Ajker Patrika

ইসিজি যন্ত্র চালান আয়া!

আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ০৮
ইসিজি যন্ত্র চালান আয়া!

কয়েক দিন আগের এক রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান কহিনুর বেগম নামে এক গৃহিণী। বুকে ব্যথায় নিশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছিল তাঁর। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে সমস্যার কথা জানালে চিকিৎসক তাঁকে ইসিজি করার কথা বলেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে বুকে ব্যথা নিয়েই হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে তিন তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে ইসিজি করাতে হয়েছে কহিনুর বেগমকে। সিঁড়ি বেয়ে তিন তলায় ওঠার সময় দম বন্ধ হয়ে আসছিল বলে জানান এই রোগী।

শুধু কহিনুর বেগম নন, বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসা সবাইকে ঝুঁকি নিয়ে তিন তলায় গিয়ে ইসিজি করাতে হয়। মনিরামপুর হাসপাতালের নিচ তলায় জরুরি বিভাগে এ যন্ত্রটি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় বুকে ব্যথা বা হৃদরোগীদের। শুধু তাই নয়, হাসপাতালটিতে যে ইসিজি যন্ত্রটি আছে সেটি চালানোর মতো কোনো টেকনিশিয়ানও নেই। আয়া দিয়েই চালানো হয় ইসিজি পরীক্ষা।

সূত্রে জানা গেয়ে, ৫০ শয্যার মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দোতলায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড। তিন তলায় রয়েছে পুরুষ ওয়ার্ড। দোতলায় ও তিন তলায় দুটি ইসিজি মেশিন থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ এ যন্ত্রটি নেই নিচ তলার জরুরি বিভাগে। দোতলায় থাকা ইসিজি মেশিনটি বিকল ৩ বছর। ফলে একমাত্র ইসিজি মেশিন দিয়ে চলছে হাসপাতাল।

কহিনুর বেগম বলেন, হাসপাতালে গিয়ে বুকের ব্যথা বললে আমাকে তিন তলায় গিয়ে ইসিজি করে আসতে বলেন চিকিৎসক। সেখানে একটি কেবিনে দুই আয়া আমার ইসিজি করিয়েছেন। আমার স্বামী দায়িত্বে থাকা নার্সদের ইসিজি করাতে বলেছেন। তিনি না এসে আয়াদের দায়িত্ব দিয়েছেন।

রোগী কোহিনুর বেগম বলেন, ‘বুকে ব্যথায় নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। ওই অবস্থায় হেঁটে তিন তলায় ওঠায় আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। জরুরি বিভাগে ইসিজি যন্ত্র থাকলে রোগীদের খুব উপকার হয়।’

হাসপাতালের দোতলার ইনচার্জ জ্যেষ্ঠ নার্স বন্দনা রানী বলেন, ‘একবার দেখিয়ে দিলে যে কেউ ইসিজি করতে পারেন। কিন্তু আয়াদের দিয়ে এ কাজ করানোর সময় ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্সদের থাকা উচিত।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. অনুপ বসু বলেন, ‘বুকে ব্যথার রোগীদের হাঁটাচলা করানো ঝুঁকিপূর্ণ। জরুরি বিভাগে ইসিজি যন্ত্র না থাকায় রোগীদের হার্টের অবস্থা জানতে ওপরে পাঠাতে হয়। জরুরি বিভাগে ইসিজি যন্ত্রের ব্যবস্থা করার জন্য ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ‘জরুরি বিভাগে ইসিজি যন্ত্র নেই। দোতলারটিও নষ্ট। কয়েকবার মেরামত করিয়েছি। বারবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ আরও বলেন, ‘সিভিল সার্জনের কাছে দুটি ইসিজি যন্ত্র চেয়ে কয়েকবার আবেদন করেছি। এখনো পাইনি। আপাতত জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে তিন তলার যন্ত্রটি জরুরি বিভাগে এনে কাজ চালানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত