Ajker Patrika

ঝুঁকি নিয়ে রেল সেতুতে চলাচল

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৪৫
ঝুঁকি নিয়ে রেল সেতুতে চলাচল

ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর রেল সেতু দিয়ে সাধারণ মানুষ অবাধে চলাচল করছেন। এতে প্রায় সময়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ছাড়া যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন। এ অবস্থায় মানুষের সতর্ক হওয়া ছাড়া এর সমাধান দেখছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ মহানগরীর বলাশপুর মরাখলা এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ট্রেন চলাচলের জন্য ১৯১৫ সালে নির্মাণ করা হয় রেল সেতু। ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি ২০১৫ সালে শত বছর পার করে। এখন বয়স হয়েছে ১০৬ বছর। নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার ট্রেনগুলো এই রেল সেতু অতিক্রম করে।

একই এলাকার হাফিজা আক্তার বলেন, তিনি শহরে মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করেন। ফেরি দিয়ে আসলে কাজের দেরি হয়ে যায়। তাই একটু ঝুঁকি থাকলেও রেল সেতু দিয়ে চলাচল করেন। তবে শীতের দিন একটু সমস্যা হয়। ট্রেন চোখে দেখা যায় না, হর্নও শোনা যায় না।

সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন ৮-১০টি ট্রেন ১৮ থেকে ২০ বার যাওয়া আসা করে। এ ছাড়া সহজে যাতায়াতের জন্য ৫-৬ গ্রামের মানুষ সেতুটি ব্যবহার করে থাকে। এতে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে অনেককে। তবুও অবাধে যাতায়াত কমছে না।

চর গোবদিয়া গ্রামের মো. রনি বলেন, ‘অনেক সময় ফেরির জন্য বসে থাকতে হয়। কিন্তু রেল সেতুর ওপর দিয়ে আসলে দ্রুত কর্মস্থলে পৌঁছা যায়। সে জন্য অনেকেই সেতু ব্যবহার করে থাকে। তবে চলাচলে আমাদের খুব একটা সমস্যা হয় না। যারা নতুন সেতুর ওপর ওঠে, তাদের ক্ষেত্রেই সমস্যা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ অক্টোবর রেল সেতুর ওপর দিয়ে একজন হেঁটে যাওয়ার সময় আন্তনগর মোহণগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালক থামিয়ে তাঁর জীবন রক্ষা করেন। চলতি বছরে অন্তত পাঁচটি এমন ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় দুলাল উদ্দিন বলেন, তিন বছর আগে ১৬ বছরের এক কিশোর ট্রেনে কাঁটা পড়ে মারা যায়। এটা আমার দেখা বড় দুর্ঘটনা। মানুষ সহজেই পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এ ছাড়া কিছুদিন আগে ট্রেনে ধাক্কা লেগে একজন আহত হন।

মো. সবুজ মিয়া বলেন, ‘গোবদিয়া, নিলক্ষীয়া, আকতাপাড়া, কালিবাড়ি চর এলাকার লোকজন সকাল-সন্ধ্যা যাতায়াত করে। ট্রেন আসলেও মাঝে দাঁড়ানোর জায়গা রয়েছে। যারা সাহসী তাদের চলাচলে সমস্যা হয় না। কিন্তু প্রথম প্রথম কেউ উঠলে তাদের সমস্যা হয়।’

ময়মনসিংহ রেল বিভাগের প্রকৌশলী শাখার সহকারী প্রকৌশলী নারায়ন সরকার প্রসাদ বলেন, ‘রেল সেতুর ওপর দিয়ে মানুষের চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এখানে দুর্ঘটনা ঘটলে কেউ দায়িত্ব না। সেতুর মাঝে ট্রলি রিফিউজিং রয়েছে। সেটি মানুষ দাঁড়ানোর জন্য তৈরি করা হয়নি। ব্রিটিশরা সেটি তৈরি করেছিল রেল কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য। যখন কোনো কাজে রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ট্রলি নিয়ে যাবে, তখন কোনো ট্রেন আসলে যেন দাঁড়াতে পারে।’

ময়মনসিংহ স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মানুষের চলাচলের জন্য রেললাইন তথা রেল সেতুতে ১৪৪ ধারা জারি থাকে সব সময়। লেখাও রয়েছে সেতু দিয়ে মানুষের চলাচল নিষিদ্ধ। তবুও মানুষ সতর্ক না হলে কিছু করার থাকে না।’

ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ওসি মামুনুর রহমান বলেন, ‘এখানে আইন প্রয়োগের কিছু নেই, মানুষকে সতর্ক হতে হবে। কখনো ট্রেন থামিয়ে আবার কখনো মানুষ দৌড়ে গিয়ে প্রাণে বাঁচে, আহত হয়। সে জন্য সবাইকে রেলওয়ের আইন মেনে চলতে হবে এবং রেল সেতুর ওপর দিয়ে একদম চলা যাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ধর্ষণে মেয়ে গর্ভবতী, বাবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত