Ajker Patrika

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনীহা শেবাচিম হাসপাতালের

খান রফিক, বরিশাল
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনীহা শেবাচিম হাসপাতালের

চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে। হাসপাতালে ক্ষতিকর ও জীবাণুযুক্ত বর্জ্য কোনো রকম ফেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার মাধ্যমে পরিবেশদূষণ হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ছড়াচ্ছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, শেবাচিম হাসপাতালকে চিঠি দিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের তাগিদ দেওয়া হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসা বর্জ্যের দ্বারা রোগজীবাণু ছড়িয়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

হাসপাতাল কম্পাউন্ড ঘুরে দেখা গেছে, মূল ভবনের পশ্চিমাংশে খোলা জায়গাকে ডাম্পিং হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে বিভিন্ন চিকিৎসা বর্জ্য ফেলে রাখা হয়। পাখি, কুকুর, বিড়াল অনেক সময় এসব বর্জ্য চারদিকে ছড়িয়ে পরিবেশদূষণ ঘটাচ্ছে। এই অবস্থায় গত ৮ আগস্ট হাসপাতালের পরিচালককে লিখিত চিঠি দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আব্দুল হালিম স্বাক্ষরিত চিঠিতে দ্রুত পরিবেশগত ছাড়পত্র নিয়ে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের কথা বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল জেলার সহকারী পরিচালক মো. মালেক মিয়া বলেন, ‘শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমাদের সঙ্গে গত মাসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। ওনারা বলছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য মন্ত্রণালয়ে বাজেট চেয়ে পাঠাবেন। বাজেট এলে পরিবেশসম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবেন। কিন্তু প্রকৃত অর্থে হাসপাতালের পরিবেশগত ছাড়পত্রও নাই। এটি রেড ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠান। বরিশাল বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে দূষণকারী প্রতিষ্ঠান শেবাচিম হাসপাতাল। এখানে পরিবেশ রক্ষায় কোনো উদ্যোগই নেই। যে কারণে দূষণ হচ্ছে ভয়াবহভাবে।’

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন বেলার বরিশালের সমন্বয়ক লিংকন বায়েন বলেন, ‘আমরা গত মাসে ওয়াস্ট ম্যানেজমেন্টবিষয়ক কর্মসূচি নিয়ে শেবাচিম হাসপাতাল ভিজিট করে দেখেছি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই বললেই চলে। হাসপাতালের মূল ভবনের পশ্চিম পাশে একটি জায়গায় ফেলে রাখা হচ্ছে চিকিৎসা বর্জ্য। এগুলো অপসারণে দক্ষ কর্মীও নেই।’ তিনি বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসা বর্জ্য যে প্রক্রিয়ায় অপসারণ করা দরকার তা হচ্ছে না। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে মারাত্মকভাবে রোগজীবাণু ছড়াতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াকরণ) বিধিমালা-২০০৮ অনুযায়ী এভাবে যেখানে সেখানে বর্জ্য ফেলে রাখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ ব্যাপারে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, শেবাচিম হাসপাতালের স্বাস্থ্যহানিকর এ বর্জ্য কোথায় যায় তার কোনো হদিস নেই। তাদের কোনো ব্যবস্থাপনাই নেই। হাসপাতালের কোনো দায়বদ্ধতাও নেই।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকলে বরিশালের মানুষকে এটি বেশ ভোগাবে। এ জন্য একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার। এ ক্ষেত্রে শেবাচিম, সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য বিভাগের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত