Ajker Patrika

৩ কোটি টাকার সেতুতে ৬ মাসের মধ্যেই ভাঙন

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর (যশোর) 
৩ কোটি টাকার সেতুতে ৬ মাসের মধ্যেই ভাঙন

যশোরের মনিরামপুরে হরিহর নদের ওপর নবনির্মিত চিনাটোলা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ার পর ৬ মাস না যেতেই মেঝে (স্ল্যাব) ধসে পড়েছে। ৪২ মিটার লম্বা সেতুটি প্রায় ৩ কোটি ১৩ লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয়। 

সেতুটি চলতি বছরের মার্চে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এরপর আগস্টের প্রথম দিকে মেঝের অংশ ভেঙে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে ভাঙা অংশ বেড়ে রড বেরিয়ে পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা 

প্রকৌশল কার্যালয়ের লোকজন এসে সংস্কারের জন্য মেঝের ঢালাই ভাঙা শুরু করলে এলাকাবাসী বাধা দেন। তাঁরা পুরো সেতু ভেঙে নতুন করে নির্মাণের দাবি জানান। এতে সংস্কারকাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চলাচলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

সেতু নির্মাণের ঠিকাদার ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের ভাই শামীম চাকলাদার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মনিরামপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের অনুসারী শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের মদদে দায়সারাভাবে সেতুর কাজ করেছেন ঠিকাদার। এতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে তখন শাহীন চাকলাদার ও আলমগীর চেয়ারম্যানের ভয় দেখানো হয়েছে তাঁদের। স্বপন ভট্টাচার্যের ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য শুভ এই কাজ থেকে কমিশন নিয়েছেন। তবে চেয়ারম্যানের দাবি, অভিযোগ সত্যি না। ক্ষোভ থেকে এখন তাঁরা অনেক কথা বলছেন। 

এলাকাবাসী জানান, চিনাটোলা বাজার-মনোহরপুর বাজার সড়কের হরিহর নদের ওপর ২০২১ সালের এপ্রিলে সেতু নির্মাণ শুরু হয়। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর। কিন্তু ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে নির্ধারিত মেয়াদের এক বছরের বেশি সময় পর কাজ শেষ করেন। 

সেতুর পূর্বপাড়ের বাসিন্দা আমির হোসেন জানান, সেতু খুলে দেওয়ার ৪-৫ মাসের মাথায় মেঝের অংশ ফেটে নদীতে পড়ে কয়েকটি গর্ত দেখা দেয়। আরেক বাসিন্দা জিয়ারুল গাজী বলেন, যতটুকু পুরো করে ঢালাই দেওয়ার কথা ছিল, সেই নিয়মে ঢালাই দেওয়া হয়নি। এখন পায়ের আঙুল দিয়ে খোঁচা দিতেই চলটা উঠে আসছে। 

এ নিয়ে কথা হলে ঠিকাদার শামীম চাকলাদার বলেন, ‘আমার লাইসেন্সে অন্য ঠিকাদার কাজ করেছেন। ঢালাইয়ের সময় অন্য জায়গায় সিমেন্ট-বালু মিশিয়ে এনে কাজ করা হয়েছে। এতে উপাদানের স্থায়িত্ব কমে যাওয়ায় এমনটি হতে পারে। যেহেতু আমার লাইসেন্সে কাজ করা হয়েছে, স্ল্যাব ধসে পড়ার দায় আমার ওপর বর্তায়। স্ল্যাবের কার্পেটিং ভেঙে নতুনভাবে কাজ করা হবে।’ 

সেতুর কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী গাউসুল আজম বলেন, ‘শুনেছি ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন স্থানীয় লোকজন পিটিয়ে সেতুর মেঝে ভেঙে ফেলেছে।’ ঠিকাদার ও স্থানীয় আলমগীর চেয়ারম্যানও একই দাবি করেন। 

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ দাস বলেন, ‘সেতুর স্ল্যাব ধসে পড়ার খবর পেয়ে আমরা মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। প্রথম দিকে স্থানীয় লোকজন বাধা দিয়েছিলেন। এখন সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু 
করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত