Ajker Patrika

পাকা ধান নিয়ে বিপাকে চাষি

মনিরামপুর ও ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ মে ২০২২, ১১: ২৭
পাকা ধান নিয়ে বিপাকে চাষি

যশোরের মনিরামপুর ও ঝিকরগাছা উপজেলায় পাকা বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। ধানের ফলন ও দাম ভালো হলেও তাঁদের মুখে হাসি নেই। ধান কাটার আগ মুহূর্তে বারবার বৃষ্টির কারণে চাষিদের কপালে দেখা দিয়েছে চিন্তার ভাঁজ। এ ছাড়া শ্রমিকসংকটে ধান ঘরে তোলা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তাও তাঁদের মনে।

মনিরামপুর: প্রায় ১৫-২০ দিন আগ থেকে উপজেলায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। আকাশে কালো মেঘ দেখে আধা পাকা ধান কাটা শুরু হলেও ঈদের ৪-৫ দিন আগে থেকে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়। অনেক কৃষক এ সময় ধান কেটে শুকানোর জন্য খেতে রেখে দেন। ঈদের দিনের ভারী বৃষ্টিতে কেটে রাখা সব ধান ভিজে গেছে। অনেক খেতে জমেছে বৃষ্টির পানি।

এদিকে ঈদের দিন থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা অধিকাংশ ধান মাটিতে লুটে পড়ে। খেতে জমে থাকা পানি ধানের ওপরে উঠে গেছে।

কৃষকেরা বলছেন, আবহাওয়া একেক সময় একেক রকম হওয়ায় ধান কাটতে পারছেন না তাঁরা। যে ধান কাটা হয়েছে, বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় ধানে চারা এসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলার মামুদকাটি গ্রামের নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘সাড়ে তিন বিঘা বোরো চাষ করেছি। কিছু কেটে রেখেছি। তা সব ভিজে গেছে। আকাশ ভালো না হলে বাকি অংশ কাটতে পারছি না।’

এদিকে শ্রমিকসংকটের কারণেই অনেকেই ধান কাটতে পারছেন না। উপজেলার তাজপুর গ্রামের শাজাহান বলেন, ‘ঘেরের মধ্যে সাড়ে চার বিঘা ধান পেকে পড়ে আছে। শ্রমিক না থাকায় কাটাতে পারছি না। ধান নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।’

অন্যদিকে আগে যাঁরা বাড়িতে ধান তুলেছেন, সেসব চাষি ফলন ও দাম নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে এ অঞ্চলে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে মনিরামপুরে ২৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে জলাবদ্ধতার কারণে অন্তত ৫০০ হেক্টর জমিতে কৃষক ধান চাষ করতে পারেননি। ফলে ২৬ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, বৃষ্টিতে ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ইতিমধ্যে ৫০ শতাংশ ধান কাটা পড়েছে। যেসব খেতে ধান নুয়ে পড়েছে, দ্রুত তা কেটে ফেলতে হবে।

ঝিকরগাছা: উপজেলার অধিকাংশ মাঠে কেটে রাখা ধান পানিতে ভাসছে। আবার যেসব ধান এখনো কাটা হয়নি, তা বৈশাখী ঝোড়ো হাওয়ায় পড়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন চাষিরা।

উপজেলার বল্লা এলাকার জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আড়াই বিঘা জমির ধান বৈশাখী ঝড়ে পড়ে গিয়ে পানিতে ভাসছে। খেতে পানি থাকায় ধান না কাটলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে, তাই ধানের আগা থেকে কাটছি। ধানগাছের আগা কাটায় তিন বিঘা জমির খড় হলো না। যার দাম অন্তত ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।’

উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের আজিজুর রহমান বলেন, ‘এক বিঘা জমির ধান বৈশাখী ঝড়ে পড়ে গেছে। জমিটা নিচু, তাই খেতে পানিও জমে রয়েছে। ধান পেকে গেছে, কিন্তু খেতে পানির জন্য কাটতে পারছি না। আবার বেশি দিন পানিতে থাকলে ধানের ক্ষতি হবে। ফলে বেশ চিন্তায় আছি।’

ঝিকরগাছার কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘চলতি বছর আবহাওয়া বোরো ধান চাষের উপযোগী ছিল। শেষ সময়ের ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে কাটা ধান ভিজে গেছে। তবে দুই দিন রোদ হলে অনেক জমির পানি শুকিয়ে যাবে, তাতে খুব বেশি ক্ষতি হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

১৯৪৭ থেকে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ফলাফল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত