Ajker Patrika

রেমিট্যান্সে ভাটার টান চলছেই

রেমিট্যান্সে ভাটার টান চলছেই

ডলারের জন্য ব্যাংকে হাহাকার চলছে। ব্যাংকে পর্যাপ্ত ডলার না থাকায় ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানির ঋণপত্র খুলতে পারছেন না। এর মধ্যেও রেমিট্যান্সে ভাটার টান অব্যাহত রয়েছে। নভেম্বর মাসের প্রথম ১১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ৬৬ কোটি ডলারের মতো, যা আগের মাসের এই সময়ের চেয়ে ১১ কোটি ডলার কম। পরিস্থিতির অবনতি হলে সামনের দিনগুলোতে রেমিট্যান্স আরও কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। ডলার সংকটের সময়ে বৈধ চ্যানেলে কাঙ্ক্ষিত দর পাচ্ছেন না প্রবাসীরা। তাই অনেক প্রবাসী বাড়তি লাভের আশায় হুন্ডির আশ্রয় নিচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ডলারের মজুত বাড়াতে যেকোনো মূল্যে রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকে সরকারকে মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি হওয়ায় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এর দায় শোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে এসেছে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে। তাও আবার নিট হিসাবে কমে ঠেকেছে ২৬ বিলিয়ন ডলারে। এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ স্বাভাবিক থাকলে রিজার্ভ ধরে রাখার সুযোগ ছিল। কিন্তু ওই দুটি প্রধান খাতেও গত কয়েক মাসে ভাটার টান চলছে। রপ্তানির ধারা নেতিবাচক। তবে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, যা গত মাসের একই সময়ের চেয়ে ১১ কোটি ১৩ লাখ ডলার কম। অক্টোবরের প্রথম দুই সপ্তাহে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ৭৬ কোটি ৯৮ লাখ ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। এরপরে আর এই ধারা অব্যাহত থাকেনি। সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স আসে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার এবং অক্টোবরে আসে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরের প্রথম ১১ দিনে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১২ কোটি ১২ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার, বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে ২ লাখ ডলার আর বিশেষায়িত এক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১ কোটি ২৩ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি মাসের বাকি ১৯ দিনে এই হারে রেমিট্যান্স এলে সেপ্টেম্বর, অক্টোবরের মতো নভেম্বর মাসেও দেড় বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি রেমিট্যান্স আসবে। গত বছরের নভেম্বর মাসে ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

জানা যায়, বহু আলোচনা ও বিতর্কের পরও মুদ্রার বিনিময় হার এখনও বাজারের ওপরে ছেড়ে দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে বাজারে একাধিক হার চলছে। খোলা বাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দর এখন ১১২ টাকা। ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে ১০৭ টাকা পাওয়া যায়। তার সঙ্গে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা যোগ হয়ে পাওয়া যায় ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে ১১৩ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছেন প্রবাসীরা। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা যেখানে বেশি পাচ্ছেন, সেই মাধ্যমকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ভালোই ছিলাম। হঠাৎ করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের ঢেউ এখানে এসে পড়েছে। এখানে ডলারসংকট মারাত্মক রূপ নিচ্ছে। জ্বালানি তেলের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। শিল্পে জ্বালানি সরবরাহ বাড়াতেই হবে। এ জন্য ডলার লাগবে।

তাই রেমিট্যান্সের ওপরে সরকারকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত