Ajker Patrika

পানির অভাবে বোনা আমন হলো গোখাদ্য

শাহীন রহমান, পাবনা 
পানির অভাবে বোনা আমন হলো গোখাদ্য

বিরূপ আবহাওয়া ও পানির অভাবে এ বছর বোনা আমন ধান আবাদে লোকসান গুনছেন চলনবিলের কৃষকেরা। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, আগাম বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তাঁরা এ ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। তাই কাঁচা বোনা আমন ধানের গাছ গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন তাঁরা। এতে বিঘাপ্রতি লোকসান গুনতে হচ্ছে অন্তত ১০ হাজার টাকা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলনবিল এলাকার অন্যতম ফসল ছিল বোনা আমন ধান। আজলদিঘা, ধলাদিঘা, বাঁশিরাজসহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করতেন তাঁরা।

পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ১০-১৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতো ধানগাছ। নিম্নাঞ্চলের কৃষকেরা এখনো এই ধান চাষের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিছু বিলের পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রিত হলেও, অধিকাংশ বিলের পানি ব্যবস্থাপনা প্রকৃতিনির্ভর। বর্ষার শুরুর দিকে বিলগুলোর সংযোগ খাল হয়ে বিলে পানি প্রবেশ করে। অনিয়ন্ত্রিত বিলগুলোতে কোনো কোনো বছর আমন ধানের চারা বড় হতে না হতেই পানি প্রবেশ করায় কচি চারা পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

আবার কোনো কোনো বছর বর্ষার শেষ ভাগে এসে অতিদ্রুত পানি নিষ্কাশিত হওয়ায় আমন ধান শুকনায় পড়ে যায়। তখন মারাত্মক ফলন বিপর্যয় ঘটে।

চলতি মৌসুমে বর্ষার শুরুতে নিম্নাঞ্চলের আমন ধানের কচি চাড়া পানিতে ডুবে নষ্ট হয়। আর উঁচু এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ না করায় শুকিয়ে ধানগাছ মরে যাচ্ছে। কেউ কেউ কাঁচা ধানগাছ কেটে ব্যবহার করছেন গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলনবিল এলাকায় হাজারো হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। চলতি মৌসুমে কেবল এই উপজেলায় বোনা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৯ হাজার ৩০০ হেক্টরে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ২০০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন চাষ বেশি হলেও বর্ষার শুরুতে হঠাৎ করে নিম্নাঞ্চলের বিলগুলোতে পানি প্রবেশ করায় নষ্ট হয় চারাগুলো। আবার উঁচু এলাকায় পানি না ওঠায় চাটমোহরের ২৫০ হেক্টর জমির কাঁচা ধানগাছ গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার চাটমোহর পৌরসভাসংলগ্ন বিলে গিয়ে দেখা গেছে, অনেকেই কাঁচা ধান কাটছেন। জবেরপুর গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, তিনি ১০ হাজার টাকায় দেড় বিঘা জমি ইজারা নিয়ে বোনা আমন ধান চাষ করেছিলেন। জমিতে এক ফোঁটা পানি নেই। ধান হবে না, তাই তিনি দেড় বিঘা জমির ধানগাছ মাত্র আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন গরুর খামারিদের কাছে। এতে তাঁর কমপক্ষে ১২ হাজার টাকা লোকসান যাবে।

কুমারগাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম জানান, দুই বিঘা জমিতে আজলদিঘা ধান বুনেছিলেন তিনি। সেগুলো নষ্ট হওয়ায় কেটে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, বোনা আমন ধান পানিনির্ভর। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অনেক জমির ধানগাছ শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। এ জমিগুলোতে সেচ দেওয়াও সম্ভব নয়। কেউ কেউ বোনা আমন ধানগাছ কেটে গবাদিপশুকে খাওয়াচ্ছেন। তবে নিয়ন্ত্রিত কিছু বিলে ভালো ধান হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত