Ajker Patrika

স্বেচ্ছাসেবীদের পাহারা রোহিঙ্গা শিবিরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ২৮
স্বেচ্ছাসেবীদের পাহারা রোহিঙ্গা শিবিরে

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড এবং ছয়জনকে হত্যার পর বদলে যায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চিত্র। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে সেখানে দিন কাটত সাধারণ রোহিঙ্গাদের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোর হলেও আশ্বস্ত করতে পারেননি তাদের। তাই এবার রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে স্বেচ্ছাসেবক যুক্ত করা হয়। হাতে লাঠি আর মুখে দেওয়া হয়েছে বাঁশি। আর এতেই পাল্টে যাচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার চিত্র।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তায় দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সূত্র বলছে, স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় গত এক মাসে অন্তত ১১৫ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফিরে এসেছে স্বস্তি। এ পরিকল্পনার মূলে রয়েছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন-৮) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম। এপিবিএন-৮ এর অধিনায়কের সঙ্গে পরামর্শ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় যুক্ত করেছেন ভিন্ন মাত্রা।

প্রতিদিন ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে গড়ে পাহারা দেন ৩ হাজার ৮০০ জন। রোটেশন অনুযায়ী ১৫ থেকে ২০ দিন পরপর একেকজনের পাহারার দায়িত্ব পড়ে। মোট পাহারা পোস্ট ১০১টি। প্রত্যেক পাহারাদার দলের দলনেতার মোবাইল নম্বর পুলিশের কাছে রয়েছে।

উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্যাম্পে সাধারণ রোহিঙ্গারা যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার আগেই সেই তথ্য প্রশাসনকে জানিয়ে দেয়, তাতে সেখানে বড় ধরনের কোনো অঘটনের আশঙ্কা থাকবে না।

উখিয়ার জামতলীর বি ব্লকের মাঝি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সবাই মিলে পাহারা দিই। ভয়ে খারাপ লোকেরা এলাকায় ঢোকার সাহস পায় না। প্রথমে শুধু হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে পাহারা দিতাম। এখন বাঁশিও পেয়েছি।’

মাঝি বাছেদ বলেন, ‘কিছু লোকের কারণেই ক্যাম্পের পরিবেশ খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। কথা না শুনলে ওরা একে-ওকে মারধর করেন। অনেকে আরসার নাম ভাঙিয়ে ভয় দেখানোরও চেষ্টা করেন।’

গতকাল এপিবিএন-৮ এর অধীন ১১টি ক্যাম্প অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান শফিউল্লাহ কাটা ও জামতলী পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম রোহিঙ্গা পাহারাদারদের মধ্যে বাঁশি বিতরণ করেন।

অধিনায়ক মোহাম্মাদ সিহাব কায়সার খান বলেন, ‘আমাদের আওতাধীন ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির রোহিঙ্গা সদস্যের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। তারা আমাদের প্রবর্তিত স্বেচ্ছা পাহারা ব্যবস্থার প্রতি সম্মান রেখে প্রতিদিন রাতে পাহারা দিচ্ছেন। এতে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট কমিউনিটিকে যুক্ত করা পুলিশের একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। এখান থেকেই রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবীদের দিয়ে রাতের পাহারার চিন্তা করি। তাদের সাহায্যেই আমরা অন্তত ১১৫ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত