Ajker Patrika

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ১১ জুন ২০২২, ০৯: ২৫
সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে উদ্ধারকাজ শেষে চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে নিজস্ব কর্মী দিয়ে পুড়ে যাওয়া কনটেইনারগুলো সরিয়ে নিতে শুরু করে ডিপো কর্তৃপক্ষ। যত্রতত্র পড়ে থাকা পুড়ে যাওয়া পণ্য এক জায়গায় স্তূপ করা হচ্ছে।

বিএম কনটেইনার ডিপোর ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, বৃহস্পতিবার উদ্ধারকাজ শেষ করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা চলে যান। শুক্রবার সকাল থেকে তাঁদের কর্মীরা ক্রেন, এক্সকাভেটর ও বুলডোজার দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করেছেন। এখনো কিছু কিছু কনটেইনারের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সেগুলোতে পানি ছিটাচ্ছেন কর্মীরা।

এদিকে শুক্রবার সকালে বিএম ডিপো পরিদর্শন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) পৃথক তিনটি দল। পরিদর্শনকালে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা ও আলামত সংগ্রহ করেছে।

সিআইডি চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার মো. শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, তাঁরা বিএম ডিপোর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা তরল পদার্থ এবং পুড়ে যাওয়া বস্তুর পোড়া অংশের আলামত ও নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা সেগুলো পরীক্ষাগারে পাঠাবেন। তারপর সেখান থেকে আসা ফলাফলের ভিত্তিতে তদন্ত কার্যক্রম চালানো হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন শাখার পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বিএম ডিপোতে রাসায়নিক বিস্ফোরণ হয়েছে। আমাদের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখায় রেডিয়েশন হেজার্ড ও কেমিক্যাল হেজার্ড বিষয়ে কাজ করি। এখানে রাসায়নিক বিস্ফোরণে কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে এখানে এসেছি। এ ছাড়া স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়া রোগীরা চমেকে কীভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে, তা-ও দেখব। পরিদর্শন শেষে যে অভিজ্ঞতা পাব, পরে এ ধরনের ঘটনায় যেন স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো যায়, সে বিষয়ে কাজ করব।’

এদিকে আগুন নেভানো শেষে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ফিরে গেলেও ডিপোতে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন শিকদার।

এদিকে উদ্ধারকারী দলগুলো ফিরে গেলেও বিএম ডিপোর বেশ কিছু কনটেইনার থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এতে বৃহস্পতিবার রাতভর আতঙ্কে ছিল স্থানীয় বাসিন্দারা। কনটেইনারের ভেতর থেকে বের হওয়া ধোঁয়া দেখে আবারও বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে কি না, তা নিয়ে চোখেমুখে চিন্তার ছাপ স্থানীয়দের।

ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন শিকদার বলেন, ডিপোতে এখনো স্তূপ করা প্রায় ২০টি কনটেইনার রয়েছে। এসব কনটেইনারের ভেতরে রয়েছে পোশাকপণ্য। এসব পণ্য থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। কিন্তু এ ধোঁয়া থেকে কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেই। ডিপো কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ ধোঁয়া নেভাতে পারবে। এতে বড় ধরনের কোনো বেগ পেতে হবে না।

সহকারী পরিচালক আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে ডিপোর সার্বিক বিষয় আমাদের মহাপরিচালক স্যার জানতে চেয়েছিলেন। তাঁকে সর্বশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে অবগত করলে কার্যক্রম শেষ করার অনুমতি প্রদানের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের সব কটি ইউনিটকে ফিরে আসার অনুমতি দেন তিনি। তাঁর অনুমতি পেয়ে আমাদের সব কটি ইউনিট দুপুরের পর ডিপো থেকে ফিরে গেছে।’

সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম দুলাল বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিপোর আগুন নেভানোর এবং ড্যাম্পিংয়ের কাজ প্রায় শেষের পথে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর অগ্নিনির্বাপণ কাজ সমাপ্তি ঘোষণার অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর বেলা ২টার পর ফায়ার সার্ভিসের সব কটি ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে ফিরে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত