Ajker Patrika

এবার মিরাজ ২.০

রানা আব্বাস, ধর্মশালা থেকে
এবার মিরাজ ২.০

বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আগে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে একটা তথ্যচিত্র বানিয়েছিল আইসিসি। যেখানে দেখানো হয়েছিল মিরাজের মধ্যে ভবিষ্যতের সাকিব আল হাসান হওয়ার সম্ভাবনা লুকিয়ে। 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭ বছর কাটিয়ে দেওয়া মিরাজের মধ্যে সম্ভাবনা থাকার পরও নিজেকে দুর্দান্ত অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর ব্যাটিং পজিশন। সাত-আটে নেমে একজন ব্যাটারের পক্ষে কয়টাই আর বড় ইনিংস খেলা যায়? একজন লেট অর্ডার ব্যাটারের সামনে বড় ইনিংস খেলার সুযোগ আসা মানে বুঝতে হবে সেদিন দলে ব্যাটিং লাইনআপে রিখটার স্কেলের ৭.৫ মাত্রায় ভূমিকম্প হয়ে গেছে! ওই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে বড় ইনিংস খেলা আরও কঠিন।

এই কঠিন পরিস্থিতিতে মিরাজের সেঞ্চুরি করার কীর্তি আছে, সেটিও আবার ভারতের মতো দলের বিপক্ষে। আছে দুটো ফিফটিও। এর মধ্যে একটা আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো অপরাজিত ৮১। তাসকিন আহমেদের যে রূপান্তর গত তিন বছরে দেখা গেছে, গত এক বছরে মিরাজেরও এই রূপান্তর। তাসকিনের লক্ষ্য বিশ্বমানের ফাস্ট বোলার হওয়া আর মিরাজের লক্ষ্য দুর্দান্ত এক অলরাউন্ডার হওয়া। 

সেই অলরাউন্ডার হওয়ার পথে অসাধারণ এক ব্যাটার মিরাজকেই দেখা যাচ্ছে এখন। ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেতে বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্বের খবরও অজানা নয়। আগে টি-টোয়েন্টি কমবেশি পেলেও ২৫ বছর বয়সী অলরাউন্ডার ওয়ানডেতে নিজের ব্যাটিং-তৃষ্ণা মেটানোর দারুণ সুযোগ পাচ্ছেন গত এশিয়া কাপ থেকে। কখনো মেক শিফট ওপেনার হিসেবে খেলছেন। কখনো টপ অর্ডারে। তাঁর সেরা গড় (৫৭) ওপেনিং আর তিন নম্বর পজিশনে। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচসহ মিরাজের সর্বশেষ সাত ইনিংস দেখুন: ৫৭, ৭৪, ৬৭*, ১৩, ২৮, ০ ও ১১২* । এ যেন তাঁর নতুন ভার্সন ‘মিরাজ ২.০’।

গতকাল আফগানদের বিপক্ষে ফিল্ডিং, বোলিং আর ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত করা মিরাজ নিজের রূপান্তর নিয়ে বললেন, ‘তাসকিন ভাই প্রায় তিন বছরের মতো দলে ছিল না। অনেক কঠিন পরিশ্রম করেছে। এবং ফিরে এসেছে। আগেও বলেছি—যদি ব্যাটিংটা করতে পারি দলও লাভবান হবে, আমিও লাভবান হব। কেন আমি ভালো ব্যাটিং করব না? আমি সব সময় ব্যাটিং অনুশীলন করার চেষ্টা করি। আমি যাদের পছন্দ করি, তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি, কীভাবে উন্নতি করা যায়।’ 

যতই ভালো করুন, মিরাজের ব্যাটিং পজিশন এখনো নির্দিষ্ট নয়। এ নিয়ে  চিন্তিতও মিরাজ, ‘আমরা খেলোয়াড়, আমাদের মানিয়ে নেওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আমি না, আমাদের সব ক্রিকেটারই এ রকম একটা পরিস্থিতি পার করেই এসেছে। বড় কিছু অর্জন করতে গেলে মানিয়ে নেওয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেশির ভাগ সময়ে ৮ নম্বরে ব্যাটিং করেছি। এখানে সব সময় সুযোগ পাওয়া যায় না অনেক বড় স্কোর খেলা, বল কম থাকে। যখনই সুযোগ পাই, আমি যেন শতভাগ দিতে পারি, যেকোনো পজিশনেই হোক না কেন। এভাবে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করেছি।’

যতই বলুন, ওপেনিং, টপ অর্ডার আর নিচের দিকে ব্যাটিং করার মধ্যে বড় পার্থক্য আছে। এখানে মানসিকভাবে কীভাবে তৈরি হন, খুলেই বললেন মিরাজ, ‘একেক পজিশনে একেক পরিস্থিতি থাকে। কিন্তু আমি বেশি চিন্তা করি না। যেহেতু আমাকে সুযোগ দিয়েছে, আমি চেষ্টা করি সেটা কাজে লাগাতে। অবশ্যই অনেক সময় সমস্যা হয়। সেটা বেশি মাথায় নিই না। চিন্তা করি যেখানেই ব্যাটিং করতে দেওয়া হোক না কেন, দলের প্রয়োজনে ভালো করতে হবে। আমরা সবাই দলের জন্যই খেলি।’

২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে টুর্নামেন্টসেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন মিরাজ। বড়দের বিশ্বকাপে এবার অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে দারুণ শুরুর পর এমন একটা স্বপ্ন কি তাঁর মনে উঁকি দিচ্ছে? মিরাজ বললেন, ‘যদি বড় টুর্নামেন্টে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করতে পারি, এটা অবশ্যই আমার অনেক বড় অর্জন হবে এবং দলের জন্যও হবে। এটা সবারই স্বপ্ন থাকে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরোনো রাউটার ফেলে না দিয়ে যে কাজে ব্যবহার করতে পারেন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত