Ajker Patrika

উচ্ছ্বাস যেমন আছে, আছে হতাশাও

উচ্ছ্বাস যেমন আছে, আছে হতাশাও

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, ‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান’। বছরের ক্ষেত্রে এ যেন চিরন্তন এক বাণী। নতুনের আগমনে পুরাতনের বিদায়। দেখতে দেখতে শেষ হতে বসেছে ২০২২। আগমনের অপেক্ষায় নতুন বছর। নতুন দিনে পদার্পণ করার আগে ধারাবাহিক বর্ষপরিক্রমা পর্বের এ অংশে চলুন দেখা নেওয়া যাক বিদায়ী বছরে কেমন ছিল দেশের ক্রীড়াঙ্গন।

জয় দিয়ে শুরু হার দিয়ে শেষ
বছরের শুরুতেই বড় আশা জাগিয়েছিল দেশের ক্রিকেট। পয়লা জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট শুরু করে বাংলাদেশ। দেশের ক্রিকেটে বছরের প্রথম জয়টাও আসে এই টেস্ট দিয়ে। মুমিনুল হকের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো কিউইদের তাদের মাটিতে হারায় বাংলাদেশ। বছরের শেষ টেস্টেও জয়ের আশা জাগিয়েছিল। তবে ভারতের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে আশা জাগিয়েও হারেন সাকিব আল হাসানেরা। সেই সঙ্গে ডোবে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায়। তবে সফরে আসা বিরাট কোহলিদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। ২০২২ সালে বাংলাদেশের পুরুষ ক্রিকেট হেঁটেছে সর্পিল পথে। পুরো বছরে ১০ টেস্ট, ১৫ ওয়ানডে ও ২১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তাতে টেস্ট জয় পেয়েছে মাত্র একটি। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও সবার পেছনে থেকে বছর শেষ করেছে তারা। ওয়ানডেতে পেয়েছে ১৫ জয় এবং টি-টোয়েন্টিতে ৬। সাকিব টি-টোয়েন্টি নেতৃত্বে ফিরলেও এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবি হয় বাংলাদেশের। ৬ মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আর ফেরেননি তামিম ইকবাল। এই ফরম্যাট থেকে অবসরই নিয়ে নেন তিনি। টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানান মুশফিকুর রহিমও। টেস্ট থেকে অবসর নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিদায়ী বছরে উজ্জ্বল ছিলেন লিটন দাস। তিন ফরম্যাটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে বছর শেষ করছেন তিনি। টেস্ট ব্যাটারদের র‍্যাঙ্কিংয়েও রেকর্ড গড়া উন্নতি হয়েছে তাঁর। বছর শেষ হওয়ার আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফের আলোচনা। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি থাকলেও গত মঙ্গলবার বিসিবিতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এ বছর তেমন সাফল্যের দেখা পায়নি বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলও। 

জামালদের ব্যর্থতা, সাবিনাদের জয়
২০২২ ছিল ফুটবল বিশ্বকাপের বছর। আর সেই বছরে পিছিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে নিচে নেমে জামাল ভূঁইয়াদের ঠাঁই হয়েছে ১৯২-তে। বছরের শুরুতে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৮৬। লিগেও ছিল না প্রতিযোগিতার ছোঁয়া। অথচ এখন ফুটবলারদের পারিশ্রমিক বেড়ে কোটিতে ছুঁয়েছে। তবুও পিছিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল। বিদায়ী বছরে আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যদের জয় মাত্র একটিতে। সেটি কম্বোডিয়ার বিপক্ষে। যা ছিল ২০২১ সালের একেবারে ভিন্নচিত্র। ইংলিশ কোচ জেমি ডে’কে সরিয়ে দেওয়া হলেও উন্নতি আসেনি বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে। এমনকি এই ইস্যু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) ফিফার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয়। তবে জামালদের ব্যর্থতার বছরে দেশের ফুটবল মাতিয়ে রাখেন সাবিনা খাতুন-মারিয়া মান্দারা। নেপাল থেকে সাফ জয় করে দেশের মানুষকে আনন্দে ভাসান তাঁরা। দেশে ফিরে ছাদখোলা বাসে চলে শিরোপা উদ্‌যাপন করেন নারী ফুটবল দল।

হকিতে দিন বদল
ক্রিকেট-ফুটবলের চাপে দেশের হকি নিয়ে তেমন কারও উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই বললেই চলে। তবে এ বছর হকিতে সূচনা হয় নতুন দিনের। গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হয় দেশের প্রথম হকি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ‘হকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’। যেখানে দল ছিল সাকিবেরও। এই আসরের প্রথম শিরোপা ঘরে তোলে একমি চট্টগ্রাম। 

নিষিদ্ধ রোমান সানা
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বড় নাম আর্চার রোমান সানা। টোকিও অলিম্পিকে প্রতিনিধিত্বও করেন তিনি। তিন বছর আগে আর্চারি বিশ্বকাপে দেশকে ব্রোঞ্জও এনে দেন তিনি। তবে গত নভেম্বরে শৃঙ্খলাজনিত কারণে তাঁকে দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত