Ajker Patrika

সড়ক সংস্কারে অনিয়ম

সম্পাদকীয়
সড়ক সংস্কারে অনিয়ম

আমাদের দেশে যে গ্রাম ও শহর মিলিয়ে সড়কব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, সেটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বইয়ে পড়া সেই গ্রাম্য মেঠোপথ আর সেভাবে দেখা যায়না।

শহর থেকে যেকোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে সহজে এখন যাওয়া যায়। কারণ দেশের অধিকাংশ এলাকার গ্রামীণ কাঁচা সড়ক ‘পাকা সড়কে’ পরিণত হয়েছে। এত উন্নয়নের পরেও মাঝেমধ্যে কিছু সংবাদ আমাদের ধন্দে ফেলে দেয়। ঘটনাগুলো মেনে নেওয়ার মতো মনে হয় না।

আবার মেনে না নিয়েও কোনো উপায় থাকে না। যেমন সেতু আছে কিন্তু দুই পাশে সংযোগ সড়ক নেই। আবার সড়ক আছে কিন্তু সেতু নেই। তখন মনে হয় এত উন্নয়ন তাহলে কোথায় হলো? এ রকম বাস্তবতায় বলতে বাধ্য হতে হয়, অদ্ভুত এ দেশের অদ্ভুত সব কাণ্ডকারখানা!

এখন কয়েক সেকেন্ড বা মিনিটে ইন্টারনেটের সুবাদে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়, কিন্তু সড়ক থাকার পরেও স্বাভাবিকভাবে চলাচল করা যায় না। সড়কে চলাচল করতে ভোগান্তির শেষ নেই। বিশাল ব্যয়ে সড়ক নির্মাণের পর তা আবার অনেক সময় ব্যবহার উপযোগী থাকে না। কাজ শেষের পরেই উঠে যায় সড়কের কার্পেটিং। এ রকম একটা তাজ্জব করা খবর আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে রোববার।

‘দুই সপ্তাহ না যেতেই নষ্ট ৪ কোটি টাকার সড়ক’ শিরোনামের খবর থেকে জানা যায়, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতু সার্ভিস এরিয়া-২ থেকে পূর্ব নাওডোবা গণির মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি টাকা। আর সড়কটি সংস্কার করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। তবে কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই উঠে গেছে কার্পেটিং।

এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই সড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীদের। সড়কটি সংস্কারের দায়িত্ব পেয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদ ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড। কিন্তু মূল কোম্পানি কাজ না করে এর দায়িত্ব দেয় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে!

আসলে এ দায় কার? এ প্রশ্নটা আসা স্বাভাবিক। কিন্তু সড়ক সংস্কারের কাজ তদারকি করার দায়িত্ব যাদের, সেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ কী করে? সঠিক তদারকির অভাবে যে সড়কটির কাজ ঠিকভাবে হয়নি, এ ঘটনায় সেটা স্পষ্ট।

দীর্ঘদিন ধরে সড়ক সংস্কারের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন না করে দেশে যে লুটের সংস্কৃতি চালু হয়েছে, এর অবসান হওয়া জরুরি।অভিযোগ রয়েছে, সড়ক ও জনপথের অধিকাংশ প্রকল্প প্রণয়নই করা হয় অর্থ লোপাটের কথা চিন্তা করে। কে কত বেশি কমিশন দেবে, এর ভিত্তিতেই নাকি কার্যাদেশ বণ্টন করা হয়।

এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে সড়ক প্রকল্পের কাজের মান ভালো হবে কীভাবে? সড়কটি সংস্কার ও তদারকির দায়িত্বে যারা ছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দুর্নীতির মূলোৎপাটন করা না গেলে কোনো পদক্ষেপেই কাজ হবে না। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কঠোর হবে, এটাই আমাদের চাওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

খামেনি কোথায়, কেমন আছেন—উৎকণ্ঠিত ইরানিদের প্রশ্নের বন্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত