Ajker Patrika

চরাঞ্চলের সব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ

হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২১, ১২: ৫৯
চরাঞ্চলের সব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ

নরসিংদীতে দুই উপজেলায় ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আজ বৃহস্পতিবার ভোট। এর মধ্যে নরসিংদী সদরে দুটি এবং রায়পুরা উপজেলার ১০টি ইউপি রয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে পৃথক সহিংসতায় এ পর্যন্ত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। ভোটের দিন আরও সহিংসতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে, চরাঞ্চলের ৫ থেকে ৬টি ইউপির সব কটি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা গেছে।

নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা নির্বাচন অফিস। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী থাকবে সতর্ক।

রায়পুরার মির্জারচর ইউপিতে নৌকার প্রার্থীর সমর্থক এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। এতে উভয় পক্ষের দুজন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার ভোরে মির্জারচর ইউপির মির্জারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল ভোরে স্বতন্ত্র প্রার্থী (টেলিফোন) মো. জাফর ইকবাল মানিকের বাড়ি ও সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছেন নৌকার প্রার্থী মো. ফিরোজ মিয়ার সমর্থকেরা। আবার কেউ কেউ বলছেন, ফিরোজ মিয়ার সমর্থকদের বাড়িঘরে জাফর ইকবালের সমর্থকেরা হামলা করেছেন।

রায়পুরা থানার বাঁশগাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক মো. ইউসুফ বলেন, ‘হামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’

অন্যদিকে রায়পুরার হাইরমারা ইউপিতে গত মঙ্গলবার বিকেলে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (আনারস) কামরুজ্জামানের প্রচারে হামলার অভিযোগ উঠেছে হাইরমারা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুল হক বাবলার কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সাতজন আহত হন। পুলিশ দুজনকে আটক করেছে।

আহতরা হলেন হাইরমারা গ্রামের মো. ফেরদৌস, রাসেল মিয়া, মো. আরিফ, শরীফ, তারিফ, সাদিকুর রহমান খোকা ও জিকু। তাঁরা সবাই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামানের সমর্থক।

এ বিষয়ে কামরুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান চেয়ারম্যান বাবলার কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও হামলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজুল হক বাবলা বলেন, ‘আমার কর্মী ও সমর্থকেরা ওই এলাকায় প্রচারণা চালাতে যায়। এ সময় আমার দুজন কর্মীকে মেরে আহত করা হয়েছে।’ 
অন্য ইউপিগুলোতে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। কোনো কেন্দ্রকেই আমরা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করি না। তবে চরাঞ্চলের ৫ থেকে ৬টি ইউপির সব কটি কেন্দ্রকেই আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’

 উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজগর হোসেন বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে সতর্কাবস্থায় থাকবে বিজিবি, ডিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি মাঠে সার্বক্ষণিকভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।

গতকাল রায়পুরা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ও নরসিংদী পুলিশ লাইনস ড্রিল শেডে এক ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু করতে পেশাদারির সঙ্গে পুলিশের সব সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে ১০টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ৫৪ জন। সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৯৬ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে হয়েছেন ১০৯ জন। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯৬টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত