Ajker Patrika

নিষ্ক্রিয় ছাত্রলীগের নেতারা

শেখ আবু হাসান, খুলনা
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২২, ১২: ২৬
নিষ্ক্রিয় ছাত্রলীগের নেতারা

খুলনা মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগের দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন না হওয়ায় সংগঠন দুটির কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই বেশির ভাগ নেতা ব্যবসা ও বিভিন্ন পেশায় জড়িত হয়ে সংগঠনে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন।

মেয়াদোত্তীর্ণ নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের সহযোগী অন্য দুটি সংগঠনে স্থান করে নিয়েছেন। নগর ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন ছাত্রলীগের পাশাপাশি মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান রাসেলও ছাত্রলীগের পাশাপাশি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন।

এ ছাড়া ২১৫ সদস্যের নগর কমিটির অধিকাংশ নেতাই ছাত্রজীবন শেষ করেছেন। বাকিরা কেউ ব্যবসায়ী, কেউবা আবার চাকরিজীবী। মাদক কারবারসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের মতো অভিযোগে জড়িয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন অভিযোগে এ পর্যন্ত বহিষ্কার হয়েছেন ডজনখানেক নেতা।

প্রায় একই অবস্থা জেলা ছাত্রলীগের। মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটির শীর্ষনেতাদের অনেকেই শিক্ষাজীবন শেষ করে ব্যবসাসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। অনেকেই বিবাহিত। এ দুটি সংগঠনের সম্মেলন না হওয়ায় পদপ্রত্যাশী অনেক নেতা-কর্মী হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৮ জুন খুলনা মহানগর ও ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই জেলা ছাত্রলীগে সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রায় চার বছর পর ২০১৯ সালের ৩০ জুন ২১৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এক বছর পর পর সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে সম্মেলন করা যায়নি। বিশেষ করে করোনা মহামারির কারণে সম্মেলন আরও বেশি বিলম্বিত হয়েছে।

ইতিমধ্যে ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর গঠিত নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত হয়েছেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন। অপরদিকে ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান রাসেল। এরপর থেকে নতুন পদের রাজনীতিতেই সক্রিয় আছেন তাঁরা। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসভাপতি করা হয় ৫৭ জনকে। এর মধ্যে সিনিয়র সভাপতি সোহেল বিশ্বাস, দ্বিতীয় সহসভাপতি তাজমুল হক তাজু, তৃতীয় সহসভাপতি আসাদুজ্জামান বাবু তিনজনই বিবাহিত ও ব্যবসায়ী।

অন্য সহসভাপতির মধ্যে ১২ জন বিবাহিত ও ব্যবসায়ী, ৬ জন চাকরি করেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। বিভিন্ন অপরাধ-কাণ্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগে বেশ কয়েকজন সংগঠন থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। অন্যরা বেশির ভাগই রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ প্রথম যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান ইমরান ও দ্বিতীয় যুগ্ম সম্পাদক আলিমুল জিয়া দুজনই বিবাহিত ও ব্যবসায়ী। সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে দুজন বিবাহিত ও ব্যবসায়ী। ১৩ নেতা চাকরি করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

২০১৭ সালের ২৯ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে মো. পারভেজ হাওলাদার সভাপতি ও মো. ইমরান হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। খুলনা জেলা ছাত্রলীগের ৯টি উপজেলা, ২টি পৌরসভা, ৪টি সরকারি কলেজ, ৪৪টি বেসরকারি কলেজ, ৬৫টি ইউনিয়ন, ১টি সাংগঠনিক ইউনিয়ন ও ২টি আঞ্চলিক কমিটি রয়েছে। যার বেশির ভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ।

সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে জানতে চাইলে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুজ্জামান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে সম্মেলন করা যায়নি। তবে শিগগিরই সম্মেলন করা হবে। সম্মেলন করা অতি জরুরি হয়েছে পড়েছে। এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তাঁরা যেকোনো সময় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করবেন।

অপরদিকে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের বিষয়ে জেলা সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘সম্মেলন করার জন্য তাঁরা প্রস্তুত রয়েছেন। সম্মেলন করার ব্যাপারে তাঁরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছেন। তাঁরা যে সময় সম্মেলন করতে বলবেন, আমরা সেই সময়ই সম্মেলন করতে প্রস্তুত আছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত