Ajker Patrika

সারের বাড়তি দাম আদায়

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২১, ২১: ১৬
সারের বাড়তি দাম আদায়

কিশোরগঞ্জে খুচরা বাজারে ইউরিয়া সার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বস্তা প্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা বেশি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিলারদের কাছ থেকে তাঁদের বেশি দামে কিনতে হয়; তাই তাঁরা বেশি দামে বিক্রি করছেন। এদিকে কৃষকেরা বলছেন, বেশি দামে বিক্রি করলেও, কোনো রসিদ দিচ্ছেন না বিক্রেতারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের তদারকি না থাকায় আমনের ভরা মৌসুমে বাজারে ইউরিয়া সারের দাম বাড়ানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার জেলার সদর উপজেলার মাইজখাপন, মহিনন্দ, কর্শাকড়িয়াইল এবং তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের তালজাঙ্গা বাজার এলাকায় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। এ সময় বিসিআইসির নিয়োগ করা সার ডিলারদের অধিকাংশ দোকান তালাবদ্ধ দেখা যায়। ডিলারের কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও, নিয়ম অনুযায়ী ঝোলানো ছিল না সার বিক্রির সরকার নির্ধারিত মূল্যের তালিকা।

স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, সরকার ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ইউরিয়া সারের দাম নির্ধারণ করেছে ৮০০ টাকা। কিন্তু বাজারে ইউরিয়া সার মোটা-চিকন প্রকার ভেদে সাড়ে ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রি করায় কোনো দোকানদার রসিদ দিচ্ছেন না।

সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের হেলাল উদ্দিন নামের এক কৃষক বলেন, তিনি এক বস্তা ইউরিয়া সার (চিকন) ১ হাজার টাকায় কিনেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারাইল উপজেলার তালজাঙ্গা বাজারের এক খুচরা সার বিক্রেতা বলেন, ডিলারদের কাছ থেকেই বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে তাঁদের। এ কারণে তাঁরা প্রকার ভেদে প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার সাড়ে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন।

এ নিয়ে জানতে স্থানীয় কয়েকজন ডিলারদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ডিলার বলেন, কিছু ডিলার নিজ ইউনিয়নের খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি করছেন না। তাঁরা পাশের ইউনিয়নের খুচরা দোকানিদের কাছে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। নিয়ম অনুযায়ী, সার আমদানির অ্যারাইভাল রিপোর্ট স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর নিয়ে গুদামজাত এবং বিক্রি করার কথা। কিন্তু এই নিয়ম মানা হয় না বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই।

এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নে মিজানুর রহমান নামের এক ডিলার কালোবাজারে ১৭৫ বস্তা সার বিক্রি করেছেন। এ ঘটনায় স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সদস্যসচিব জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামার বাড়ি) উপপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হয়েছে। কয়েকজন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে বেশি দামে সার বিক্রি ও মজুতে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া সারের কোনো সংকট নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত