Ajker Patrika

বউ ফিরে পেতে পথে পথে স্বামীর ফেস্টুন

নরসিংদী প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৩৭
বউ ফিরে পেতে পথে পথে স্বামীর ফেস্টুন

স্ত্রী চলে গেছে বাবার বাড়ি। দুই দিন যায়, চার দিন যায়, স্ত্রী আর ফেরে না। স্ত্রী-বিরহে কাতর স্বামী তাই বেছে নিয়েছেন ব্যতিক্রমী এক পথ। তিনি এলাকার মোড়ে মোড়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনের ছবিসহ টাঙিয়ে দিয়েছেন ফেস্টুন। মিনতি করেছেন, স্ত্রী যেন ফিরে আসে তাঁর কাছে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক-সংলগ্ন নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার বড়ইতলা ও বিসিক শিল্পনগরী এলাকার গাছে গাছে ঝুলছে এমন ফেস্টুন। এতে লেখা, ‘ও সুমিরে তোমায় ছাড়া ভালো লাগে না। তুমি যে আমারি, শুধু যে আমারি। চিরদিন কাছে থাকো না। ইতি-তোমার স্বামী, মজিবর রহমান।’

মজিবর রহমানের বাড়ি নরসিংদী পৌরশহরের নাগরিয়াকান্দি ইউএমসি জুটমিল এলাকায়। তিনি ইজিবাইক চালান। তাঁর স্ত্রী সুমি বেগম রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের কুমারটেক গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের শুরুর দিকে সুমি বেগমের সঙ্গে মজিবর রহমানের পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রেম। এর এক বছরের মাথায় বিয়ে করেন দুজন। মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে ভালোই চলছিল মজিবর-সুমির সংসার।

গত সেপ্টেম্বর মাসে মজিবরের বাড়িতে বেড়াতে আসেন তাঁর স্ত্রীর ছোট বোন। এ সময় দুই বোন একসঙ্গে শিবপুরের কুমারটেকে বাবার বাড়িতে দুই-তিন দিন বেড়াবেন বলে জানান। এ কথা বলে সুমিকে নিয়ে কুমারটেকে যান তাঁর বোন। এরপর থেকে আর ফিরছেন না। বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়িতে যোগাযোগ করেন মজিবর, কিন্তু জানতে পারেন সুমি সেখানে নেই। অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাঁকে। তখন স্বামী-স্ত্রী দুজনের ছবিসহ ফেস্টুন ছেপে শ্বশুরবাড়ির এলাকা মরজালসহ নরসিংদী ও আশপাশের শিল্প ও আবাসিক এলাকার গাছে ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে টাঙিয়ে দেন।

মজিবর রহমান বলেন, ‘প্রেম করে বিয়ে করেছি, তিন বছর সংসার করেছি ছেড়ে যাওয়ার জন্য নয়। জানতাম সুমির বাবা-মা কেউ নেই। বিয়ের ছয় মাস পরে জানতে পারি তার বাবা-মা আছে। গরিব বলে গোপন রেখেছিল। এতেও আমার কোনো সমস্যা ছিল না। আমরা খুব ভালোই ছিলাম। সমস্যা হয়, আমার শ্যালিকার বিয়ে হওয়ার পর তালাকের ঘটনায়। তালাকপ্রাপ্ত শ্যালিকার বিয়ের খরচসহ বিভিন্ন কারণে আমার শ্বশুর ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন।’

মজিবরের অভিযোগ, ‘আমার বউকে সহজ-সরল পেয়ে শ্যালিকা আর শাশুড়ি ফুসলিয়ে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে কাজে দেয়। সুমির সঙ্গে আমার প্রতিনিয়ত ফোনে যোগাযোগ হয়। কিন্তু কই আছে? কী কাজ করে কিছুই বলে না। আমি দেখা করতে চাইলেও দেখা করতে চায় না। শ্যালিকা আর শাশুড়ির জন্যই বউ আমার কাছে আসতে পারছে না।’ এই বিষয়ে মজিবরের স্ত্রী সুমির মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

মরজাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সানজিদা সুলতানা নাসিমা বলেন, ‘মজিবর রহমান নামে এক ব্যক্তি সুমির স্বামী দাবি করে যে ফেস্টুন টাঙিয়েছেন, তা চোখে পড়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ঘটনাটি ভাইরাল হতে দেখেছি। তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে স্বামী-স্ত্রীর সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত