Ajker Patrika

ইইডিতে নজিরবিহীন বদলি-পদায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ইইডিতে নজিরবিহীন বদলি-পদায়ন

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ইইডি) বদলি ও পদায়ন নিয়ে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। নিয়ম না থাকলেও সদ্যবিদায়ী প্রধান প্রকৌশলী শাহ নাইমুল কাদের পেছনের তারিখ দিয়ে ৮০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি ও পদায়নের নথিতে স্বাক্ষর করেছেন।

এর মধ্যে উপসহকারী প্রকৌশলী পদের ২১ জন কর্মকর্তা বিভিন্ন জেলায় বদলি হয়েছেন। আর বিভাগীয় পদোন্নতি পেয়ে পদায়ন পেয়েছেন ২৩ জন সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ৩৬ জন হিসাবরক্ষক।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান প্রকৌশলী শাহ নাইমুল কাদেরের শেষ কর্মদিবস ছিল ১৩ অক্টোবর। কিন্তু তিনি ছুটির দিন অর্থাৎ ১৪ অক্টোবর (শুক্রবার) ও ১৫ অক্টোবর (শনিবার) অফিস করে ৮০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি ও পদায়ন করেছেন। অথচ তিনি বদলি ও পদায়নের নথিতে সই করেছেন পেছনের তারিখ দিয়ে অর্থাৎ ১২ অক্টোবর। নিয়ম ভেঙে এসব বদলি ও পদায়নের ঘটনায় অসন্তোষ বিরাজ করছে ইইডিতে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সহকারী প্রকৌশলী অভিযোগ করেন, ইইডিতে বদলি-পদায়ন নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। মূলত এসব বদলি ও পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থের লেনদেন ও তদবির হয়েছে। আর এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির নেতাদের একাংশ এবং কয়েকজন ক্ষমতাশালী নির্বাহী প্রকৌশলী।

একই অভিযোগ করেন কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলীও। তাঁরা বলেন, সদ্যবিদায়ী প্রধান প্রকৌশলী কেন বন্ধের দিনে অফিস করবেন? তাঁর অসৎ উদ্দেশ্য ছিল বলেই তিনি বন্ধের দিন অফিস করে এসব বদলি-পদায়নের ফাইল তৈরি করেছেন। আর পেছনের তারিখ দিয়ে বদলি ও পদায়ন আদেশ জারি ইইডির ইতিহাসে কখনো হয়নি। বলা যায়, এ ঘটনা ‘নজিরবিহীন’। তাঁরা অবিলম্বে এসব বদলি ও পদায়নের আদেশ বাতিলের দাবি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জাফর আলী সিকদারকে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি।

ইইডির বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী ও এর ওপরের স্তরের কর্মকর্তাদের বদলির আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইইডি শুধু সহকারী ও উপসহকারী প্রকৌশলী এবং অন্য কর্মকর্তাদের বদলি করতে পারে। এ বিষয়ে বিদায়ী প্রধান প্রকৌশলী শাহ নাইমুল কাদের বলেন, ‘বদলি ও পদায়ন রুটিন ওয়ার্ক। এর বাইরে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাব সরবরাহের কাজ করে থাকে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি-সুবিধা সরবরাহের কাজও তারা করে থাকে।

উল্লেখ্য, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের মুখে ইইডির প্রধান প্রকৌশলী শাহ নাইমুল কাদের অবসরে যান ১৫ অক্টোবর। এই প্রকৌশলী রীতি ভেঙে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার দৈনিক আজকের পত্রিকায় ‘৫০ হাজার কোটি টাকার কাজ পাঁচজনের কবজায়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর সমালোচনার মুখে নিজের প্রকল্পের দায়িত্ব ছাড়া এবং কয়েকটি প্রকল্পের দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের নথি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠান তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত