Ajker Patrika

সরকারি জায়গা দখল

সম্পাদকীয়
সরকারি জায়গা দখল

সরকারি জায়গাকে নিজের জায়গা মনে করার রোগ আজকের নয়। যখনই কোনো প্রভাবশালী মহল সরকারি জায়গায় নির্মাণকাজ চালায়, তখন বুঝতে হবে প্রশাসন সেখানে চুপ করে থাকতে বাধ্য হয়। ঘটনাগুলো খুব একটা জানাজানিও হয় না। যাঁরা কিছুটা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন, নানাভাবে তাঁদের মুখ বন্ধ রাখা হয়। তাই আজকের পত্রিকার সিলেট সংস্করণে জৈন্তাপুর উপজেলায় সরকারি জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে—এই সংবাদে অবাক হওয়ার মতো কিছু নেই।

জৈন্তাপুরের দখল করে নেওয়া ওই সরকারি জায়গার মূল্য বর্তমান বাজারদরে ২ কোটি টাকার বেশি। সুতরাং জায়গাটির ওপর প্রভাবশালী কারও নজর পড়তেই পারে। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম আরজু মিয়া। তিনি বলছেন, ৬০-৭০ বছর ধরে এই জমি তাঁরা ভোগ করে আসছেন। কীভাবে ভোগ করে আসছেন সরকারি জায়গা, তা নিয়ে প্রতিবেদনে কোনো ইঙ্গিত যদিও নেই, তারপরও বলা চলে, নিশ্চয়ই তাঁদের এতটাই ক্ষমতা আছে, যার মাধ্যমে তাঁরা সরকারি জমি দখল করে অনায়াসে ‘করে’ খেতে পারছেন।

যেসব কারণে এই প্রভাবশালীরা তাদের দখলদারি বজায় রাখতে পারে, তার একটি হলো প্রশাসনের নির্লিপ্ততা। কী কারণে প্রশাসন এসব ব্যাপারে মোকাবিলা করতে গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়, তার রহস্য উদ্ঘাটন করা কঠিন। সরকারি খতিয়ানভুক্ত এই জমি উদ্ধারের জন্য যখন ইউনিয়ন ভূমি অফিস দুই দফা চিঠি দিয়েছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন নির্বিকার থেকেছে, তখন তো প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই নির্বিকারত্বের কারণ কী? সার্ভেয়ার দিয়েও তিন দফা সরকারি জায়গা চিহ্নিত হয়েছে, কিন্তু তাতে লাভ কী হলো?

এ রকম অবস্থায় ত্রিপল দিয়ে আড়াল করে সড়কের পাশের জমিতে চলছে মার্কেট নির্মাণের কাজ। ছোট্ট একটি জায়গায় এত বড় অপরাধ ঘটছে অথচ প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে, এটা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। শুধু লজ্জার বিষয় নয়, এটা কর্তব্যের অবহেলাও বটে। শঙ্কার ব্যাপার হলো, খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত সরকারি জায়গা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন অনুমতি দিলেই চলতে পারে এই উচ্ছেদের কাজ।

অদ্ভুত আমাদের দেশ। প্রমাণিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রেও দেখা যায় বিলম্ব। কাজগুলো হয় শম্বুকগতিতে। আর দখলদার যদি নিজের প্রভাব খাটিয়ে পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে নিয়ে যেতে পারে, তাহলে ‘আম ও ছালা’ দুটোই গায়েব হয়ে যায়। জৈন্তাপুরের দুই কোটি টাকার এই জমি দখলদার আরজু মিয়ার হাত থেকে কীভাবে উদ্ধার করবে, তা নিয়ে তো পদক্ষেপ নিতে হবে প্রশাসনের। একজন মানুষ প্রভাবশালী হওয়ার অর্থ প্রশাসনে, স্থানীয় রাজনীতিতে তার প্রভাব আছে। কিন্তু প্রশাসনের সেই শক্তি থাকতে হবে, যেন সরকারি জমি কারও ভোগদখলে না চলে যায়।

এ রকমভাবে সরকারি বহু জমি বেদখল হয়ে গেছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া এখন সবচেয়ে জরুরি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

ডাকসু প্রার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের হুমকি, সমালোচনার ঝড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত