মাসুদ উর রহমান
এই ভরা মৌসুমে চালের দাম কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। চালে তো আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। ঘাটতি হলেও তো তা আগামী ফসল ওঠার কাছাকাছি সময়ে হবে। কিন্তু এখনই কেন মূল্য বৃদ্ধি? তবে কি বিশ্ববাজারের অস্থিরতা দেখে এখনই মজুতদারদের কারসাজি শুরু হয়ে গেছে?
একেবারে হতদরিদ্র শ্রেণির তাও একটা ভরসা আছে—টিসিবি। কিন্তু বাকিরা? দুই বছরের করোনার ধকল, তার ওপর জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে—কত দিন টিকে থাকতে পারবে আমাদের মধ্যবিত্তসহ স্বল্প আয়ের মানুষগুলো?
সব পণ্য তো আর আমদানিনির্ভর নয়। আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব অংশত সত্যি, কিন্তু বেশি সত্যি হচ্ছে অতিলোভী মুনাফাখোর ব্যবসায়ীর কারসাজি।
এই লেখা যখন লিখছি, তখন মুদিদোকানে বসা। প্রায় এক যুগ ধরে এই দোকান থেকে বাজার করি বলে দোকানি খাতির করে বসতে দিয়েছেন। একের পর এক ক্রেতা আসছেন আর রাগে গজগজ করতে করতে প্রয়োজনের অর্ধেক বা তার কম পণ্য কিনে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। একজনকে বলতে শুনলাম, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সংযমী হতে, কিন্তু কত সংযমী হব? সংযমী হতে হতে যে খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম।’
ভিড় কিছুটা কমতেই দোকানি আমাদের জন্য চা ফরমাশ করলেন। জিনিসপত্রের দাম নিয়ে টুকটাক আলোচনা শুরু হলো। দোকানি বললেন, ‘স্যার, আমরা কী করব? জায়গায় দাম বাড়িয়ে দিলে তো আর কিছু করার থাকে না।’
আরব আলী কথাটি টেনে নিয়ে বললেন, ‘তা ঠিক, তবে সব ক্ষেত্রে বা সবার ক্ষেত্রে না। ধরুন, এই মুহূর্তে টুপি, তসবিহর কোনো সংকট দেশে নেই বা কখনো হবেও না। কেননা এগুলো পুরোপুরি আমদানিনির্ভর পণ্য নয়। উচ্চাভিলাষী না হলে দেশের পণ্য দিয়েই ইবাদত-বন্দেগির কাজ ফিবছর চলে যাবে। কিন্তু যদি মিডিয়ায় কোনোভাবে গুজব রটানো যায় যে দুই দিন পর কেয়ামত, সঙ্গে সঙ্গে টুপি-তসবিহর সব দোকান ফাঁকা হয়ে যাবে। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দেবে। দুই-চার-পাঁচ এমনকি দশ গুণ! করোনার সময় দুই টাকার সার্জিক্যাল মাস্ক এক শ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। ব্যতিক্রম বাদ দিলে এই হচ্ছে আমাদের বর্তমান ব্যবসায়িক নীতি বা কৌশল।’
আমি বললাম, ‘অনেক সৎ, সফল ব্যবসায়ী এখনো সমাজে বিদ্যমান এবং এ সংখ্যাটাই বেশি। কিন্তু তাঁদের এই অসাধু চক্রটির সঙ্গে পেরে উঠতে না পারার নানাবিধ কারণের একটি যদি বলি রাজনৈতিক, তাহলে বোধ করি একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না।’
বলা হয়ে থাকে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির শুরুটা হয়েছে মহামারি করোনাকালে এবং বর্তমানে এর চলিত রূপ স্থায়ী হতে চলার নিয়ামক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ধরে নিচ্ছি দুটোই সত্যি এবং এর কোনোটির ওপরই আমাদের হাত নেই। একটি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত সংকট, অপরটি মনুষ্য সৃষ্টি।
কিন্তু তাই বলে আমাদের দেশে উৎপাদিত পণ্যে এবং যেগুলোতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেগুলোর দাম কেন বাড়বে? শুরুতেই বলেছি, চাল তো কোথাও থেকে উচ্চমূল্যে আমদানি করা হয়নি বা আগামী আট-দশ মাসের মধ্যে আমদানি করা অত্যাবশ্যক হবে না। যদি করে তা বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য বা দুর্যোগ মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এবং এটি প্রতিবছরই সরকার করে থাকে। শুধু কি চাল? দেশে উৎপাদিত লবণ, মাছ, মুরগি, সবজি, ডিম, মৌসুমি ফল, খাতা, কলম, পেনসিল, ওষুধপত্র, চা, তৈরি পোশাক—এগুলোর দামও তো পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছে। চিনি, তেল, পেঁয়াজ বাদই দিলাম। সবচেয়ে কম দামের একটি গোসলের সাবানের দাম ষাট টাকা!
‘না, আজ আর কিছু কিনব না’ বলে আরব আলী উঠে পড়লেন। দোকানি আমাকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘স্যার, আপনিও কিছু নেবেন না?’ আমতা-আমতা করে বললাম, ‘এমন কোনো পণ্য কি আছে, যার দাম বাড়েনি বা কিছুটা কমেছে? ভাবছি খুব প্রয়োজন না হলেও নেব।’
দোকানি: স্যার, জিনিসপত্রের দাম একবার বাড়লে আর কখনো কমে না। কমে শুধু মানুষের দাম!
এই ভরা মৌসুমে চালের দাম কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। চালে তো আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। ঘাটতি হলেও তো তা আগামী ফসল ওঠার কাছাকাছি সময়ে হবে। কিন্তু এখনই কেন মূল্য বৃদ্ধি? তবে কি বিশ্ববাজারের অস্থিরতা দেখে এখনই মজুতদারদের কারসাজি শুরু হয়ে গেছে?
একেবারে হতদরিদ্র শ্রেণির তাও একটা ভরসা আছে—টিসিবি। কিন্তু বাকিরা? দুই বছরের করোনার ধকল, তার ওপর জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে—কত দিন টিকে থাকতে পারবে আমাদের মধ্যবিত্তসহ স্বল্প আয়ের মানুষগুলো?
সব পণ্য তো আর আমদানিনির্ভর নয়। আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব অংশত সত্যি, কিন্তু বেশি সত্যি হচ্ছে অতিলোভী মুনাফাখোর ব্যবসায়ীর কারসাজি।
এই লেখা যখন লিখছি, তখন মুদিদোকানে বসা। প্রায় এক যুগ ধরে এই দোকান থেকে বাজার করি বলে দোকানি খাতির করে বসতে দিয়েছেন। একের পর এক ক্রেতা আসছেন আর রাগে গজগজ করতে করতে প্রয়োজনের অর্ধেক বা তার কম পণ্য কিনে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। একজনকে বলতে শুনলাম, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সংযমী হতে, কিন্তু কত সংযমী হব? সংযমী হতে হতে যে খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম।’
ভিড় কিছুটা কমতেই দোকানি আমাদের জন্য চা ফরমাশ করলেন। জিনিসপত্রের দাম নিয়ে টুকটাক আলোচনা শুরু হলো। দোকানি বললেন, ‘স্যার, আমরা কী করব? জায়গায় দাম বাড়িয়ে দিলে তো আর কিছু করার থাকে না।’
আরব আলী কথাটি টেনে নিয়ে বললেন, ‘তা ঠিক, তবে সব ক্ষেত্রে বা সবার ক্ষেত্রে না। ধরুন, এই মুহূর্তে টুপি, তসবিহর কোনো সংকট দেশে নেই বা কখনো হবেও না। কেননা এগুলো পুরোপুরি আমদানিনির্ভর পণ্য নয়। উচ্চাভিলাষী না হলে দেশের পণ্য দিয়েই ইবাদত-বন্দেগির কাজ ফিবছর চলে যাবে। কিন্তু যদি মিডিয়ায় কোনোভাবে গুজব রটানো যায় যে দুই দিন পর কেয়ামত, সঙ্গে সঙ্গে টুপি-তসবিহর সব দোকান ফাঁকা হয়ে যাবে। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দেবে। দুই-চার-পাঁচ এমনকি দশ গুণ! করোনার সময় দুই টাকার সার্জিক্যাল মাস্ক এক শ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। ব্যতিক্রম বাদ দিলে এই হচ্ছে আমাদের বর্তমান ব্যবসায়িক নীতি বা কৌশল।’
আমি বললাম, ‘অনেক সৎ, সফল ব্যবসায়ী এখনো সমাজে বিদ্যমান এবং এ সংখ্যাটাই বেশি। কিন্তু তাঁদের এই অসাধু চক্রটির সঙ্গে পেরে উঠতে না পারার নানাবিধ কারণের একটি যদি বলি রাজনৈতিক, তাহলে বোধ করি একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না।’
বলা হয়ে থাকে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির শুরুটা হয়েছে মহামারি করোনাকালে এবং বর্তমানে এর চলিত রূপ স্থায়ী হতে চলার নিয়ামক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ধরে নিচ্ছি দুটোই সত্যি এবং এর কোনোটির ওপরই আমাদের হাত নেই। একটি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত সংকট, অপরটি মনুষ্য সৃষ্টি।
কিন্তু তাই বলে আমাদের দেশে উৎপাদিত পণ্যে এবং যেগুলোতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেগুলোর দাম কেন বাড়বে? শুরুতেই বলেছি, চাল তো কোথাও থেকে উচ্চমূল্যে আমদানি করা হয়নি বা আগামী আট-দশ মাসের মধ্যে আমদানি করা অত্যাবশ্যক হবে না। যদি করে তা বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য বা দুর্যোগ মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এবং এটি প্রতিবছরই সরকার করে থাকে। শুধু কি চাল? দেশে উৎপাদিত লবণ, মাছ, মুরগি, সবজি, ডিম, মৌসুমি ফল, খাতা, কলম, পেনসিল, ওষুধপত্র, চা, তৈরি পোশাক—এগুলোর দামও তো পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছে। চিনি, তেল, পেঁয়াজ বাদই দিলাম। সবচেয়ে কম দামের একটি গোসলের সাবানের দাম ষাট টাকা!
‘না, আজ আর কিছু কিনব না’ বলে আরব আলী উঠে পড়লেন। দোকানি আমাকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘স্যার, আপনিও কিছু নেবেন না?’ আমতা-আমতা করে বললাম, ‘এমন কোনো পণ্য কি আছে, যার দাম বাড়েনি বা কিছুটা কমেছে? ভাবছি খুব প্রয়োজন না হলেও নেব।’
দোকানি: স্যার, জিনিসপত্রের দাম একবার বাড়লে আর কখনো কমে না। কমে শুধু মানুষের দাম!
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৩ ঘণ্টা আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৫ ঘণ্টা আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫