উপল বড়ুয়া, ঢাকা
জগদ্বিখ্যাত রাশান ঔপন্যাসিক লেভ তলস্তয়ের ‘যুদ্ধ ও শান্তি’র মতো মহৎ সাহিত্যকর্ম খুব কমই আছে। উনিশ শতকের শুরুতে নেপোলিয়নের রাশিয়া আক্রমণের ওপর লেখা এই উপন্যাস যেন মানব ইতিহাসেরই এক দলিলপত্র। যদি বলা হয় ফুটবলের ইতিহাস? তাতেও আসবে যুদ্ধের ভয়াবহতা। মাঠ যেন এক রণক্ষেত্র, আর দুই পক্ষের ২২ জন খেলোয়াড় একেকজন ঢাল-তলোয়ারহীন সৈনিক। ফুটবলকে কেন্দ্র করে দর্শক-সমর্থকদের মধ্যে মারামারিও নতুন নয়। যুদ্ধের কারণে ফুটবল বন্ধ থাকারও নজির আছে।
দোরগোড়ায় এখন আরেকটি ফুটবল বিশ্বকাপ। ২০ নভেম্বর থেকে কাতারে শুরু হচ্ছে বিশ্বের ৩২ দেশের যুদ্ধ। মরুর বুক থেকে কে বিজয়ী বেশে ফিরবে, তা নিয়ে এখন চায়ের কাপে ঝড়। তবে এক মাসের ফুটবল-জ্বরে পড়ার আগে একটু অতীত থেকে ঘুরে আসা যাক। ১৯৩০ সালে উরুগুয়ের মাটিতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় বিশ্বকাপ। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে চার বছর পরপর হওয়া বিশ্বকাপ বন্ধ ছিল দুই আসর।
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ সালে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) সশস্ত্র বাহিনীর সংগঠিত ফুটবল ছাড়া মাঠে সব ফুটবল বন্ধের ঘোষণা দেয়। যা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সম্পূর্ণ বিপরীত। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রথম বছরেও পেশাদারি ফুটবল চালু ছিল। কিন্তু ১৯৩৯ সালে বিমান হামলার ভয়ে মাঠে ফুটবল নিয়ে নামাটাই অসম্ভব হয়ে ওঠে। ভয়টা অমূলক নয়। জীবনের ভয়ে মানুষ যেখানে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছিল, ওই সময় কে ফুটবল দেখতে আসত স্টেডিয়ামে! এর মধ্যে ফুটবল ছেড়ে সৈনিক বেশে খেলোয়াড়দেরও যুদ্ধে যেতে হয়েছিল। বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মাঠ। এর স্মৃতি বহন করে আছে আর্সেনালের হাইবেরি গ্রাউন্ড।
পেশাদারি ও আন্তর্জাতিক ফুটবল বন্ধ থাকলেও ১৫ লাখ ব্রিটিশ সৈনিক যুদ্ধের ভয়াবহতা ভুলতে চিত্তবিনোদনের জন্য বেছে নিয়েছিল ফুটবলকে। আর যুদ্ধবন্দীরা কী করত? নিকট দূরত্বে দাঁড়িয়ে থেকে তারাও বেছে নিয়েছিল ফুটবলকে। এরপর যুদ্ধ শেষ হলে পৃথিবীকে আবার নতুনভাবে সাজাতে, যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল ফান্ড গড়তে। ১৯৪৩ সালের মে মাসে নেভি ওয়েলফেয়ার লিগে চেলসির তেমন এক ম্যাচে দর্শক সমাগম হয়েছিল ৫৫ হাজার।
বিংশ শতাব্দীতে দুটি বিশ্বযুদ্ধ দেখেছে মানুষ। একবিংশ শতাব্দীতেও থেমে নেই যুদ্ধ। পৃথিবীর কোনো না কোনো প্রান্তে অস্ত্র-গোলাবারুদ তৈরি আছে নিশ্বাসটুকু কেড়ে নিতে। বিশ্বকাপ দেখতে যখন সবার চোখ থাকবে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে, তখন পূর্ব ইউরোপের মানুষের ঘুম ভাঙবে বোমার শব্দে। প্রায় ৯ মাস হতে চলল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। এবারের বিশ্বকাপে দুটি দেশই নেই। অথচ ২০১৮ বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল রাশিয়া। কিন্তু এবার তারা বাছাইপর্ব পেরোতে পারেনি। ইউক্রেনে হামলার জেরে সব ধরনের ফুটবল সংস্থা থেকেও নিষিদ্ধ করা হয় ভ্লাদিমির পুতিনের দেশকে। কাতারে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও বাছাইয়ের প্লে-অফে ইউক্রেনীয়দের স্বপ্ন কেড়ে নেয় ওয়েলস। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন খেলতে পারেনি ঘরের মাঠে। একই কারণে দেশটির ক্লাব শাখতার দোনেৎস্ক চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলেছে নিরপেক্ষ মাঠে।
যুদ্ধের ভয়াবহতা কেমন তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। ফুটবল বিশ্বে পরিচিত মুখ বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার এডিন জেকো। খেলেন ইন্টার মিলানে। তাঁর মুখ থেকে শুনুন, যুদ্ধের ভেতর কেমন কেটেছিল তাঁর শৈশব—‘ছোটবেলায় আমার মা আমার জীবন বাঁচিয়েছিলেন। বসনিয়ায় তিনি আমাকে আমার বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে যেতে দিতেন না। একবার খেলার সময় বোমা বিস্ফোরিত হয় আর আমার বন্ধু মারা যায়। যুদ্ধের কারণে আমার কোনো শৈশব ছিল না, তবে এসবই আমাকে শক্তিশালী করেছে।’ বসনিয়া যুদ্ধের নির্মমতা হয়তো এখনো ভুলতে পারেননি জেকো।
ফুটবলের কারণে দুই দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধও হয়েছে অনেক। ১৯৬৯ সালে দুই মধ্য আমেরিকান প্রতিবেশি দেশ এল সালভাদর ও হন্ডুরাসের যুদ্ধ তো এখন বিশ্বে ‘ফুটবল যুদ্ধ’ হিসেবেই পরিচিত। দুই দেশের জাতীয় সমস্যা শেষ পর্যন্ত রূপ নিয়েছিল ফুটবল মাঠে। তবে দিদিয়ের দ্রগবাকে দেখি একেবারে ভিন্ন রূপে। ফুটবল ইমেজ ব্যবহার করে আইভরি কোস্টের গৃহযুদ্ধ থামিয়েছিলেন তিনি।
যুদ্ধের কারণে ফুটবলের কম ক্ষতি হয়নি। তবে যুদ্ধের সঙ্গে আদৌ কি ফুটবলের সম্পৃক্ততা আছে? প্রাচীন রণবিদ সানজুর যে যুদ্ধনীতি ও কৌশল, ফুটবল মাঠেও ব্যবহার হতে দেখা যায়। কেননা, শেষ পর্যন্ত যে আপনাকে জিততেই হবে। সে বাস্তব জীবনে হোক বা ফুটবল মাঠে।
জগদ্বিখ্যাত রাশান ঔপন্যাসিক লেভ তলস্তয়ের ‘যুদ্ধ ও শান্তি’র মতো মহৎ সাহিত্যকর্ম খুব কমই আছে। উনিশ শতকের শুরুতে নেপোলিয়নের রাশিয়া আক্রমণের ওপর লেখা এই উপন্যাস যেন মানব ইতিহাসেরই এক দলিলপত্র। যদি বলা হয় ফুটবলের ইতিহাস? তাতেও আসবে যুদ্ধের ভয়াবহতা। মাঠ যেন এক রণক্ষেত্র, আর দুই পক্ষের ২২ জন খেলোয়াড় একেকজন ঢাল-তলোয়ারহীন সৈনিক। ফুটবলকে কেন্দ্র করে দর্শক-সমর্থকদের মধ্যে মারামারিও নতুন নয়। যুদ্ধের কারণে ফুটবল বন্ধ থাকারও নজির আছে।
দোরগোড়ায় এখন আরেকটি ফুটবল বিশ্বকাপ। ২০ নভেম্বর থেকে কাতারে শুরু হচ্ছে বিশ্বের ৩২ দেশের যুদ্ধ। মরুর বুক থেকে কে বিজয়ী বেশে ফিরবে, তা নিয়ে এখন চায়ের কাপে ঝড়। তবে এক মাসের ফুটবল-জ্বরে পড়ার আগে একটু অতীত থেকে ঘুরে আসা যাক। ১৯৩০ সালে উরুগুয়ের মাটিতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় বিশ্বকাপ। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে চার বছর পরপর হওয়া বিশ্বকাপ বন্ধ ছিল দুই আসর।
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ সালে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) সশস্ত্র বাহিনীর সংগঠিত ফুটবল ছাড়া মাঠে সব ফুটবল বন্ধের ঘোষণা দেয়। যা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সম্পূর্ণ বিপরীত। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রথম বছরেও পেশাদারি ফুটবল চালু ছিল। কিন্তু ১৯৩৯ সালে বিমান হামলার ভয়ে মাঠে ফুটবল নিয়ে নামাটাই অসম্ভব হয়ে ওঠে। ভয়টা অমূলক নয়। জীবনের ভয়ে মানুষ যেখানে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছিল, ওই সময় কে ফুটবল দেখতে আসত স্টেডিয়ামে! এর মধ্যে ফুটবল ছেড়ে সৈনিক বেশে খেলোয়াড়দেরও যুদ্ধে যেতে হয়েছিল। বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মাঠ। এর স্মৃতি বহন করে আছে আর্সেনালের হাইবেরি গ্রাউন্ড।
পেশাদারি ও আন্তর্জাতিক ফুটবল বন্ধ থাকলেও ১৫ লাখ ব্রিটিশ সৈনিক যুদ্ধের ভয়াবহতা ভুলতে চিত্তবিনোদনের জন্য বেছে নিয়েছিল ফুটবলকে। আর যুদ্ধবন্দীরা কী করত? নিকট দূরত্বে দাঁড়িয়ে থেকে তারাও বেছে নিয়েছিল ফুটবলকে। এরপর যুদ্ধ শেষ হলে পৃথিবীকে আবার নতুনভাবে সাজাতে, যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল ফান্ড গড়তে। ১৯৪৩ সালের মে মাসে নেভি ওয়েলফেয়ার লিগে চেলসির তেমন এক ম্যাচে দর্শক সমাগম হয়েছিল ৫৫ হাজার।
বিংশ শতাব্দীতে দুটি বিশ্বযুদ্ধ দেখেছে মানুষ। একবিংশ শতাব্দীতেও থেমে নেই যুদ্ধ। পৃথিবীর কোনো না কোনো প্রান্তে অস্ত্র-গোলাবারুদ তৈরি আছে নিশ্বাসটুকু কেড়ে নিতে। বিশ্বকাপ দেখতে যখন সবার চোখ থাকবে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে, তখন পূর্ব ইউরোপের মানুষের ঘুম ভাঙবে বোমার শব্দে। প্রায় ৯ মাস হতে চলল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। এবারের বিশ্বকাপে দুটি দেশই নেই। অথচ ২০১৮ বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল রাশিয়া। কিন্তু এবার তারা বাছাইপর্ব পেরোতে পারেনি। ইউক্রেনে হামলার জেরে সব ধরনের ফুটবল সংস্থা থেকেও নিষিদ্ধ করা হয় ভ্লাদিমির পুতিনের দেশকে। কাতারে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও বাছাইয়ের প্লে-অফে ইউক্রেনীয়দের স্বপ্ন কেড়ে নেয় ওয়েলস। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন খেলতে পারেনি ঘরের মাঠে। একই কারণে দেশটির ক্লাব শাখতার দোনেৎস্ক চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলেছে নিরপেক্ষ মাঠে।
যুদ্ধের ভয়াবহতা কেমন তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। ফুটবল বিশ্বে পরিচিত মুখ বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার এডিন জেকো। খেলেন ইন্টার মিলানে। তাঁর মুখ থেকে শুনুন, যুদ্ধের ভেতর কেমন কেটেছিল তাঁর শৈশব—‘ছোটবেলায় আমার মা আমার জীবন বাঁচিয়েছিলেন। বসনিয়ায় তিনি আমাকে আমার বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে যেতে দিতেন না। একবার খেলার সময় বোমা বিস্ফোরিত হয় আর আমার বন্ধু মারা যায়। যুদ্ধের কারণে আমার কোনো শৈশব ছিল না, তবে এসবই আমাকে শক্তিশালী করেছে।’ বসনিয়া যুদ্ধের নির্মমতা হয়তো এখনো ভুলতে পারেননি জেকো।
ফুটবলের কারণে দুই দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধও হয়েছে অনেক। ১৯৬৯ সালে দুই মধ্য আমেরিকান প্রতিবেশি দেশ এল সালভাদর ও হন্ডুরাসের যুদ্ধ তো এখন বিশ্বে ‘ফুটবল যুদ্ধ’ হিসেবেই পরিচিত। দুই দেশের জাতীয় সমস্যা শেষ পর্যন্ত রূপ নিয়েছিল ফুটবল মাঠে। তবে দিদিয়ের দ্রগবাকে দেখি একেবারে ভিন্ন রূপে। ফুটবল ইমেজ ব্যবহার করে আইভরি কোস্টের গৃহযুদ্ধ থামিয়েছিলেন তিনি।
যুদ্ধের কারণে ফুটবলের কম ক্ষতি হয়নি। তবে যুদ্ধের সঙ্গে আদৌ কি ফুটবলের সম্পৃক্ততা আছে? প্রাচীন রণবিদ সানজুর যে যুদ্ধনীতি ও কৌশল, ফুটবল মাঠেও ব্যবহার হতে দেখা যায়। কেননা, শেষ পর্যন্ত যে আপনাকে জিততেই হবে। সে বাস্তব জীবনে হোক বা ফুটবল মাঠে।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫