Ajker Patrika

বহিষ্কারেও থামছেন না বিদ্রোহীরা

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ১৩ জুন ২০২২, ১১: ২৮
বহিষ্কারেও থামছেন না বিদ্রোহীরা

বহিষ্কারেও থামছেন না ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার ১৭ আওয়ামী লীগ নেতাকে গত শনিবার রাতে বহিষ্কার করেছে দল। যদিও ওই নেতাদের অনেকেই দাবি করেছেন, দলে তাঁদের পদ নেই, তাই এ বহিষ্কার আগামী ১৫ জুনের ভোটে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

গত শনিবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দলের পদে থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করায় মোট ১৭ জনকে গঠনতন্ত্রের ৪৭ (ঠ) ধারা অনুযায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃতরা হচ্ছেন, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চর এক্করিয়া ইউপির আবুল হোসেন আকন ও রুহুল আমিন পলাশ, গোবিন্দপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন তালুকদার, আন্ধারমানিক ইউপির নাসির উদ্দিন খোকন, আ. রহমান পলাশ, কাজী শহিদুল ইসলাম, লতা ইউপির আবু রাশেদ মনি, ফজলে রাব্বী, বিদ্যানন্দপুর ইউপির আবুল বাশার, মাস্টার শাহ আলমগীর, শাহাবউদ্দিন ফকির, মনির হোসেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মিয়া, জয়নগর ইউপির মনির হোসেন হাওলাদার এবং হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউপির মো. জামাল উদ্দিন ঢালী, হিজলা-গৌরবদী ইউপির মো. ফিরোজ হোসেন ও জাহাঙ্গীর মুন্সী।

আওয়ামী লীগ নেতা মো. জামাল উদ্দিন ঢালী ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনবার হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে প্রতিবারই জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার রাতে জামাল ঢালীসহ হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১৭ নেতা কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। তার মধ্যে ১৬ জন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়কারী। তবে বহিষ্কৃতদের বেশির ভাগেরই দলে পদপদবি নেই। বহিষ্কার হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। আগামী ১৫ জুন হিজলার দুটি এবং মেহেন্দিগঞ্জে ছয় ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, বহিষ্কৃত ১৭ জনের মধ্যে বিদ্যানন্দপুর ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মিয়ার ছেলে মনির হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ছেলের নির্বাচনী প্রচারের প্রধান সমন্বয়কারী হওয়ায় চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মিয়াকে বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়ায় হিজলার ধুলখোলা ইউনিয়নের প্রার্থী জামাল উদ্দিন ঢালী বলেন, তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে শুনেছেন। কিন্তু কোনো দিন বহিষ্কারাদেশের কাগজপত্র পাননি। গত বছর উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তখনো তাঁকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বহিষ্কার করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগ তাঁকে আবারও বহিষ্কার করেছে শুনেছেন। জামাল ঢালী বলেন, যে বহিষ্কারাদেশের কোনো কাগজপত্র দেওয়া হয় না, প্রত্যাহারও হয় না, তাই এ ধরনের বহিষ্কারাদেশ তিনি গুরুত্বহীন মনে করেন।

গোবিন্দপুর ইউপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন তালুকদার জানান, তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। বহিষ্কারের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি ভোটের মাঠ ছাড়বেন না।
হিজলা গৌরবদী ইউপির আওয়ামী লীগের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম মিলন বলেন, যাঁরা বিদ্রোহী তাঁরা মাঠে নেই, কেবল ঘরে বসে অভিযোগ দেন। ভোটের মাঠে তাঁদের অবস্থান নেই।

এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ১৭ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পদবিহীনদের বহিষ্কারের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত