প্রবেশ করে মুক্তিকামী মানুষের ওপর নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ (বর্তমানে) সংলগ্ন জয়বাংলা পুকুর পাড়ে গড়ে তোলে মিনি ক্যান্টনমেন্ট। পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাপ্টেন ফয়েজ সেখানে (বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন) অবস্থান করতেন।

তারা প্রথমে শহরের ব্যাংক পাড়ায় বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়ি (বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়) পুড়িয়ে দেয়। এরপর পাকিস্তানি সৈন্যরা ১০ থেকে ১২টি দলে বিভক্ত হয়ে শহরের হিন্দু অধ্যুষিত স্বর্ণপট্টি, সাহাপাড়া, সিকদারপাড়া, চৌরঙ্গী এবং বাজার রোডে লুটপাট করে আগুন দেয়। এতে প্রায় এক হাজার ঘরবাড়ি পুড়ে যায়। পরে তারা হত্যা আর নারী ধর্ষণ শুরু করে। পাকিস্তানি হানাদাররা মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী মানুষ ও সংগঠকদের উপজেলা পরিষদের মিনি ক্যান্টনমেন্টে ধরে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে গণকবর দেয়।

৬ ডিসেম্বর সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে বিভক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করতে শুরু করে। চারিদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করতে করতে এগিয়ে আসেন। প্রবাসী সরকারকে ভারতের স্বীকৃতি দেওয়ার সংবাদ শুনে এখানকার পাক হানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়।

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাক হানাদার বাহিনীর গোপালগঞ্জের মিনি ক্যান্টনমেন্ট দুর্বল হয়ে পড়ে।

গভীর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করবে রাজাকারদের মাধ্যমে এমন সংবাদ জানতে পেরে পাক সেনারা ক্যাপ্টেন ফয়েজের নেতৃত্বে ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে মিনি ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে পালিয়ে যায়।

৭ ডিসেম্বর সকালে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষ শহরে মিছিল বের করে বিজয়ের আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।

মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে গোপালগঞ্জ, মাঝিগাতী, দিগনগর সুকতাইল, ভাটিয়াপাড়া, ফুকরা, রাজাপুর, বৌলতলী, সাতপাড়সহ বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়।

দিবসটি উপলক্ষে গোপালগঞ্জে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। শহরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিসের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন মুক্তিযোদ্ধারা। আজ সকালে ৭১-এর বধ্যভূমি (জয়বাংলা পুকুর পাড়) স্মৃতিসৌধ ও শহরের লঞ্চঘাটের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সকালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে। বিকেল ৩টায় শহরের শেখ ফজলুল হক মণি স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে আঞ্চলিক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত