Ajker Patrika

৩৫ বছর ধরে আলো ছড়াচ্ছেন মুনসুর

কালীগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ১৩
৩৫ বছর ধরে আলো ছড়াচ্ছেন মুনসুর

‘বই বিক্রির মধ্য আলাদা এক আনন্দ আছে। এসব বই পড়ে আজকের শিশুরা আগামীতে আলোকিত হয়ে উঠবে। সুশিক্ষিত হয়ে বাবা-মা ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।’

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন শিশুদের বইয়ের ফেরিওয়ালা ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মুনসুর আলী মল্লিক। তাঁর হাতে বাচ্চাদের রংবেরঙের বর্ণের, ছড়ার ও ছবির বই। ৩৫ বছর ধরে তিনি শিশুদের এসব বই ফেরি করে বিক্রি করে আসছেন। বই বিক্রির প্রতি আলাদা টান কাজ করায় পেশাও বদলাননি কখনো।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঐতিহ্যবাহী নাজিমগঞ্জ বাজারে কথা হয় মুনসুর আলীর সঙ্গে। তিনি উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের নাটুয়ারবেড় এলাকার বাসিন্দা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি বাবার অভাবের সংসারে মাত্র ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তখন সংসারের হাল ধরতে বিভিন্ন কাজকর্ম শুরু করেন। একপর্যায়ে নামমাত্র পুঁজি নিয়ে বইয়ের ব্যবসা শুরু করেন তিনি।

এভাবে পুরোদমে বইয়ের ফেরিওয়ালা হয়ে উঠেন তিনি। তবে ১২-১৩ বছর আগে হঠাৎ প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হন। পরে সুস্থ হলে পুনরায় আগের পেশায় ফিরে আসেন। এখনো শিশুদের ভালোবেসে বই বিক্রি করে যাচ্ছেন মুনসুর মল্লিক। এখন প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার টাকার মূল্যের ৫০টি বই নিয়ে হাট বাজারে বিক্রয় করেন। এতে তাঁর ৩০০-৩৫০ টাকা লাভ থাকে।

বর্তমানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মোটামুটিভাবে দিন কাটছে তার। বড় ছেলে ফেরিওয়ালা ও ছোট ছেলে শ্রমিক। আর একমাত্র মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

মুনসুর আলী মল্লিক বলেন, ‘সংসার চালানোর পাশাপাশি বই ও শিশুদের ভালোবাসি বলেই পথে পথে ঘুরি। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে আমি যতদিন বেঁচে থাকব এ কাজ করে যাব।’

তিনি আরও জানান, শিশুদের যেসব বইয়ের চাহিদা থাকে, সেসব বই তিনি সংগ্রহ করেন ঢাকা ও খুলনা থেকে। সেগুলো নিয়ে ছুটে চলেন গ্রামগঞ্জ ও হাটবাজারে।

বই ক্রেতা মেহেদি হাসান বলেন, ‘চাচার কাছে শিশুদের বইগুলো দেখে আমার খুব পছন্দ হয়েছে। তাই আমার সন্তানের জন্য একটি বই কিনলাম।’

নাজিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুজ্জামান রুমি বলেন, ‘বইয়ের ফেরিওয়ালা মুনসুর আলী মল্লিক অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা। বই বিক্রির পাশাপাশি নিঃসন্দেহে শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত