Ajker Patrika

কফি চাষে বিপুল সম্ভাবনা

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১: ৫১
কফি চাষে বিপুল সম্ভাবনা

নীলফামারীতে কফি চাষাবাদ বেড়েছে। চলতি বছর জেলায় ৬০ বিঘা জমিতে রোবাস্টা জাতের কফির বাগান গড়ে উঠেছে। কফির এ জাতটি এখানকার আবহাওয়া উপযোগী। এতে জেলায় কফি চাষের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। তাই স্থানীয় কৃষি বিভাগ চাষিদের মধ্যে কফির চারা বিনা মূল্যে বিতরণ করেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে, কফি চাষের জন্য প্রয়োজন উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া এবং মাঝারি বৃষ্টিপাত। এ অঞ্চলের আবহাওয়া কফি চাষের উপযোগী। এখানকার কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া কফিগাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

তবে ফল পাকার জন্য শুষ্ক আবহাওয়া দরকার। মৃদু অম্লধর্মী মাটি ও লৌহ, পটাশ, নাইট্রোজেন ও জৈবিক উপাদানসমৃদ্ধ লালচে দোঁআশ মাটি কফি চাষের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, যা এখানে রয়েছে। মাটির শ্রেণি উঁচু ও পানি নিষ্কাশিত হওয়া কফি চাষের জন্য আদর্শ।

জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মুন্সিপাড়া গ্রামের কফিচাষি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘২০০৯ সালে কক্সবাজার থেকে ১৫০টি অ্যারাবিকা জাতের কফির চারা কিনে ৪ শতাংশ জমিতে প্রথম চাষ শুরু করি। তিন বছরের মাথায় ফলন আসে। এরপর নিজেই চারা প্রস্তুত ও বিক্রিতে মন দিই। এখন প্রতিবছর শুধু কফির চারা বিক্রি করে ৫-৬ লাখ টাকা আয় করি।’

একই উপজেলার পুঁটিমারী ইউনিয়নের কাছারীপাড়া গ্রামের সুলতান আলী মাস্টার বলেন, ‘৮ বছর আগে বাড়ির সামনে পতিত ৮ শতাংশ জমিতে কফি চাষ শুরু করি। বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় এক বিঘা জমির ওপর কফি চাষ করেছি।’

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘কফির চারা রোপণের দুই বছরের মাথায় ফল আসা শুরু হয়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ফুল আসা শুরু হয় আর নভেম্বর-ডিসেম্বরে ফল সংগ্রহ করা যায়।’

তুষার কান্তি রায় আরও বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় প্রতি গাছে ২ কেজির মতো ফল আসে। পরে তা শুকিয়ে ৩০০ গ্রামের মতো পাওয়া যায়। ফল সংগ্রহের পর কফির বিনগুলো রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে তাৎক্ষণিকভাবে কফি প্রস্তুত করা যায়।’

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, কফি পাহাড়ি অঞ্চলে ভালো হলেও জেলার কৃষকেরা সমতল ভূমিতে এর চাষ করে সাফল্য দেখিয়েছেন। ভবিষ্যতে কফি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলার মাধ্যমে কফি চাষের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষকদের কফি বিষয়ে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেওয়া গেলে এ অঞ্চলে কফি চাষের এক বিরাট সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। ফলে দেশে কফির আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত