Ajker Patrika

অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি

হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮: ১৭
অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি

নরসিংদীর রায়পুরায় সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে নামে বেনামে শতাধিক অবৈধ করাতকল। পরিবেশ ও বন বিভাগের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই যেখানে-সেখানে গড়ে উঠেছে করাত কলগুলো। উপজেলা বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০২০ পর্যন্ত ৬৩টি করাতকল হয়েছে। এর মধ্যে ১০ টির লাইসেন্স থাকলেও নবায়ন করা হয় না দীর্ঘ দিন। লাইসেন্সর আবেদন পরেছে ১৩টি। এর পর আর কোনো জরিপ করা হয়নি।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন আইন অনুযায়ী কোনো করাতকল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। লাইসেন্স নেওয়ার পর প্রতিবছর নবায়ন করতে হবে। করাতকল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স পাওয়ার পর পরিবেশ অধিদপ্তরের ক্যাঁচ থেকেও ছাড়পত্র নিতে হয়। এসব কাগজপত্র ছাড়া করাতকল স্থাপন করা যাবে না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় নজরধারীর অভাবে করাতকল স্থাপন করে কাঠের ব্যবসা করছেন। করাতকলের তথ্যের জন্য উপজেলা বন কর্মকর্তার অফিসে গেলে, প্রায়ই বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা বন কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় জেলা বন অফিস থেকে একজন কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন এখানে। তাই মাঝে মধ্যে তিনি অফিস করেন। গত এক বছর ধরে করা হয়নি কোনো জরিপ। বর্তমানে উপজেলায় কত করাত কল রয়েছে তার সঠিক তথ্য নেই অফিসে।

উপজেলার বিভিন্ন করাত কল ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে অনুমোদন ছাড়াই চলছে অনেক করাতকল। এ সব করাত কল চত্বরে গেলে দেখা যায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মজুত করে রাখা হয়েছে। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব করাতকলে বিরামহীন চলে কাঠ কাটার কাজ।

সাপমারা এলাকার ভাই ভাই করাতকলের মালিক শাহ জালালকে মোবাইল ফোনে লাইসেন্স নিয়ে জিজ্ঞেস করলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে কিছু না বলেই কেটে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করাতকল মালিক বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের সমিল চলছে। অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি তবে এখনো অনুমোদন পাইনি। করাতকল চালু করে তো বন্ধ রাখতে পারি না । তাই এ ভাবেই চালাচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন করাতকল মালিকের কাছে অনুমোদন বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, আবেদন করেছেন। তবে অনুমোদন পেয়েছেন কিনা তা জানতে চাইলে কথা না বলে বিষয়টি তাঁরা এড়িয়ে যান।

কাঠ ব্যবসায়ী মোস্তফা বলেন, ‘আমরা কাঠের ব্যবসা করি। বিভিন্ন এলাকার গাছ মালিকদের কাছ থেকে কিনে মিলে এনে বিক্রি করি। এ ব্যাবসা করে আমাদের সংসার চলে।’

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ মোবাইল ফোনে বলেন, বর্তমানে সঠিক কত করাত কল আছে তার কোনো পরিসংখ্যান নাই। আপনি যা জানেন তাই সঠিক। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া অবৈধভাবে করাতকল স্থাপন বা চালানোর কোন সুযোগ নেই। অবৈধ করাত কলের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ভ্র্যাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো . আজগর হোসেন বলেন, এটা সম্পুর্ন বন বিভাগের কাজ। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্তা নিতে পারি। বন বিভাগ উপজেলা প্রশাসনের কাছে যে কোনো সহযোগিতা চাইলে সব সময় দিতে প্রস্তুত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত