Ajker Patrika

আজ কি জ্বলবে মিডল অর্ডার

রানা আব্বাস, অ্যাডিলেড থেকে
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২২, ০৯: ৩৭
আজ কি জ্বলবে মিডল অর্ডার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলকে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন শুনতে হয়েছে উদ্বোধনী জুটি নিয়ে। এশিয়া কাপের আগে হঠাৎ দলের কোচ হওয়া শ্রীধরন শ্রীরাম বাংলাদেশের শক্তিমত্তা বুঝতে যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষাই করেছেন গত তিন মাসে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিরীক্ষা হয়েছে টপ অর্ডারে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অবশ্য আর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাননি শ্রীরাম। মূল মঞ্চে নিয়মিতই স্বীকৃত ওপেনারদের খেলিয়েছেন। ওপেনিং জুটি খুব একটা হতাশও করেনি গত চার ম্যাচে। টুর্নামেন্টে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ পেয়েছে গড়ে ৩৬.৭৫ রান। টি-টোয়েন্টিতে এটি বেশ ভালো শুরু হিসেবেই বিবেচিত। ওভারে গড়ে ৮.৮৯ রান তুলেছেন বাংলাদেশের ওপেনাররা।

ওপেনিং জুটি সবচেয়ে দুর্দান্ত খেলেছে ভারতের বিপক্ষে। সে ম্যাচে তিন থেকে ওপেনিংয়ে উঠে আসা লিটন দাসের চোখধাঁধানো স্ট্রোক-প্লেতে বাংলাদেশ ৪৪ বলে ৬৮ রান তুলেছিল। পরে বৃষ্টিবিরতি, ফেক ফিল্ডিংয়ের নানা বিষয় এলেও ভারতের সঙ্গে ম্যাচটা বাংলাদেশ জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে হেরেছিল আসলে মিডল আর লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায়।

বৃষ্টিবিরতির পর বাংলাদেশের ৫৪ বলে করতে হতো ৮৫ রান। ৭.২ ওভারে বিনা উইকেটে ৬৮ রান থেকে ১২.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ১০৮, ৩৩ বলে ৩৪ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ আসলে কক্ষচ্যুত হয়। পরে নুরুল হাসান সোহান আর তাসকিন আহমেদের ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ম্যাচে থাকে শেষ বল পর্যন্ত। শুধু ভারত ম্যাচে নয়, এই বিশ্বকাপে নিয়মিত হতাশ করেছে মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডার। এই জায়গায় মুশফিকুর রহিম-মাহমুদউল্লাহর মতো একজন অভিজ্ঞ ব্যাটারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই। বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল আজকের পত্রিকায় লেখা তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে অনুভব (মিস) করেছি। এখানে যদি একজন অভিজ্ঞ লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটার থাকত, তাহলে হয়তো জিততে পারতাম আমরা। মোসাদ্দেক আর ইয়াসির দুজনই অনভিজ্ঞ।’

 এশিয়া কাপের পর মুশফিকের আকস্মিক অবসর আর মাহমুদউল্লাহ টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়ায় তাঁদের বড় জুতায় পা গলানোর ভার পড়েছিল নুরুল হাসান সোহান, মোসাদ্দেক হোসেন আর ইয়াসির আলী রাব্বির ওপর। হোবার্টে মোসাদ্দেক নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১২ বলে অপরাজিত ২০ রানের একটা প্রভাববিস্তারী ইনিংস খেললেও বাকি তিন ম্যাচে আর তেমন রান করতে পারেননি। ইয়াসির তো হতাশার আরেক নাম হয়ে রইলেন। যে তিন ম্যাচ খেলেছেন তিনি, একটিতেও দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। সোহানের ব্যাট কিছুটা হাসল ওই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে গড়ে উঠেছে ১২ রান, পঞ্চম উইকেটে সেটি ১৪.৭৫ আর ষষ্ঠ উইকেটে ১৪.২৫। বাংলাদেশের মিডল কিংবা লোয়ার মিডল অর্ডার এতটাই অনুজ্জ্বল এই টুর্নামেন্টে। দলের সঙ্গে থাকা বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার ব্যাখ্যায় বলছিলেন, অতিরিক্ত তাড়াহুড়া করতে গিয়ে দ্রুত উইকেট হারাচ্ছে ব্যাটাররা।

তবে তিনি আশাবাদী, টপ অর্ডারের মতো মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারও ‘ক্লিক’ করবে। সেই ক্লিক করার দারুণ এক সুযোগ আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে। মিডল অর্ডার যেন ভালো করে গতকাল তাই ইয়াসির, সোহান আর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে অনেকক্ষণ কাজ করলেন শ্রীরাম। ইয়াসিরের অবশ্য খেলার সম্ভাবনা কম বলেই শোনা যাচ্ছে। বাকিরা ঠিকঠাক জ্বলে না উঠলে সুপার টুয়েলভের শেষটা রঙিন করে রাখা কঠিনই হবে বাংলাদেশের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত