Ajker Patrika

মেয়াদ ও সময় বাড়ানোর ফন্দি

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ০০
মেয়াদ ও সময় বাড়ানোর ফন্দি

নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না বান্দরবানের রোয়াংছড়ি-রুমা সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ। মেয়াদ শেষের আগেই অজুহাত দেখিয়ে সময় বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। সড়কের একটি অংশের ঠিকাদার কাজ শুরুর পর দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। তাঁর কারণেই নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার মানুষ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের (সিএইচটিডিবি) তত্ত্বাবধানে ২০ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮ কোটি টাকা। আগামী বছরের জুনে তা শেষ হওয়ার কথা।

অভিযোগ আছে, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে রডসহ অন্য নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে কাজ দেরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রকল্পের কাজ শেষ করার মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয়ও বাড়ানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে।

সিএইচটিডিবির বান্দরবান ইউনিটের কর্মকর্তার দাবি, ইতিমধ্যে কাজের ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে বাকি কাজ শেষ করতে ইতিমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ আগামী ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রোয়াংছড়ি-রুমা সংযোগ সড়কের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী ও বান্দরবানের সংসদ বীর বাহাদুর উশৈসিং। প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন সিএইচটিডিবির বান্দরবান ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. আবদুল আজিজ।

প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ, নালা (ড্রেন) ও কালভার্ট নির্মাণ এবং রাস্তা কার্পেটিং করা। রাস্তার ঠিকাদারি পান মো. কামাল উদ্দিন (লেস কামাল), নুরুল আফসারসহ তিনজন। তাঁদের মধ্যে ঠিকাদার নুরুল আফসারের অধীনে থাকা প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরুর কিছুদিন পরেই তা বন্ধ করে দেন।

সিএইচটিডিবির প্রকৌশল শাখা সূত্রে জানা গেছে, তিনজন ঠিকাদার প্রকল্পের কাজ পান। তবে ঠিকাদার নুরুল আফসারের অংশ প্রায় তিন কিলোমিটারের বেশির ভাগ কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি।

এদিকে অভিযোগ আছে, ঠিকাদার নুরুল আফসার কোনো কাজই যথাসময়ে শেষ করেন না। এ ছাড়া চলতি প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে যোগসাজশে প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর জন্যই কাজ শুরু করেনি।

জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক আবদুল আজিজ বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরে শুরু হওয়া সড়কের নির্মাণকাজ আগামী ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু রাস্তার কিছু অংশের ঠিকাদার নুরুল আফসার কাজ যথাসময়ে শুরু করতে পারেনি। ফলে কাজ শেষ হতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।’

জানতে চাইলে ঠিকাদার নুরুল আফসার বলেন, ‘রানিং বিল ঠিকমতো না পাওয়ায় নতুন করে সড়কের কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে।’

৩৪১ নম্বর পাইক্ষ্যং মৌজার কার্বারি মানিক খেয়াং বলেন, রোয়াংছড়ি ও রুমা পর্যটনের কয়েকটি কেন্দ্র রয়েছে। এসব স্থানে প্রতিবছর হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটে। রোয়াংছড়ি-রুমা সড়কটি হলে এর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে। কিন্তু নতুন সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার মানুষের দুর্ভোগ কমেনি।

রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল রোয়াংছড়ি-রুমা সড়ক। সড়কটি হলে কৃষিপণ্য সহজে বহন করা সহজ ও দ্রুত হবে।’

রোয়াংছড়ির বাসিন্দা থোয়াইনু অং মারমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রোয়াংছড়ি-রুমা সড়কটি হলে দুই উপজেলার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগে মানুষের অর্থ, সময় বেঁচে যাবে। এখন নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে শুনছি। তাহলে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুফল সাধারণ মানুষ পাবে কী করে?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরোনো রাউটার ফেলে না দিয়ে যে কাজে ব্যবহার করতে পারেন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত