Ajker Patrika

বৃষ্টি হলেই খানাখন্দের সড়কে বাড়ে ভোগান্তি

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
বৃষ্টি হলেই খানাখন্দের সড়কে বাড়ে ভোগান্তি

ময়মনসিংহ নগরীর খানাখন্দ সড়কে ভোগান্তি বাড়িয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে এসব স্থানে কাদা জমায় হেঁটে চলাও কষ্টকর। দীর্ঘদিন ধরে এসব রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, চলমান উন্নয়নকাজ শেষ হলে মানুষ এর সুফল পাবে।

জানা গেছে, প্রাচীনতম শহর ময়মনসিংহ। এই নগরী বিভাগে রূপান্তরিত হওয়ার পর চাপ বাড়ছে মানুষের। মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি রাস্তাঘাট। শহরের সরু রাস্তায় যানজট যেন মানুষের নিত্যসঙ্গী। শহরের মধ্যে যে কয়টি রাস্তা রয়েছে, সব কটিতে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ।

 সামান্য বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে পানি জমে বেড়ে যায় ভোগান্তি। খানাখন্দের কারণে ইজিবাইক এবং ব্যাটারিচালিত রিকশায়ও চলা কষ্টসাধ্য। এসব কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। নগরবাসীর বেশি ভোগান্তি হচ্ছে বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পেছন থেকে স্বদেশ হাসপাতাল পর্যন্ত রাস্তাটিতে এবং ব্রাহ্মপল্লী থেকে বাঘমারা সড়কে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পেছনের রাস্তাটি সাধারণ মানুষ ও যানবাহন চলাচলের জন্য অন্যতম পথ। কয়েক বছর ধরে রাস্তাটিতে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় খুব দুর্ভোগ হচ্ছে। আমরা চাই অচিরেই রাস্তাটি মেরামত করা হোক।’

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আরাফাত বলেন, ‘মানুষের স্বচ্ছন্দে চলাচলের জন্য এ রাস্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে বড় সমস্যা হলো, সামান্য একটু বৃষ্টি হলে রাস্তায় হাঁটুপানি জমে। চলাচলের কোনো ব্যবস্থা তখন আর থাকে না। আমরা তখন স্কুলে যাই রেললাইনের ওপর দিয়ে। পানি কমে গেলেও খানাখন্দের মধ্যে জমে থাকা পানিতে দুর্গন্ধ এবং ময়লায় আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হয়ে পড়ে।’

রিকশাচালক সুরুজ আলী বলেন, ‘একরকম বাধ্য হয়ে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। ঝাঁকিতে কোমরে ব্যথা হয়ে গেছে। রিকশার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। যাত্রীরাও মাঝেমধ্যে উল্টে পড়ে গিয়ে আহত হয়।’

আরেক রিকশাচালক হাকিম উল্লাহ বলেন, ‘ব্রাহ্মপল্লী মোড়ের ২০০ মিটার রাস্তার খানাখন্দের জন্য সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে। ’
এখানকার স্থানীয় দোকানি আরিফ রব্বানী বলেন, ‘রাস্তাটা শুকনা থাকলে ধুলাবালু দোকানে আসে। আর বৃষ্টি হলে পানি জমে। এতে যানবাহন চলাচলের সময় গর্তের মধ্যে চাকা পড়ে পানি দোকানে ঢোকে। চার মাস ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য নেই বললেই চলে। রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করে আমাদের ভোগান্তি দূর করবে সিটি করপোরেশন, এটাই প্রত্যাশা করছি।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, ‘একটি রাস্তা সংস্কার করলে কমপক্ষে ৪-৫ বছর যাওয়ার কথা। কিন্তু সিটি করপোরেশনের রাস্তা বছরে দুবার সংস্কার করতে হয়। এখানে রাস্তা সংস্কারের নামে লুটপাটের রাজ্য গড়ে তোলা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে জনভোগান্তি লাঘবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে লুটপাট ছাড়া কিছুই হচ্ছে না। এসব বিষয়ে তদারকি বাড়িয়ে সিটি করপোরেশনকে জবাবদিহির মধ্যে আনা প্রয়োজন।’

১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামাল খান বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে ব্রাহ্মপল্লীর রাস্তাসহ বেশ কয়েকটি রাস্তা সংস্কারে টেন্ডার হয়েছে অনেক দিন আগেই। কিন্তু রড-সিমেন্টের দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ শুরু না করায় ভোগান্তি কমছে না।’

এখানে রাস্তা সংস্কারের নামে লুটপাটের রাজ্য গড়ে তোলা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে জনভোগান্তি লাঘবে। কিন্তু আসলে প্রকৃতপক্ষে লুটপাট ছাড়া কিছুই হচ্ছে না। 

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। সরকারের বিশেষ বরাদ্দের ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতা, যানজট এবং রাস্তায় যে ভোগান্তি রয়েছে, তা দূর হবে; বিশেষ করে সাড়ে ১০ কোটি টাকার প্যাকেজের ব্রাহ্মপল্লীর সড়ক সংস্কার এবং ২০ কোটি টাকার প্যাকেজে বিদ্যাময়ীর পেছনের রাস্তাটি সংস্কার হবে। অচিরেই কাজ শুরু করা হবে। ’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত