Ajker Patrika

নির্মাতা সৌদের প্রতিবাদ: সিনেপ্লেক্স থেকে সরিয়ে নিলেন ‘শ্যামা কাব্য’

আপডেট : ০৬ মে ২০২৪, ১৭: ৩৯
নির্মাতা সৌদের প্রতিবাদ: সিনেপ্লেক্স থেকে সরিয়ে নিলেন ‘শ্যামা কাব্য’

তিনটি সিনেপ্লেক্সে গত শুক্রবার মুক্তি পায় সরকারি অনুদানে নির্মিত ‘শ্যামা কাব্য’। এর মধ্যে স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা সিটি ও সনি স্কয়ার শাখায় দেখা যাচ্ছিল সিনেমাটি। মুক্তির তৃতীয় দিন গতকাল তিনটি অভিযোগ তুলে স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে শ্যামা কাব্যর প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ।

গতকাল রোববার ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধের বিষয়টি জানান নির্মাতা। পরে সিনেপ্লেক্সের ওয়েবসাইটেও শ্যামা কাব্য সিনেমার প্রদর্শনীর তথ্য মুছে ফেলা হয়।

বদরুল আনাম সৌদ ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, প্রথম দিন পর্দার সমস্যার কারণে দর্শক সিনেমাটি ভালো করে দেখতে পারছিলেন না। এ কারণে প্রথম দিনের একটি হাউসফুল শো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও পরদিন হল পরিবর্তন করে সমস্যার সমাধান করা হয়। দ্বিতীয় কারণ হলো, পরের দিন দেখা গেল, একটি দৃশ্য শেষ না করে ওই দৃশ্যের মাঝামাঝি সময়ে মধ্যবিরতি দেওয়া হচ্ছে। বিরতির পর শুরু হচ্ছে সেই দৃশ্যের পর থেকে।

সর্বশেষ টিকিট বিক্রির হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্মাতা। তবে এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি। কিন্তু প্রদর্শনী টাইম নিয়ে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, অনুরোধ করার পরেও যে সময়টায় হলে দর্শক কম থাকে, সেই মর্নিং শোতে রাখা হয় শ্যামা কাব্যর প্রদর্শনী। তাই স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে শ্যামা কাব্য সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নিজের এই স্ট্যাটাসের মন্তব্যের ঘরে সৌদ লেখেন, ‘হিসাবের গরমিলটা আমি আপলোড করিনি এবং চাইও না।’ আরেকটি মন্তব্যে তিনি লেখেন, ‘কেউ সম্ভবত এর আগে সিনেপ্লেক্স থেকে সিনেমা তুলে নেয়নি। আমি নিলাম।’

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি: নূর-এ-আলমএ বিষয়ে নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ বলেন, ‘কিছু সিনেমা তো থাকে যেগুলো মুক্তির পর পরই ব্যাপক হিট হয়ে যাবে না, কিন্তু সিনেমাটি দর্শককে দেখার সুযোগ করে দিতে হবে। অথচ, সিনেমা মুক্তির পর থেকেই ম্যানেজমেন্টের লোকজন “সিনেমা তো চলছে না” বলে বলে মানসিক যন্ত্রণা দিতে শুরু করেন। বিদেশি সিনেমাগুলোকে তারা ‘আমাদের সিনেমা’ বলেন, অথচ যে এলাকায় ‘শ্যামা কাব্য’র মতো সিনেমার দর্শক আছে বলে মনে করি, সেখানকার হলে তারা একটি প্রদর্শনীও রাখেন না। এটা কেবল শ্যামা কাব্যর বেলাতেই ঘটেনি, আগের অনেক সিনেমার বেলাতেও এমনটা হয়েছে। আমি হলের ম্যানেজমেন্টের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে আমার সিনেমাটি উঠিয়ে নিয়েছি।’

স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথম দিন তারা হলের প্রজেকশন নিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছিল। পরদিন হল পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া অফিশিয়ালি আর কোনো অভিযোগ তারা আমাদের জানায়নি, বরং আজ (গতকাল) ডিস্ট্রিবিউটর প্রতিষ্ঠান অফিশিয়ালি মেইল করে সিনেমাটির প্রদর্শনী বন্ধের জন্য বলেছে, তাই আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। ওই স্লটে “কাজলরেখা” চালাচ্ছি।’

শ্যামা কাব্যর ডিস্ট্রিবিউটর প্রতিষ্ঠান বঙ্গ-এর চিফ কনটেন্ট অফিসার মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘নির্মাতা হিসেবে কিছু বিষয় নিয়ে বদরুল আনাম সৌদের আপত্তি ছিল। প্রথম দিনের হলটি প্রদর্শনীর জন্য উপযুক্ত ছিল না। প্রদর্শনীর সময়টাও উপযুক্ত মনে হয়নি। তা ছাড়া ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ার ও মহাখালীর এস কে এস টাওয়ার শাখায় সিনেমাটি ভালো চলত বলে আমাদের ধারণা, কিন্তু ওই দুটি হলে কোনো শো রাখা হয়নি। সব মিলিয়ে নির্মাতার হয়তো মনে হয়েছে, একটা শিল্পকর্মের যথার্থ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তাই তিনি স্টার সিনেপ্লেক্সে সিনেমাটি না চালানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।’

গতকাল স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলেও অভিযোগ ছিল প্রথম দিন থেকেই। হল ভিজিটে যাওয়ার পর স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখার শো নিয়ে আপত্তি তোলেন সিনেমার নির্মাতা ও কলাকুশলীরা। অভিনেতা সাজু খাদেম বলেন, ‘প্রজেকশনের কারণে সিনেমা না দেখেই বের হয়ে যেতে হলো। স্টার সিনেপ্লেক্স সব সময় পরিকল্পিতভাবে এটা করে। ৩ নম্বর হলে কখনোই সিনেমা ভালো দেখা যায় না, অন্ধকার থাকে। তাঁরা দেখে দেখে বাংলা সিনেমা এই হলে মুক্তি দেন। উনাদের যতবার বলা হয় ততবার উত্তরে বলেন, তাঁরা বিষয়টি খেয়াল করেননি। তাঁরা যদি বাংলা সিনেমার প্রতি আন্তরিক হতেন, তাহলে এক সপ্তাহ হল বন্ধ রেখে সমস্যার সমাধান করতেন।’

ইন্তেখাব দিনার বলেন, ‘সিনেমাটি দেখতে এসে খুব হতাশ, ক্ষুব্ধ এবং দর্শক হিসেবে প্রতারিত বোধ করছি। প্রথমে মনে হচ্ছিল, আমার চোখে কোনো সমস্যা হলো কি না! একপর্যায়ে আবিষ্কার করলাম, সমস্যা আমার চোখে নয়, পর্দায়। দিনের দৃশ্যকে মনে হচ্ছে রাতের। তাহলে চিন্তা করেন, রাতের দৃশ্যগুলোর কী অবস্থা?’

মনস্তাত্ত্বিক গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে শ্যামা কাব্য। গল্পে দেখা যায় ব্রোকেন ফ্যামিলিতে বেড়ে ওঠা আজাদ একটি কলেজে শিক্ষকতা করে। মা-বাবার বিচ্ছেদ তার জীবনে বড় একটা প্রভাব ফেলে। বড় হয়ে যখন সম্পর্কে জড়ায় আজাদ, সেখানে আসে বিচ্ছেদ। তার মাঝে হতাশা জন্ম নেয়। একসময় তার জীবনে শ্যামার আগমন ঘটে। এমনই বিভিন্ন রকম সম্পর্কের নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় কাহিনি। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোহেল মণ্ডল, নীলাঞ্জনা নীলা, ইন্তেখাব দিনার, নওরীন হাসান খান জেনি, এ কে আজাদ সেতু প্রমুখ। গত বছর প্যারিসের একটি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয় শ্যামা কাব্যর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত