Ajker Patrika

তিনি নারী নন, আবদুল হক

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ০৯
তিনি নারী নন, আবদুল হক

ভাষা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে তখন। পত্রপত্রিকায় নানা ধরনের লেখালেখি চলছে। পাকিস্তান তখনো হয়নি, কিন্তু এরই মধ্যে ১৯৪৭ সালের ১৭ মে হায়দরাবাদে ভারত মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান ঘোষণা করে দিয়েছেন, উর্দুই পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা হবে। ১৯ মে দৈনিক আজাদে খবরটি প্রকাশিত হয়। এরপর আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর জিয়াউদ্দিন আহমেদ জুলাই মাসে ‘উর্দুই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে’ বলে উর্দুর পক্ষে ওকালতি করেন।

১৯৪৭ সালের ২২ ও ২৩ জুন দৈনিক ইত্তেফাকে দুই কিস্তিতে আবদুল হকের ‘বাংলা ভাষাবিষয়ক প্রস্তাব’ প্রবন্ধটি বের হয়। ২৯ জুলাই ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা ‘পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা’ বের হয় আজাদ পত্রিকায়।

এ রকম যখন চলছে, তখন স্বাধীনতা নামক একটি পত্রিকায় ১৯৪৭ সালের ২৩ জুন ‘পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ নামে একটি চিঠি ছাপা হয়। চিঠির লেখক হিসেবে সেখানে দেখা যায় আয়েশা বেগমের নাম।

তবে নারীর ছদ্মনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল সাপ্তাহিক বেগম পত্রিকার ১৯৪৭ সালের ৩ আগস্ট। মিসেস এম এ হক ছিল সেই ছদ্মনাম। তখন সবাই ভেবেছিল, এ নামেই কেউ হয়তো লিখেছেন প্রবন্ধটি। লেখক তাঁর ‘পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ নামের প্রবন্ধটিতে বলেছেন, ‘...যেহেতু পাকিস্তানে তিন ভাগের প্রায় দুই ভাগ অধিবাসীর মাতৃভাষা বাংলা, সেহেতু রাষ্ট্রভাষা হওয়ার দাবি সর্বাপেক্ষা প্রবল বাংলা ভাষার। অতএব পূর্ব পাকিস্তানে যাতে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষারূপে গৃহীত হয়, সে জন্য আমাদের নারী সমাজ সর্বত্র আন্দোলন করবেন আশা করি।’

মিসেস এম এ হক আসলে লেখক আবদুল হক। এ ব্যাপারে আবদুল হক পরে লিখেছেন, ‘...রাষ্ট্রভাষা বাংলার সপক্ষে লেখার অদম্য প্রেরণার মিসেস এম এ হক ছদ্মনামে চতুর্থ প্রবন্ধ লিখেছিলাম সাপ্তাহিক বেগম পত্রিকার তেসরা আগস্ট সংখ্যায়। শিরোনাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’। দেখাদেখি কয়েকজন লেখিকা বাংলা ভাষার সপক্ষে বেগমের পরবর্তী সংখ্যাগুলোতে লিখেছেন মনে পড়ে।’

সূত্র: এম আর মাহবুব রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও একুশের ইতিহাসে প্রথম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত