Ajker Patrika

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা নেওয়ার আকুতি

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১২: ২৮
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা নেওয়ার আকুতি

চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার আকুতি জানিয়েছেন তাঁর বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস। ২০১৭ সালে ৬ অক্টোবর নগরীর সদরঘাট থানাধীন দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে বের করে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয় সুদীপ্তকে। তিনি ওই সময় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক পদে ছিলেন।

এ হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হতে সময় লাগে সাড়ে তিন বছর। ২০২০ সালে ১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালীর নেতাসহ ২৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর এই মামলার বেশ কয়েকবার তারিখ নির্ধারণ হলেও চার্জগঠন হয়নি এখনও। চলতি নভেম্বরের শুরুতে মামলাটি মহানগর হাকিম থেকে মহানগর দায়রা আদালতে বদলি হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সেখান থেকে আবার মামলাটি বদলি হয় দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা আদালতে। এই আদালত আরও দুই মাস সময় নিয়ে মামলাটির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন।

সুদীপ্তের স্কুলশিক্ষক বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, মামলাটি নিয়ে সব সময় তাঁদের আতংকের মধ্যে থাকতে হয়।

২০১৩ সালে অবসরে যাওয়ার পর ভেবেছিলেন ছেলেরা সংসারের হাল ধরবেন। কিন্তু সুদীপ্ত হত্যাকাণ্ডে তাঁর সেই আশা ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। বর্তমানে তাঁকে সংসার চালাতে হচ্ছে টিউশন করে। মেঘনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘জানি না এভাবে আমি আর কতদিন পারব। সুদীপ্তের মা তিন বছর ধরে অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসা খরচ জোগাতেও কষ্ট হচ্ছে।’ আর্থিক অবস্থাও খারাপ হওয়ায় সংকটের মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের।

সুদীপ্তের বাবা আরও বলেন, ‘আমি আর কতদিন বাঁচব। মরার আগে যদি ছেলে হত্যার বিচারটা দেখে যেতে পারতাম তাহলে শান্তি পেতাম। ছেলের আত্মাও শান্তি পেত।’ তিনি মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার আহ্বান জানান।

৬৮ বছর বয়সী মেঘনাথ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জানি না সামনে কী হবে? আমাদের ওপর যদি দয়া হয়, তাহলে বিচার পেলেও পেতে পারি। কিন্তু তারপরও কেমন জানি মনে হয়। কোনো কিছু বিশ্বাস করতে পারছি না। আপনারা তো সবই দেখছেন মামলাটি নিয়ে কি হচ্ছে। ছেলে হত্যার ঘটনার সাক্ষী পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।’

মেঘনাথ আরও বলেন, ‘যাঁরা আাসমি তাঁরা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ও প্রভাবশালী। অনেক টাকা-পয়সার মালিক তাঁরা। প্রধান আসামির বাবা একজন সরকারি উকিল। এ জন্য মামলাটি নিয়ে সবসময়ই আমাদের ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়।’

গত বৃহস্পতিবার আদালতে আসামিদের কয়েক জন যখন জামিন চেয়েছিলেন, তখন তাঁদের পক্ষে অনেক আইনজীবী লড়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি তো এত জন দিতে পারব না। কয়েক দিন আগে একজন আইনজীবী দিয়েছিলাম।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা আদালতের কৌঁসুলি (পিপি) মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা যাওয়ার বিষয়টি একেবারেই সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এজন্য একটি সেল রয়েছে। সেখানে চাঞ্চল্যকর কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কোন কোন মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাবে এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমাদের এখানে করার কিছু নেই।’

২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে মোটরসাইকেল ও ট্যাক্সিতে করে নগরীর সদরঘাটের নালাপাড়ায় সুদীপ্ত বিশ্বাসের বাসায় হানা দেয় এক দল দুর্বৃত্ত। এ সময় ঘুমন্ত সুদীপ্তকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে। পরে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করে তাঁকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৯ পুলিশ পরিদর্শক বাধ্যতামূলক অবসরে

‎ডিভোর্সের পরও জোর করে রাতযাপন, বর্তমান স্বামীকে নিয়ে প্রাক্তন স্বামীকে হত্যা ‎

গণবিক্ষোভ আতঙ্কে মোদি সরকার, ১৯৭৪-পরবর্তী সব আন্দোলন নিয়ে গবেষণার নির্দেশ

নিজের বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি কলেজশিক্ষকের

আমাদের জন্য ভারত নেই, বঙ্গোপসাগরে ডুবে মরতে হবে—বিএনপি নেতার সতর্কবার্তা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত