হাসান মামুন

দেশে নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে ‘আয়োজন’ চলছে, এতে বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়বে তাঁদের, যাঁরা গত কয়েক বছরে আয় বাড়াতে পারেননি। আয় বাড়ালেই হবে না; চলমান মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে। এমন একটা জনগোষ্ঠী দেশে থাকলেও এর সদস্য তো কম। নিত্যপণ্যের সঙ্গে ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়লেও তাঁদের কিছু যায়-আসে না।
তাঁরা চাইলে খাদ্যাভ্যাস বদলাতে এবং জিমে অর্থ ব্যয়ও বাড়াতে পারেন। সন্দেহ নেই, এর কিছু সুফল রয়েছে। তাঁদের বাড়তি ব্যয়ে কিছু কর্মসংস্থান তো হয়ে থাকে। তবে দেশের নিম্ন আয়ের সিংহভাগ মানুষের জন্য এই দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিতে ওষুধের দাম বাড়ানোর প্রচেষ্টা গ্রহণের খবর উদ্বেগজনক।
অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও দীর্ঘ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। তখনো চিকিৎসায় অনেক জটিলতা মোকাবিলা করতে হয় মানুষকে। পরিস্থিতি অবশ্য আরও খারাপ হতে পারত। তেমনটা না হলেও যেসব পরিবারে করোনা হানা দেয়, তাদের চিকিৎসা ব্যয় হঠাৎ যায় বেড়ে। কাউকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর ব্যয় সংকুলান হয়ে ওঠে বিশেষভাবে কঠিন। ভালো যে, ওই সময়টায় সাধারণভাবে ওষুধের সংকট হয়নি; দামও বেড়ে যায়নি সেভাবে। যাঁরা করোনার চাপ থেকে মুক্ত ছিলেন, তাঁদেরও অবশ্য আয় কমে গিয়েছিল লকডাউনসহ অর্থনীতি গতি হারানোয়। সেটি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, এর চাপ গিয়ে পড়েছে দেশের ওষুধশিল্পেও। কিছুদিন পরপরই বলা হচ্ছে, উৎপাদন ও ব্যবসার ‘ক্রমবর্ধমান খরচ’ জুগিয়ে তাদের পোষাচ্ছে না। ওষুধের দাম তাই আরও বাড়াতে হবে।
‘আরও বাড়ানো’র কথাটা বলতে হলো এ জন্য যে করোনা-পরবর্তীকালে, বিশেষ করে গত দেড়-দুই বছরে বেশ কিছু ওষুধের দাম কিন্তু বাড়ানো হয়েছে। ওষুধ উৎপাদনে আমরা পর্যায়ক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। বেশ কিছু দেশে রপ্তানিও হচ্ছে এবং এ খাতে রয়েছে প্রবৃদ্ধি।
দেশের বাইরে বড় একাধিক কোম্পানি প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠা করছে বলে খবর আমাদের আনন্দিত করে। ওষুধ খাতে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য যাঁরা একদা লড়েছিলেন, তাঁদের প্রায় সবাই প্রয়াত। তবে তাঁদের কাজের সুফলটা রয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের লক্ষ্য তো কেবল স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ছিল না। তাঁরা জোর দিয়েছিলেন ওষুধের মান নিশ্চিতকরণ এবং দাম জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার ওপর। ওষুধকে তাঁরা এমনকি আর দশটি সাধারণ নিত্যপণ্যের সঙ্গে তুলনা করতেও নারাজ ছিলেন। বলা হতো, এটা একটা ‘নিয়ন্ত্রিত পণ্য’। সব ওষুধের দামই সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণের পক্ষে ছিলেন তাঁরা।
সেই অবস্থান থেকে অবশ্য ক্রমে সরে এসেছে সরকার এবং অল্প কিছু ‘অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ’ বাদে আর সব ওষুধের দামই এখন নির্ধারিত হচ্ছে কোম্পানির বক্তব্যের ভিত্তিতে। অত্যাবশ্যকীয় বেশ কিছু ওষুধের দামও কিন্তু মাঝে বাড়ানো হয় উল্লেখযোগ্যভাবে। এর মধ্যে মুড়ি-মুড়কির মতো ব্যবহৃত প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধও রয়েছে। কোম্পানিগুলো বলছিল, এসবের দাম দীর্ঘদিনেও বাড়ানো হয়নি–উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও। সরকারনির্ধারিত দামে এসব ওষুধ বানিয়ে সরবরাহ করতে গিয়ে তাদের নাকি লোকসান হচ্ছিল! ওই একই সময়ে তালিকার বাইরে থাকা বেশ কিছু ওষুধের দামও বাড়ানোর অনুমতি দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ইনসুলিন, স্যালাইন প্রভৃতি।
গেল কয়েক মাস ডেঙ্গু আমাদের ভুগিয়েছে অনেক এবং গ্রাম পর্যন্ত এটা ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে ঘটেছে রেকর্ড মৃত্যু আর ব্যয়ের চাপে কাহিল হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। করোনার সঙ্গে তুল্য না হলেও এটাও কম দুর্যোগময় পরিস্থিতি ছিল না। নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে আয়োজন দেখা যাচ্ছে, সেটি ঘটলে ওই সব পরিবারেও শুধু ওষুধ কিনতে বাড়তি ব্যয়ের চাপ সৃষ্টি হবে।
এটা সামাল দিতে গিয়ে অগত্যা অনেককে খাদ্যদ্রব্য পরিভোগেও বদল আনতে হয়। তাতে ঘটে পুষ্টি পরিস্থিতির অবনতি। নিত্যপণ্যের দাম যখন সাধারণভাবে বেড়ে চলেছে, এমনকি চালের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন, তখন আবার ওষুধের দাম বেড়ে গেলে সেটাকে ‘সামান্য’ বলা যাবে না। ওষুধশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তরা তাঁদের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলতে সম্প্রতি দেখা করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার সঙ্গে। তিনি নিজেও একটি বড় ওষুধ কোম্পানির মালিক। ওষুধশিল্পের সমস্যাগুলো তাঁরও ভালোই জানা থাকার কথা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ওষুধের দাম বাড়ানোর দাবির নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
ওষুধের দাম যেহেতু মাঝে বাড়ানো হয়েছে, সুতরাং এখন আর বাড়ানো যাবে না–এভাবে বলাটা নিশ্চয় সংগত নয়। মাঝে সব ওষুধের দাম বেড়েছে, সেটাও নয়। দাম বাড়ানোর সব প্রস্তাবে ঔষধ প্রশাসনও নিশ্চয় সাড়া দেয়নি বা মাঝামাঝি কিছু একটা হয়েছে। ওষুধের দাম বাড়তে না দেওয়ার একটা চেষ্টা তো সরকারের দিক থেকে থাকে এবং সেটাই স্বাভাবিক। সেই ধারাতেই বেশ কয়েক বছর সরকার তালিকাভুক্ত ওষুধের দাম একটুও বাড়তে দেয়নি।
নির্দিষ্ট দামে এসব ওষুধ উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে কোম্পানিগুলো যেন আবার সরবরাহ সংকট তৈরি না করে, সেদিকেও দৃষ্টি রাখা হয়েছিল। এখন তালিকার বাইরে যে বিপুলসংখ্যক ওষুধ বাজারে রয়েছে, সেগুলোর মূল্য বৃদ্ধির দাবির গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি করতে হবে। অন্যান্য শিল্পের মতো ওষুধশিল্পেও উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, এটা ধরেই নেওয়া যায়। ওষুধের কাঁচামালে যেহেতু ব্যাপক বিদেশনির্ভরতা রয়েছে, তাই শুধু চলমান ডলার-সংকটেই এ ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। আমদানির উৎসে ওষুধের কাঁচামালের দামও বাড়তে পারে।
এখন কোন কোম্পানি কোত্থেকে কত দামে আমদানি করে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো কারচুপি আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অব্যাহতভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, ডিজেলের দাম; ওষুধশিল্পে নিয়োজিতদের বেতন বৃদ্ধিও বাস্তবতা বৈকি। প্রতিবার ওষুধের দাম বাড়ানোর দাবি উত্থাপনের সময় এসব বক্তব্য খাতটি থেকে তুলে ধরা হয়। কথা হলো, তাদের বক্তব্যের সঠিকতার মাত্রা নির্ণয় করা প্রয়োজন।
সেই সাধ্য বা প্রয়াস কি ঔষধ প্রশাসনে রয়েছে? হাজার হাজার জেনেরিক ও ব্র্যান্ডের ওষুধ বাজারে আসতে থাকলেও সরকার কি পেরেছে সেগুলোর মান পরীক্ষার ব্যবস্থায় প্রসার ঘটাতে? ওষুধের দামের সঙ্গে মানের বিষয়টি কিন্তু রয়েছে। ওষুধ সেবনকারীদের সন্দেহ দূর করে তাঁদের আশ্বস্ত রাখাও তো প্রয়োজন। ১৯৮২ সাল থেকে গ্রহণ ও সংশোধন করা নীতির প্রভাবে দেশ থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিদায় নেওয়ার প্রেক্ষাপটেও কিন্তু ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেকের মনে। কোনো শিল্পের বিকাশের সঙ্গে এর নজরদারি বাড়াতে না পারলে এমন অবিশ্বাস থাকাটা বিচিত্রও নয়।
ওষুধের দাম বেশি থাকা কিংবা এর মূল্য বৃদ্ধির জন্য অনেকে চিকিৎসকদের পেছনে কোম্পানির ‘অনৈতিক ব্যয়ের’ প্রসঙ্গও তোলেন।ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোরও এ ধরনের ব্যয় রয়েছে এবং এর চাপ গিয়ে অবধারিতভাবে পড়ে রোগীর ওপর। ওষুধ ও রোগ পরীক্ষার পেছনেই বেশির ভাগ ব্যয় হয়ে থাকে এবং এর সিংহভাগই যায় ব্যক্তির পকেট থেকে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাষ্ট্রের বদলে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় এ দেশে অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে ওষুধশিল্প থেকে ওঠা এর মূল্য বৃদ্ধির দাবি মোকাবিলায়।
ওষুধ জরুরি পণ্য হলেও এর বেসরকারি উৎপাদকেরা তো লোকসান দিয়ে ব্যবসা করবেন না। এ অবস্থায় তাঁরা সত্যিই ব্যয় বৃদ্ধির চাপে থাকলে সরকারকে এ খাতে ভর্তুকি জুগিয়ে হলেও ওষুধের দাম আরও বাড়ানোর চাপ থেকে ক্রেতাদের রেহাই দিতে হবে। অনৈতিক ‘মার্কেটিং কস্ট’ নিয়ে অবশ্য কোম্পানিগুলোকে প্রশ্ন করা দরকার। এই চর্চা বন্ধে অনেকে অবশ্য জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লেখা বাধ্যতামূলক করার ওপর জোর দিয়ে আসছেন।
নতুন মেয়াদের সরকারে চিকিৎসক হিসেবে বড় সুনামের অধিকারী যিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি অনিষ্পন্ন এসব ইস্যুতে হাত দিলে মানুষ খুশি হবে। তবে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন হবে আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়। যেমন ওষুধের কাঁচামাল আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে শুল্কছাড় দিয়ে ভূমিকা রাখতে হবে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। রাজধানীর অদূরে গজারিয়ায় যে ‘এপিআই শিল্পপার্ক’ হয়েছে, সেটিতে বড় ওষুধ কোম্পানিগুলোকে নিয়ে গিয়ে তা কাজে লাগানোর ব্যাপারে অগ্রগতি কিন্তু কম।
এটা করা গেলে কাঁচামালে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে এনে ওষুধের দাম কমানোও নাকি সম্ভব। কিন্তু জানা যাচ্ছে, সেখানে গ্যাস সরবরাহে সংকট! কাজ শুরুর অনুমতি লাভে জটিলতাও রয়েছে। সেটা না হয় দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে দূর করা গেল; কিন্তু বিদ্যমান বাস্তবতায় ওখানে গ্যাস জোগানো তো সহজ নয়।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

দেশে নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে ‘আয়োজন’ চলছে, এতে বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়বে তাঁদের, যাঁরা গত কয়েক বছরে আয় বাড়াতে পারেননি। আয় বাড়ালেই হবে না; চলমান মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে। এমন একটা জনগোষ্ঠী দেশে থাকলেও এর সদস্য তো কম। নিত্যপণ্যের সঙ্গে ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়লেও তাঁদের কিছু যায়-আসে না।
তাঁরা চাইলে খাদ্যাভ্যাস বদলাতে এবং জিমে অর্থ ব্যয়ও বাড়াতে পারেন। সন্দেহ নেই, এর কিছু সুফল রয়েছে। তাঁদের বাড়তি ব্যয়ে কিছু কর্মসংস্থান তো হয়ে থাকে। তবে দেশের নিম্ন আয়ের সিংহভাগ মানুষের জন্য এই দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিতে ওষুধের দাম বাড়ানোর প্রচেষ্টা গ্রহণের খবর উদ্বেগজনক।
অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও দীর্ঘ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। তখনো চিকিৎসায় অনেক জটিলতা মোকাবিলা করতে হয় মানুষকে। পরিস্থিতি অবশ্য আরও খারাপ হতে পারত। তেমনটা না হলেও যেসব পরিবারে করোনা হানা দেয়, তাদের চিকিৎসা ব্যয় হঠাৎ যায় বেড়ে। কাউকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর ব্যয় সংকুলান হয়ে ওঠে বিশেষভাবে কঠিন। ভালো যে, ওই সময়টায় সাধারণভাবে ওষুধের সংকট হয়নি; দামও বেড়ে যায়নি সেভাবে। যাঁরা করোনার চাপ থেকে মুক্ত ছিলেন, তাঁদেরও অবশ্য আয় কমে গিয়েছিল লকডাউনসহ অর্থনীতি গতি হারানোয়। সেটি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, এর চাপ গিয়ে পড়েছে দেশের ওষুধশিল্পেও। কিছুদিন পরপরই বলা হচ্ছে, উৎপাদন ও ব্যবসার ‘ক্রমবর্ধমান খরচ’ জুগিয়ে তাদের পোষাচ্ছে না। ওষুধের দাম তাই আরও বাড়াতে হবে।
‘আরও বাড়ানো’র কথাটা বলতে হলো এ জন্য যে করোনা-পরবর্তীকালে, বিশেষ করে গত দেড়-দুই বছরে বেশ কিছু ওষুধের দাম কিন্তু বাড়ানো হয়েছে। ওষুধ উৎপাদনে আমরা পর্যায়ক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। বেশ কিছু দেশে রপ্তানিও হচ্ছে এবং এ খাতে রয়েছে প্রবৃদ্ধি।
দেশের বাইরে বড় একাধিক কোম্পানি প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠা করছে বলে খবর আমাদের আনন্দিত করে। ওষুধ খাতে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য যাঁরা একদা লড়েছিলেন, তাঁদের প্রায় সবাই প্রয়াত। তবে তাঁদের কাজের সুফলটা রয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের লক্ষ্য তো কেবল স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ছিল না। তাঁরা জোর দিয়েছিলেন ওষুধের মান নিশ্চিতকরণ এবং দাম জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার ওপর। ওষুধকে তাঁরা এমনকি আর দশটি সাধারণ নিত্যপণ্যের সঙ্গে তুলনা করতেও নারাজ ছিলেন। বলা হতো, এটা একটা ‘নিয়ন্ত্রিত পণ্য’। সব ওষুধের দামই সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণের পক্ষে ছিলেন তাঁরা।
সেই অবস্থান থেকে অবশ্য ক্রমে সরে এসেছে সরকার এবং অল্প কিছু ‘অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ’ বাদে আর সব ওষুধের দামই এখন নির্ধারিত হচ্ছে কোম্পানির বক্তব্যের ভিত্তিতে। অত্যাবশ্যকীয় বেশ কিছু ওষুধের দামও কিন্তু মাঝে বাড়ানো হয় উল্লেখযোগ্যভাবে। এর মধ্যে মুড়ি-মুড়কির মতো ব্যবহৃত প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধও রয়েছে। কোম্পানিগুলো বলছিল, এসবের দাম দীর্ঘদিনেও বাড়ানো হয়নি–উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও। সরকারনির্ধারিত দামে এসব ওষুধ বানিয়ে সরবরাহ করতে গিয়ে তাদের নাকি লোকসান হচ্ছিল! ওই একই সময়ে তালিকার বাইরে থাকা বেশ কিছু ওষুধের দামও বাড়ানোর অনুমতি দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ইনসুলিন, স্যালাইন প্রভৃতি।
গেল কয়েক মাস ডেঙ্গু আমাদের ভুগিয়েছে অনেক এবং গ্রাম পর্যন্ত এটা ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে ঘটেছে রেকর্ড মৃত্যু আর ব্যয়ের চাপে কাহিল হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। করোনার সঙ্গে তুল্য না হলেও এটাও কম দুর্যোগময় পরিস্থিতি ছিল না। নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে আয়োজন দেখা যাচ্ছে, সেটি ঘটলে ওই সব পরিবারেও শুধু ওষুধ কিনতে বাড়তি ব্যয়ের চাপ সৃষ্টি হবে।
এটা সামাল দিতে গিয়ে অগত্যা অনেককে খাদ্যদ্রব্য পরিভোগেও বদল আনতে হয়। তাতে ঘটে পুষ্টি পরিস্থিতির অবনতি। নিত্যপণ্যের দাম যখন সাধারণভাবে বেড়ে চলেছে, এমনকি চালের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন, তখন আবার ওষুধের দাম বেড়ে গেলে সেটাকে ‘সামান্য’ বলা যাবে না। ওষুধশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তরা তাঁদের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলতে সম্প্রতি দেখা করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার সঙ্গে। তিনি নিজেও একটি বড় ওষুধ কোম্পানির মালিক। ওষুধশিল্পের সমস্যাগুলো তাঁরও ভালোই জানা থাকার কথা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ওষুধের দাম বাড়ানোর দাবির নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
ওষুধের দাম যেহেতু মাঝে বাড়ানো হয়েছে, সুতরাং এখন আর বাড়ানো যাবে না–এভাবে বলাটা নিশ্চয় সংগত নয়। মাঝে সব ওষুধের দাম বেড়েছে, সেটাও নয়। দাম বাড়ানোর সব প্রস্তাবে ঔষধ প্রশাসনও নিশ্চয় সাড়া দেয়নি বা মাঝামাঝি কিছু একটা হয়েছে। ওষুধের দাম বাড়তে না দেওয়ার একটা চেষ্টা তো সরকারের দিক থেকে থাকে এবং সেটাই স্বাভাবিক। সেই ধারাতেই বেশ কয়েক বছর সরকার তালিকাভুক্ত ওষুধের দাম একটুও বাড়তে দেয়নি।
নির্দিষ্ট দামে এসব ওষুধ উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে কোম্পানিগুলো যেন আবার সরবরাহ সংকট তৈরি না করে, সেদিকেও দৃষ্টি রাখা হয়েছিল। এখন তালিকার বাইরে যে বিপুলসংখ্যক ওষুধ বাজারে রয়েছে, সেগুলোর মূল্য বৃদ্ধির দাবির গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি করতে হবে। অন্যান্য শিল্পের মতো ওষুধশিল্পেও উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, এটা ধরেই নেওয়া যায়। ওষুধের কাঁচামালে যেহেতু ব্যাপক বিদেশনির্ভরতা রয়েছে, তাই শুধু চলমান ডলার-সংকটেই এ ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। আমদানির উৎসে ওষুধের কাঁচামালের দামও বাড়তে পারে।
এখন কোন কোম্পানি কোত্থেকে কত দামে আমদানি করে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো কারচুপি আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অব্যাহতভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, ডিজেলের দাম; ওষুধশিল্পে নিয়োজিতদের বেতন বৃদ্ধিও বাস্তবতা বৈকি। প্রতিবার ওষুধের দাম বাড়ানোর দাবি উত্থাপনের সময় এসব বক্তব্য খাতটি থেকে তুলে ধরা হয়। কথা হলো, তাদের বক্তব্যের সঠিকতার মাত্রা নির্ণয় করা প্রয়োজন।
সেই সাধ্য বা প্রয়াস কি ঔষধ প্রশাসনে রয়েছে? হাজার হাজার জেনেরিক ও ব্র্যান্ডের ওষুধ বাজারে আসতে থাকলেও সরকার কি পেরেছে সেগুলোর মান পরীক্ষার ব্যবস্থায় প্রসার ঘটাতে? ওষুধের দামের সঙ্গে মানের বিষয়টি কিন্তু রয়েছে। ওষুধ সেবনকারীদের সন্দেহ দূর করে তাঁদের আশ্বস্ত রাখাও তো প্রয়োজন। ১৯৮২ সাল থেকে গ্রহণ ও সংশোধন করা নীতির প্রভাবে দেশ থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিদায় নেওয়ার প্রেক্ষাপটেও কিন্তু ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেকের মনে। কোনো শিল্পের বিকাশের সঙ্গে এর নজরদারি বাড়াতে না পারলে এমন অবিশ্বাস থাকাটা বিচিত্রও নয়।
ওষুধের দাম বেশি থাকা কিংবা এর মূল্য বৃদ্ধির জন্য অনেকে চিকিৎসকদের পেছনে কোম্পানির ‘অনৈতিক ব্যয়ের’ প্রসঙ্গও তোলেন।ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোরও এ ধরনের ব্যয় রয়েছে এবং এর চাপ গিয়ে অবধারিতভাবে পড়ে রোগীর ওপর। ওষুধ ও রোগ পরীক্ষার পেছনেই বেশির ভাগ ব্যয় হয়ে থাকে এবং এর সিংহভাগই যায় ব্যক্তির পকেট থেকে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাষ্ট্রের বদলে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় এ দেশে অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে ওষুধশিল্প থেকে ওঠা এর মূল্য বৃদ্ধির দাবি মোকাবিলায়।
ওষুধ জরুরি পণ্য হলেও এর বেসরকারি উৎপাদকেরা তো লোকসান দিয়ে ব্যবসা করবেন না। এ অবস্থায় তাঁরা সত্যিই ব্যয় বৃদ্ধির চাপে থাকলে সরকারকে এ খাতে ভর্তুকি জুগিয়ে হলেও ওষুধের দাম আরও বাড়ানোর চাপ থেকে ক্রেতাদের রেহাই দিতে হবে। অনৈতিক ‘মার্কেটিং কস্ট’ নিয়ে অবশ্য কোম্পানিগুলোকে প্রশ্ন করা দরকার। এই চর্চা বন্ধে অনেকে অবশ্য জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লেখা বাধ্যতামূলক করার ওপর জোর দিয়ে আসছেন।
নতুন মেয়াদের সরকারে চিকিৎসক হিসেবে বড় সুনামের অধিকারী যিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি অনিষ্পন্ন এসব ইস্যুতে হাত দিলে মানুষ খুশি হবে। তবে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন হবে আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়। যেমন ওষুধের কাঁচামাল আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে শুল্কছাড় দিয়ে ভূমিকা রাখতে হবে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। রাজধানীর অদূরে গজারিয়ায় যে ‘এপিআই শিল্পপার্ক’ হয়েছে, সেটিতে বড় ওষুধ কোম্পানিগুলোকে নিয়ে গিয়ে তা কাজে লাগানোর ব্যাপারে অগ্রগতি কিন্তু কম।
এটা করা গেলে কাঁচামালে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে এনে ওষুধের দাম কমানোও নাকি সম্ভব। কিন্তু জানা যাচ্ছে, সেখানে গ্যাস সরবরাহে সংকট! কাজ শুরুর অনুমতি লাভে জটিলতাও রয়েছে। সেটা না হয় দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে দূর করা গেল; কিন্তু বিদ্যমান বাস্তবতায় ওখানে গ্যাস জোগানো তো সহজ নয়।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক
হাসান মামুন

দেশে নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে ‘আয়োজন’ চলছে, এতে বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়বে তাঁদের, যাঁরা গত কয়েক বছরে আয় বাড়াতে পারেননি। আয় বাড়ালেই হবে না; চলমান মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে। এমন একটা জনগোষ্ঠী দেশে থাকলেও এর সদস্য তো কম। নিত্যপণ্যের সঙ্গে ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়লেও তাঁদের কিছু যায়-আসে না।
তাঁরা চাইলে খাদ্যাভ্যাস বদলাতে এবং জিমে অর্থ ব্যয়ও বাড়াতে পারেন। সন্দেহ নেই, এর কিছু সুফল রয়েছে। তাঁদের বাড়তি ব্যয়ে কিছু কর্মসংস্থান তো হয়ে থাকে। তবে দেশের নিম্ন আয়ের সিংহভাগ মানুষের জন্য এই দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিতে ওষুধের দাম বাড়ানোর প্রচেষ্টা গ্রহণের খবর উদ্বেগজনক।
অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও দীর্ঘ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। তখনো চিকিৎসায় অনেক জটিলতা মোকাবিলা করতে হয় মানুষকে। পরিস্থিতি অবশ্য আরও খারাপ হতে পারত। তেমনটা না হলেও যেসব পরিবারে করোনা হানা দেয়, তাদের চিকিৎসা ব্যয় হঠাৎ যায় বেড়ে। কাউকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর ব্যয় সংকুলান হয়ে ওঠে বিশেষভাবে কঠিন। ভালো যে, ওই সময়টায় সাধারণভাবে ওষুধের সংকট হয়নি; দামও বেড়ে যায়নি সেভাবে। যাঁরা করোনার চাপ থেকে মুক্ত ছিলেন, তাঁদেরও অবশ্য আয় কমে গিয়েছিল লকডাউনসহ অর্থনীতি গতি হারানোয়। সেটি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, এর চাপ গিয়ে পড়েছে দেশের ওষুধশিল্পেও। কিছুদিন পরপরই বলা হচ্ছে, উৎপাদন ও ব্যবসার ‘ক্রমবর্ধমান খরচ’ জুগিয়ে তাদের পোষাচ্ছে না। ওষুধের দাম তাই আরও বাড়াতে হবে।
‘আরও বাড়ানো’র কথাটা বলতে হলো এ জন্য যে করোনা-পরবর্তীকালে, বিশেষ করে গত দেড়-দুই বছরে বেশ কিছু ওষুধের দাম কিন্তু বাড়ানো হয়েছে। ওষুধ উৎপাদনে আমরা পর্যায়ক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। বেশ কিছু দেশে রপ্তানিও হচ্ছে এবং এ খাতে রয়েছে প্রবৃদ্ধি।
দেশের বাইরে বড় একাধিক কোম্পানি প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠা করছে বলে খবর আমাদের আনন্দিত করে। ওষুধ খাতে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য যাঁরা একদা লড়েছিলেন, তাঁদের প্রায় সবাই প্রয়াত। তবে তাঁদের কাজের সুফলটা রয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের লক্ষ্য তো কেবল স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ছিল না। তাঁরা জোর দিয়েছিলেন ওষুধের মান নিশ্চিতকরণ এবং দাম জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার ওপর। ওষুধকে তাঁরা এমনকি আর দশটি সাধারণ নিত্যপণ্যের সঙ্গে তুলনা করতেও নারাজ ছিলেন। বলা হতো, এটা একটা ‘নিয়ন্ত্রিত পণ্য’। সব ওষুধের দামই সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণের পক্ষে ছিলেন তাঁরা।
সেই অবস্থান থেকে অবশ্য ক্রমে সরে এসেছে সরকার এবং অল্প কিছু ‘অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ’ বাদে আর সব ওষুধের দামই এখন নির্ধারিত হচ্ছে কোম্পানির বক্তব্যের ভিত্তিতে। অত্যাবশ্যকীয় বেশ কিছু ওষুধের দামও কিন্তু মাঝে বাড়ানো হয় উল্লেখযোগ্যভাবে। এর মধ্যে মুড়ি-মুড়কির মতো ব্যবহৃত প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধও রয়েছে। কোম্পানিগুলো বলছিল, এসবের দাম দীর্ঘদিনেও বাড়ানো হয়নি–উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও। সরকারনির্ধারিত দামে এসব ওষুধ বানিয়ে সরবরাহ করতে গিয়ে তাদের নাকি লোকসান হচ্ছিল! ওই একই সময়ে তালিকার বাইরে থাকা বেশ কিছু ওষুধের দামও বাড়ানোর অনুমতি দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ইনসুলিন, স্যালাইন প্রভৃতি।
গেল কয়েক মাস ডেঙ্গু আমাদের ভুগিয়েছে অনেক এবং গ্রাম পর্যন্ত এটা ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে ঘটেছে রেকর্ড মৃত্যু আর ব্যয়ের চাপে কাহিল হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। করোনার সঙ্গে তুল্য না হলেও এটাও কম দুর্যোগময় পরিস্থিতি ছিল না। নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে আয়োজন দেখা যাচ্ছে, সেটি ঘটলে ওই সব পরিবারেও শুধু ওষুধ কিনতে বাড়তি ব্যয়ের চাপ সৃষ্টি হবে।
এটা সামাল দিতে গিয়ে অগত্যা অনেককে খাদ্যদ্রব্য পরিভোগেও বদল আনতে হয়। তাতে ঘটে পুষ্টি পরিস্থিতির অবনতি। নিত্যপণ্যের দাম যখন সাধারণভাবে বেড়ে চলেছে, এমনকি চালের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন, তখন আবার ওষুধের দাম বেড়ে গেলে সেটাকে ‘সামান্য’ বলা যাবে না। ওষুধশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তরা তাঁদের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলতে সম্প্রতি দেখা করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার সঙ্গে। তিনি নিজেও একটি বড় ওষুধ কোম্পানির মালিক। ওষুধশিল্পের সমস্যাগুলো তাঁরও ভালোই জানা থাকার কথা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ওষুধের দাম বাড়ানোর দাবির নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
ওষুধের দাম যেহেতু মাঝে বাড়ানো হয়েছে, সুতরাং এখন আর বাড়ানো যাবে না–এভাবে বলাটা নিশ্চয় সংগত নয়। মাঝে সব ওষুধের দাম বেড়েছে, সেটাও নয়। দাম বাড়ানোর সব প্রস্তাবে ঔষধ প্রশাসনও নিশ্চয় সাড়া দেয়নি বা মাঝামাঝি কিছু একটা হয়েছে। ওষুধের দাম বাড়তে না দেওয়ার একটা চেষ্টা তো সরকারের দিক থেকে থাকে এবং সেটাই স্বাভাবিক। সেই ধারাতেই বেশ কয়েক বছর সরকার তালিকাভুক্ত ওষুধের দাম একটুও বাড়তে দেয়নি।
নির্দিষ্ট দামে এসব ওষুধ উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে কোম্পানিগুলো যেন আবার সরবরাহ সংকট তৈরি না করে, সেদিকেও দৃষ্টি রাখা হয়েছিল। এখন তালিকার বাইরে যে বিপুলসংখ্যক ওষুধ বাজারে রয়েছে, সেগুলোর মূল্য বৃদ্ধির দাবির গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি করতে হবে। অন্যান্য শিল্পের মতো ওষুধশিল্পেও উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, এটা ধরেই নেওয়া যায়। ওষুধের কাঁচামালে যেহেতু ব্যাপক বিদেশনির্ভরতা রয়েছে, তাই শুধু চলমান ডলার-সংকটেই এ ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। আমদানির উৎসে ওষুধের কাঁচামালের দামও বাড়তে পারে।
এখন কোন কোম্পানি কোত্থেকে কত দামে আমদানি করে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো কারচুপি আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অব্যাহতভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, ডিজেলের দাম; ওষুধশিল্পে নিয়োজিতদের বেতন বৃদ্ধিও বাস্তবতা বৈকি। প্রতিবার ওষুধের দাম বাড়ানোর দাবি উত্থাপনের সময় এসব বক্তব্য খাতটি থেকে তুলে ধরা হয়। কথা হলো, তাদের বক্তব্যের সঠিকতার মাত্রা নির্ণয় করা প্রয়োজন।
সেই সাধ্য বা প্রয়াস কি ঔষধ প্রশাসনে রয়েছে? হাজার হাজার জেনেরিক ও ব্র্যান্ডের ওষুধ বাজারে আসতে থাকলেও সরকার কি পেরেছে সেগুলোর মান পরীক্ষার ব্যবস্থায় প্রসার ঘটাতে? ওষুধের দামের সঙ্গে মানের বিষয়টি কিন্তু রয়েছে। ওষুধ সেবনকারীদের সন্দেহ দূর করে তাঁদের আশ্বস্ত রাখাও তো প্রয়োজন। ১৯৮২ সাল থেকে গ্রহণ ও সংশোধন করা নীতির প্রভাবে দেশ থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিদায় নেওয়ার প্রেক্ষাপটেও কিন্তু ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেকের মনে। কোনো শিল্পের বিকাশের সঙ্গে এর নজরদারি বাড়াতে না পারলে এমন অবিশ্বাস থাকাটা বিচিত্রও নয়।
ওষুধের দাম বেশি থাকা কিংবা এর মূল্য বৃদ্ধির জন্য অনেকে চিকিৎসকদের পেছনে কোম্পানির ‘অনৈতিক ব্যয়ের’ প্রসঙ্গও তোলেন।ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোরও এ ধরনের ব্যয় রয়েছে এবং এর চাপ গিয়ে অবধারিতভাবে পড়ে রোগীর ওপর। ওষুধ ও রোগ পরীক্ষার পেছনেই বেশির ভাগ ব্যয় হয়ে থাকে এবং এর সিংহভাগই যায় ব্যক্তির পকেট থেকে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাষ্ট্রের বদলে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় এ দেশে অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে ওষুধশিল্প থেকে ওঠা এর মূল্য বৃদ্ধির দাবি মোকাবিলায়।
ওষুধ জরুরি পণ্য হলেও এর বেসরকারি উৎপাদকেরা তো লোকসান দিয়ে ব্যবসা করবেন না। এ অবস্থায় তাঁরা সত্যিই ব্যয় বৃদ্ধির চাপে থাকলে সরকারকে এ খাতে ভর্তুকি জুগিয়ে হলেও ওষুধের দাম আরও বাড়ানোর চাপ থেকে ক্রেতাদের রেহাই দিতে হবে। অনৈতিক ‘মার্কেটিং কস্ট’ নিয়ে অবশ্য কোম্পানিগুলোকে প্রশ্ন করা দরকার। এই চর্চা বন্ধে অনেকে অবশ্য জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লেখা বাধ্যতামূলক করার ওপর জোর দিয়ে আসছেন।
নতুন মেয়াদের সরকারে চিকিৎসক হিসেবে বড় সুনামের অধিকারী যিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি অনিষ্পন্ন এসব ইস্যুতে হাত দিলে মানুষ খুশি হবে। তবে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন হবে আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়। যেমন ওষুধের কাঁচামাল আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে শুল্কছাড় দিয়ে ভূমিকা রাখতে হবে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। রাজধানীর অদূরে গজারিয়ায় যে ‘এপিআই শিল্পপার্ক’ হয়েছে, সেটিতে বড় ওষুধ কোম্পানিগুলোকে নিয়ে গিয়ে তা কাজে লাগানোর ব্যাপারে অগ্রগতি কিন্তু কম।
এটা করা গেলে কাঁচামালে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে এনে ওষুধের দাম কমানোও নাকি সম্ভব। কিন্তু জানা যাচ্ছে, সেখানে গ্যাস সরবরাহে সংকট! কাজ শুরুর অনুমতি লাভে জটিলতাও রয়েছে। সেটা না হয় দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে দূর করা গেল; কিন্তু বিদ্যমান বাস্তবতায় ওখানে গ্যাস জোগানো তো সহজ নয়।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

দেশে নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে ‘আয়োজন’ চলছে, এতে বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়বে তাঁদের, যাঁরা গত কয়েক বছরে আয় বাড়াতে পারেননি। আয় বাড়ালেই হবে না; চলমান মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে। এমন একটা জনগোষ্ঠী দেশে থাকলেও এর সদস্য তো কম। নিত্যপণ্যের সঙ্গে ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়লেও তাঁদের কিছু যায়-আসে না।
তাঁরা চাইলে খাদ্যাভ্যাস বদলাতে এবং জিমে অর্থ ব্যয়ও বাড়াতে পারেন। সন্দেহ নেই, এর কিছু সুফল রয়েছে। তাঁদের বাড়তি ব্যয়ে কিছু কর্মসংস্থান তো হয়ে থাকে। তবে দেশের নিম্ন আয়ের সিংহভাগ মানুষের জন্য এই দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিতে ওষুধের দাম বাড়ানোর প্রচেষ্টা গ্রহণের খবর উদ্বেগজনক।
অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও দীর্ঘ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। তখনো চিকিৎসায় অনেক জটিলতা মোকাবিলা করতে হয় মানুষকে। পরিস্থিতি অবশ্য আরও খারাপ হতে পারত। তেমনটা না হলেও যেসব পরিবারে করোনা হানা দেয়, তাদের চিকিৎসা ব্যয় হঠাৎ যায় বেড়ে। কাউকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর ব্যয় সংকুলান হয়ে ওঠে বিশেষভাবে কঠিন। ভালো যে, ওই সময়টায় সাধারণভাবে ওষুধের সংকট হয়নি; দামও বেড়ে যায়নি সেভাবে। যাঁরা করোনার চাপ থেকে মুক্ত ছিলেন, তাঁদেরও অবশ্য আয় কমে গিয়েছিল লকডাউনসহ অর্থনীতি গতি হারানোয়। সেটি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, এর চাপ গিয়ে পড়েছে দেশের ওষুধশিল্পেও। কিছুদিন পরপরই বলা হচ্ছে, উৎপাদন ও ব্যবসার ‘ক্রমবর্ধমান খরচ’ জুগিয়ে তাদের পোষাচ্ছে না। ওষুধের দাম তাই আরও বাড়াতে হবে।
‘আরও বাড়ানো’র কথাটা বলতে হলো এ জন্য যে করোনা-পরবর্তীকালে, বিশেষ করে গত দেড়-দুই বছরে বেশ কিছু ওষুধের দাম কিন্তু বাড়ানো হয়েছে। ওষুধ উৎপাদনে আমরা পর্যায়ক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। বেশ কিছু দেশে রপ্তানিও হচ্ছে এবং এ খাতে রয়েছে প্রবৃদ্ধি।
দেশের বাইরে বড় একাধিক কোম্পানি প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠা করছে বলে খবর আমাদের আনন্দিত করে। ওষুধ খাতে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য যাঁরা একদা লড়েছিলেন, তাঁদের প্রায় সবাই প্রয়াত। তবে তাঁদের কাজের সুফলটা রয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের লক্ষ্য তো কেবল স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ছিল না। তাঁরা জোর দিয়েছিলেন ওষুধের মান নিশ্চিতকরণ এবং দাম জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার ওপর। ওষুধকে তাঁরা এমনকি আর দশটি সাধারণ নিত্যপণ্যের সঙ্গে তুলনা করতেও নারাজ ছিলেন। বলা হতো, এটা একটা ‘নিয়ন্ত্রিত পণ্য’। সব ওষুধের দামই সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণের পক্ষে ছিলেন তাঁরা।
সেই অবস্থান থেকে অবশ্য ক্রমে সরে এসেছে সরকার এবং অল্প কিছু ‘অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ’ বাদে আর সব ওষুধের দামই এখন নির্ধারিত হচ্ছে কোম্পানির বক্তব্যের ভিত্তিতে। অত্যাবশ্যকীয় বেশ কিছু ওষুধের দামও কিন্তু মাঝে বাড়ানো হয় উল্লেখযোগ্যভাবে। এর মধ্যে মুড়ি-মুড়কির মতো ব্যবহৃত প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধও রয়েছে। কোম্পানিগুলো বলছিল, এসবের দাম দীর্ঘদিনেও বাড়ানো হয়নি–উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও। সরকারনির্ধারিত দামে এসব ওষুধ বানিয়ে সরবরাহ করতে গিয়ে তাদের নাকি লোকসান হচ্ছিল! ওই একই সময়ে তালিকার বাইরে থাকা বেশ কিছু ওষুধের দামও বাড়ানোর অনুমতি দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ইনসুলিন, স্যালাইন প্রভৃতি।
গেল কয়েক মাস ডেঙ্গু আমাদের ভুগিয়েছে অনেক এবং গ্রাম পর্যন্ত এটা ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে ঘটেছে রেকর্ড মৃত্যু আর ব্যয়ের চাপে কাহিল হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। করোনার সঙ্গে তুল্য না হলেও এটাও কম দুর্যোগময় পরিস্থিতি ছিল না। নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে আয়োজন দেখা যাচ্ছে, সেটি ঘটলে ওই সব পরিবারেও শুধু ওষুধ কিনতে বাড়তি ব্যয়ের চাপ সৃষ্টি হবে।
এটা সামাল দিতে গিয়ে অগত্যা অনেককে খাদ্যদ্রব্য পরিভোগেও বদল আনতে হয়। তাতে ঘটে পুষ্টি পরিস্থিতির অবনতি। নিত্যপণ্যের দাম যখন সাধারণভাবে বেড়ে চলেছে, এমনকি চালের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন, তখন আবার ওষুধের দাম বেড়ে গেলে সেটাকে ‘সামান্য’ বলা যাবে না। ওষুধশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তরা তাঁদের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলতে সম্প্রতি দেখা করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার সঙ্গে। তিনি নিজেও একটি বড় ওষুধ কোম্পানির মালিক। ওষুধশিল্পের সমস্যাগুলো তাঁরও ভালোই জানা থাকার কথা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ওষুধের দাম বাড়ানোর দাবির নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
ওষুধের দাম যেহেতু মাঝে বাড়ানো হয়েছে, সুতরাং এখন আর বাড়ানো যাবে না–এভাবে বলাটা নিশ্চয় সংগত নয়। মাঝে সব ওষুধের দাম বেড়েছে, সেটাও নয়। দাম বাড়ানোর সব প্রস্তাবে ঔষধ প্রশাসনও নিশ্চয় সাড়া দেয়নি বা মাঝামাঝি কিছু একটা হয়েছে। ওষুধের দাম বাড়তে না দেওয়ার একটা চেষ্টা তো সরকারের দিক থেকে থাকে এবং সেটাই স্বাভাবিক। সেই ধারাতেই বেশ কয়েক বছর সরকার তালিকাভুক্ত ওষুধের দাম একটুও বাড়তে দেয়নি।
নির্দিষ্ট দামে এসব ওষুধ উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে কোম্পানিগুলো যেন আবার সরবরাহ সংকট তৈরি না করে, সেদিকেও দৃষ্টি রাখা হয়েছিল। এখন তালিকার বাইরে যে বিপুলসংখ্যক ওষুধ বাজারে রয়েছে, সেগুলোর মূল্য বৃদ্ধির দাবির গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি করতে হবে। অন্যান্য শিল্পের মতো ওষুধশিল্পেও উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, এটা ধরেই নেওয়া যায়। ওষুধের কাঁচামালে যেহেতু ব্যাপক বিদেশনির্ভরতা রয়েছে, তাই শুধু চলমান ডলার-সংকটেই এ ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। আমদানির উৎসে ওষুধের কাঁচামালের দামও বাড়তে পারে।
এখন কোন কোম্পানি কোত্থেকে কত দামে আমদানি করে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো কারচুপি আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অব্যাহতভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, ডিজেলের দাম; ওষুধশিল্পে নিয়োজিতদের বেতন বৃদ্ধিও বাস্তবতা বৈকি। প্রতিবার ওষুধের দাম বাড়ানোর দাবি উত্থাপনের সময় এসব বক্তব্য খাতটি থেকে তুলে ধরা হয়। কথা হলো, তাদের বক্তব্যের সঠিকতার মাত্রা নির্ণয় করা প্রয়োজন।
সেই সাধ্য বা প্রয়াস কি ঔষধ প্রশাসনে রয়েছে? হাজার হাজার জেনেরিক ও ব্র্যান্ডের ওষুধ বাজারে আসতে থাকলেও সরকার কি পেরেছে সেগুলোর মান পরীক্ষার ব্যবস্থায় প্রসার ঘটাতে? ওষুধের দামের সঙ্গে মানের বিষয়টি কিন্তু রয়েছে। ওষুধ সেবনকারীদের সন্দেহ দূর করে তাঁদের আশ্বস্ত রাখাও তো প্রয়োজন। ১৯৮২ সাল থেকে গ্রহণ ও সংশোধন করা নীতির প্রভাবে দেশ থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিদায় নেওয়ার প্রেক্ষাপটেও কিন্তু ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেকের মনে। কোনো শিল্পের বিকাশের সঙ্গে এর নজরদারি বাড়াতে না পারলে এমন অবিশ্বাস থাকাটা বিচিত্রও নয়।
ওষুধের দাম বেশি থাকা কিংবা এর মূল্য বৃদ্ধির জন্য অনেকে চিকিৎসকদের পেছনে কোম্পানির ‘অনৈতিক ব্যয়ের’ প্রসঙ্গও তোলেন।ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোরও এ ধরনের ব্যয় রয়েছে এবং এর চাপ গিয়ে অবধারিতভাবে পড়ে রোগীর ওপর। ওষুধ ও রোগ পরীক্ষার পেছনেই বেশির ভাগ ব্যয় হয়ে থাকে এবং এর সিংহভাগই যায় ব্যক্তির পকেট থেকে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাষ্ট্রের বদলে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় এ দেশে অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে ওষুধশিল্প থেকে ওঠা এর মূল্য বৃদ্ধির দাবি মোকাবিলায়।
ওষুধ জরুরি পণ্য হলেও এর বেসরকারি উৎপাদকেরা তো লোকসান দিয়ে ব্যবসা করবেন না। এ অবস্থায় তাঁরা সত্যিই ব্যয় বৃদ্ধির চাপে থাকলে সরকারকে এ খাতে ভর্তুকি জুগিয়ে হলেও ওষুধের দাম আরও বাড়ানোর চাপ থেকে ক্রেতাদের রেহাই দিতে হবে। অনৈতিক ‘মার্কেটিং কস্ট’ নিয়ে অবশ্য কোম্পানিগুলোকে প্রশ্ন করা দরকার। এই চর্চা বন্ধে অনেকে অবশ্য জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লেখা বাধ্যতামূলক করার ওপর জোর দিয়ে আসছেন।
নতুন মেয়াদের সরকারে চিকিৎসক হিসেবে বড় সুনামের অধিকারী যিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি অনিষ্পন্ন এসব ইস্যুতে হাত দিলে মানুষ খুশি হবে। তবে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন হবে আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়। যেমন ওষুধের কাঁচামাল আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে শুল্কছাড় দিয়ে ভূমিকা রাখতে হবে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। রাজধানীর অদূরে গজারিয়ায় যে ‘এপিআই শিল্পপার্ক’ হয়েছে, সেটিতে বড় ওষুধ কোম্পানিগুলোকে নিয়ে গিয়ে তা কাজে লাগানোর ব্যাপারে অগ্রগতি কিন্তু কম।
এটা করা গেলে কাঁচামালে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে এনে ওষুধের দাম কমানোও নাকি সম্ভব। কিন্তু জানা যাচ্ছে, সেখানে গ্যাস সরবরাহে সংকট! কাজ শুরুর অনুমতি লাভে জটিলতাও রয়েছে। সেটা না হয় দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে দূর করা গেল; কিন্তু বিদ্যমান বাস্তবতায় ওখানে গ্যাস জোগানো তো সহজ নয়।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

দেশে নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে ‘আয়োজন’ চলছে, এতে বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়বে তাঁদের, যাঁরা গত কয়েক বছরে আয় বাড়াতে পারেননি। আয় বাড়ালেই হবে না; চলমান মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে।
২৯ জানুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

দেশে নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে ‘আয়োজন’ চলছে, এতে বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়বে তাঁদের, যাঁরা গত কয়েক বছরে আয় বাড়াতে পারেননি। আয় বাড়ালেই হবে না; চলমান মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে।
২৯ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

দেশে নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে ‘আয়োজন’ চলছে, এতে বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়বে তাঁদের, যাঁরা গত কয়েক বছরে আয় বাড়াতে পারেননি। আয় বাড়ালেই হবে না; চলমান মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে।
২৯ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

দেশে নতুন করে ওষুধের দাম বাড়ানোর যে ‘আয়োজন’ চলছে, এতে বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়বে তাঁদের, যাঁরা গত কয়েক বছরে আয় বাড়াতে পারেননি। আয় বাড়ালেই হবে না; চলমান মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে।
২৯ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫