Ajker Patrika

সরকারি বাসা বরাদ্দে অনিয়ম

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৮: ৪৩
সরকারি বাসা বরাদ্দে অনিয়ম

মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টার বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রথম শ্রেণির কোয়ার্টারে প্রভাব খাটিয়ে থাকছেন দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা। আবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির কোয়ার্টারে বাইরের লোক থাকছেন বলেও জানা গেছে।

এ ছাড়া অনেকের বিরুদ্ধে ভাড়া পরিশোধ না করার অভিযোগও রয়েছে। দীর্ঘদিন এভাবে চলে এলেও নেওয়া হয়নি কার্যকর কোনো আইনি ব্যবস্থা।

কোয়ার্টার বরাদ্দ-সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মনিরামপুর উপজেলা পরিষদে ইউএনও এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসভবন বাদে দ্বিতলবিশিষ্ট হাসনাহেনা, জুঁই ও চামেলি এই তিনটি কোয়ার্টার রয়েছে।

তার মধ্যে হাসনাহেনা কোয়ার্টারটিতে চারজন গেজেটেড কর্মকর্তা থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হয়েও এই কোয়ার্টারে দীর্ঘদিন থাকছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু আব্দুল্লাহ বায়েজিদ। ফলে পরিষদে কর্মরত গেজেটেড কর্মকর্তারা চাইলেও কোয়ার্টারে উঠতে পারছেন না।

বিষয়টি জানতে একাধিকবার এই কর্মকর্তার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।

এদিকে উপজেলার লাউড়ি কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদ মসজিদের ইমাম কে এম মফিজুর রহমানের কোয়ার্টারে থাকার অনুমতি না থাকলেও ২০১৩ সাল থেকে তিনি পরিবার নিয়ে থাকছেন জুঁই কোয়ার্টারে।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, পরিষদের কোয়ার্টারে কখন কে উঠছেন বা নামছেন। কে ভাড়া কত দিচ্ছেন বা দিচ্ছেন না এ-সংক্রান্ত পুরো তথ্য নেই এই দপ্তরটিতে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুজার সিদ্দিকী এক বছরেরও অধিক সময় থাকছেন পরিষদের হাসনাহেনা কোয়ার্টারে।

তিনি নিজের নামে বরাদ্দ না নিয়ে একই দপ্তরে প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়া প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. সাময়ানের নামে কোয়ার্টার নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুজার সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি যে সরকারি কোয়ার্টারে থাকি, সেটা যেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ না জানেন, সে জন্য সাময়ানের নামে বরাদ্দ নিয়েছি।’

উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের হিসাব সহকারী আলী কদর একই দপ্তরের প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়া দিলীপ কুমার সানার নামে বরাদ্দ নিয়ে থাকেন জুঁই কোয়ার্টারে।

আলী কদর বলেন, ‘মনিরামপুরে যোগদানের পর থেকে দেখছি একজন অন্যজনের নামে কোয়ার্টার নিয়ে থাকছেন। তাই আমিও একইভাবে উঠেছি।’

এদিকে পরিষদে ব্যাচেলর ভবনে (ডরমিটরি) ১৮টি বেড রয়েছে। সেখানে নিয়মবহির্ভূত কেউ কেউ থাকছেন বলে অভিযোগ। ভবনের দোতলায় বিনোদনের কক্ষটি রান্নাঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, মফস্বল এলাকায় সরকারি কর্মকর্তারা মূল বেতনের ৩৫-৫০ শতাংশ বাড়িভাড়া পান। উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টারে যাঁরা থাকেন, তাঁরা কেউ সেই অনুপাতে ভাড়া দেন না বলে অভিযোগ।

উপজেলা প্রকৌশলীর অফিসের একটি সূত্র বলছে, অনেক আগে রেজুলেশনের মাধ্যমে গেজেটেড কোয়ার্টারের ভাড়া ৩ হাজার ২০০ টাকা ও বাকি দুটি কোয়ার্টারের ভাড়া ২ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেকে ঠিকমতো এই ভাড়াও দেন না বলে অভিযোগ। ফলে পরিষদ প্রতি মাসে অনেক টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী সানাউল হক বলেন, ‘কোয়ার্টার নিয়ে সব তথ্য দিতে গেলে সময় লাগবে। তবে একজনের নামে বরাদ্দ নিয়ে অন্যজন থাকাটা অন্যায়।’

মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছর ভাড়া নিয়ে সমস্যা দেখতে পেয়ে কয়েকজনকে নোটিশ করেছি। এর অতিরিক্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি। দ্রুত ইউএনওর কাছে কোয়ার্টার-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চাইব। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

৬১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ৩০ জনের নামে মামলা

ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনেই জয়ী হবে জামায়াত: মাওলানা হালিম

আক্কেলপুরে ‘একঘরে’ করে রাখা দিনমজুরকে মারধর, থানায় মামলা

‘কথিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের’ বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিষয়ে ভারত অবহিত নয়: মুখপাত্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত