দলীয় প্রতীক ছাড়াই ভোট

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইন উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) দলীয় প্রতীক ছাড়াই হচ্ছে নির্বাচন। আগামী ৫ জানুয়ারি এই দুই উপজেলায় ভোট। দলীয় প্রতীকে ভোট না হওয়ায় প্রার্থী এবং ভোটাররা খুশি। পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে ১৫টি ইউপিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৮২ চেয়ারম্যান প্রার্থী।

এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

দুই উপজেলার প্রার্থীরা দিন-রাত ছুটছেন ভোটারদের কাছে। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। সমর্থকেরাও প্রার্থীদের সঙ্গে অংশ নিচ্ছেন গণসংযোগে। কিশোরগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসনে অন্তর্ভুক্ত এ দুই উপজেলা। এ আসন থেকে টানা সাতবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই এ আসনের সাংসদ হন তাঁর বড় ছেলে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক।

এ প্রথমবার এই দুই উপজেলার সব ক’টি ইউপিতে দলীয় প্রতীক ছাড়া হচ্ছে ভোট। দলীয় প্রতীক না থাকায় বাড়তি চাপ নেই প্রার্থীদের মধ্যে।

মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউপির এক চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, ‘দলীয় প্রতীক না থাকাতে প্রার্থীদের বাড়তি চাপ নেই। ভোটারদের কাছে সবাই যাচ্ছি। ভোটারদেরও পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে বলছি।’

এদিকে রাজনৈতিক চাপ না থাকায় খুশি ভোটাররাও।

ভোটাররা জানান, এটি বর্তমান রাষ্ট্রপতির এলাকা। এখানে তফসিল ঘোষণার পর সবাই নৌকা চেয়েছিলেন। পরে দলীয় প্রতীক না দেওয়াতে প্রার্থীর সংখ্যাও কমে গেছে। এখন ভোটাররা পছন্দের প্রার্থী সহজেই বেছে নিতে পারবেন।

জেলার প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা আশ্রাফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই উপজেলার ২৫টি ইউপিতে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দল কোনো প্রার্থীর জন্য আমাদের কাছে প্রতীকের জন্য চিঠি দেননি। তাই দলীয় প্রতীক ছাড়াই এই ১৫টি ইউপিতে নির্বাচন হবে।’

দুই উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৬ জন। এর মধ্যে মিঠামইন উপজেলায় মোট ভোটার ৯৩ হাজার ৯৬৬ জন এবং অষ্টগ্রাম উপজেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৯১০ জন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দেওঘর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ফরিদ মিয়া (ঘোড়া), মো. আক্তার হোসেন (টেলিফোন), মো. ইব্রাহিম মিয়া (মোটরসাইকেল), মো. কাউসার আলম (রজনীগন্ধা), মো. গিয়াস উদ্দিন (আনারস), মো. চাঁন মিয়া (টেবিল ফ্যান), মো. তাহের উদ্দিন পাঠান (চশমা), মো. রহমত আলী (দুটি পাতা), মো. সুজন খাঁন (ঢোল) ও সালমা পারভীন (অটোরিকশা)।

কাস্তুল ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল হক সুজন (ঘোড়া), ম. সাজন উদ্দিন ভূঁইয়া (মোটরসাইকেল), মো. আলাল মিয়া (অটোরিকশা), মো. ইকবাল হোসেন (ঢোল), মো. শরীফ উদ্দিন (আনারস) ও সাইফুল হক রন্টি (চশমা)।

অষ্টগ্রাম সদর ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আল আমিন (আনারস), মো. ছায়েদুর রহমান (চশমা), সৈয়দ ফায়াজ হাসান বাবু (মোটরসাইকেল) এবং সৈয়দ ফারুক আহম্মেদ (ঘোড়া)। বাঙ্গালপাড়া ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হক অলি (চশমা) ও মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান (ঘোড়া)। কলমা ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাল্গুন দাস (অটোরিকশা), মো. নজরুল ইসলাম (মোটরসাইকেল), রাধাকৃষ্ণ দাস (ঘোড়া) ও সাধন চন্দ্র দাস (আনারস)। আদমপুর ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আ. মান্নাফ (আনারস), বাছেদ মিয়া (মোটরসাইকেল), মো. নাছিরুল ইসলাম (অটোরিকশা), মো. ফজলুল করিম বাদল (ঘোড়া) ও মো. শফিকুল ইসলাম (চশমা)। খয়েরপুর-আব্দুল্লাপুর ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিদুল হোসেন চৌধুরী (মোটরসাইকেল), মো. আনোয়ার হোসেন খাঁন (চশমা), মো. আব্দুর রশিদ (আনারস), মো. মুক্তার খাঁন (ঘোড়া) এবং মো. রফিকুল ইসলাম খন্দকার রাজা মিয়া (অটোরিকশা)। পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী ছৈয়দ সাঈদ আহমেদ (চশমা), মো. কাছেদ মিয়া (ঘোড়া) ও মো. কায়ছারুল আলম কাউছ (আনারস)।

এদিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংরক্ষিত নারী সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদের দুই প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন অষ্টগ্রাম সদর ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আবদুল বাসেদ এবং খয়েরপুর-আব্দুল্লাপুর ইউপিতে ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য আয়েশা আক্তার।

এদিকে মিঠামইন সদর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফ কামাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মিঠামইন সদর ছাড়া বাকি ৬ ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩৩ জন। ৭ ইউপিতে সাধারণ সদস্য পদে ২৩৬ এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৬৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।