Ajker Patrika

মুক্তবাণিজ্য চুক্তির রোডম্যাপ চান ব্যবসায়ীরা

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৩, ০৯: ১৮
মুক্তবাণিজ্য চুক্তির রোডম্যাপ চান ব্যবসায়ীরা

জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের নাম। বিষয়টি গৌরবের হলেও অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশ। এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির রোডম্যাপ চান দেশের ব্যবসায়ীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে পাঠানো ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) রাজস্ববিষয়ক বাজেট প্রস্তাবনায় এ দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেশ কিছু পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনটি।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে যেসব দেশ তুলনামূলক দুর্বল, সেসব দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সাল নাগাদ জাতিসংঘের এই তালিকা থেকে বের হয়ে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হবে বাংলাদেশ। এর ফলে হারাবে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিভিন্ন রপ্তানি-সুবিধা। 
এলডিসি উত্তরণের পরেও বিশ্ববাজারে দেশি পণ্যের প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা (জিএসপি) এবং শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সহায়তা চান ব্যবসায়ীরা। তাই এসব সহায়ক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশভিত্তিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের রোডম্যাপ (পথনকশা) সক্রিয়ভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্যবসায় অঞ্চল ও দেশভিত্তিক এফটিএ (মুক্তবাণিজ্য চুক্তি) করার কথা বলেছি। আরও কিছু সুপারিশ রয়েছে।’

রপ্তানি সম্প্রসারণের জন্য গন্তব্য দেশ এবং অঞ্চলগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিধিমালা সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়েছে এফবিসিসিআই। বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, কাস্টমস অথরিটি, কোয়ালিটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড বডিসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের জন্য দ্বিপক্ষীয় সক্রিয় কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। 
আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের প্রবেশ সহজীকরণের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উঠে এসেছে বাজেট প্রস্তাবনায়। বলা হয়েছে, দেশে উৎপাদিত পণ্যের মান (স্ট্যান্ডার্ড) ও বাণিজ্যিক বিধিবিধানকে আন্তর্জাতিক মান ও গন্তব্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বিশ্ববাজারে অন্য দেশের মতো সুযোগ বাংলাদেশকেও যাতে প্রদান করা হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়াও ভোক্তাদের পর্যায়ে পৌঁছে দিতে এবং বৈশ্বিক ই-কমার্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করে তুলতে এসএমই খাতের রপ্তানি পণ্যের জন্য ওয়্যারহাউস এবং বিতরণব্যবস্থা তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে।

বিদেশি মুদ্রার ব্যবহারে জটিলতা এবং বিনিময় হারের ওঠানামার অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে দক্ষ ও সাশ্রয়ী পারস্পরিক লেনদেনের সুবিধার্থে মুদ্রা বিনিময় বা কারেন্সি সোয়াপের পরামর্শ এসেছে এফবিসিসিআইয়ের ওই বাজেট প্রস্তাবনায়। এর জন্য ব্যবসায়ী সংগঠন বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেডিং পার্টনারদের সঙ্গে, বিশেষ করে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি), ব্যাংক অব রাশিয়া, ব্যাংক অব চায়নার সঙ্গে কৌশলগতভাবে ডলার, পাউন্ড, ইউরো, ইয়েন, রুবল ইত্যাদি মুদ্রা বিনিময় চুক্তির কথা বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত