Ajker Patrika

বাংলাদেশি বাবার দুই মেয়ে, জাপানি মায়ের ছোট মেয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২১, ১০: ২৮
বাংলাদেশি বাবার  দুই মেয়ে, জাপানি মায়ের ছোট মেয়ে

মেয়েদের নিয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বাবা আর জাপানি মায়ের আইনি লড়াই আপাতত শেষ হলো তিন বোনের বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে। আদালত বলেছেন, ১০ ও ১১ বছর বয়সী বড় দুই মেয়ে থাকবে বাবা ইমরান শরীফের জিম্মায়। আর ছোট মেয়েকে নিজ জিম্মায় রাখতে বাবার করা রিট খারিজ করেছেন আদালত। অর্থাৎ সে থাকবে জাপানে মা এরিকো নাকানোর কাছে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতে ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। এরিকো নাকানোর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

রায়ে আদালত বলেন, মা এরিকো নাকানো সন্তানদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন। তবে তিনি যেহেতু জাপানি নাগরিক এবং সেখানে কর্মরত, তাই তিনি প্রতি তিন মাস পরপর বাংলাদেশে এসে কমপক্ষে ১০ দিন সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বছরে তিনবার বাংলাদেশে আসা-যাওয়াসহ সব খরচ বহন করবেন ইমরান শরীফ। তবে অতিরিক্ত সময় যাওয়া-আসা করলে সেই খরচ মা এরিকোকেই বহন করতে হবে।

রায়ে আদালত আরও বলেন, ইমরান শরীফ মাসে কমপক্ষে দুবার ছুটির দিনে সন্তানদের সঙ্গে তাদের মাকে ভিডিওকলে কথা বলার সুযোগ করে দেবেন। আর বাংলাদেশে আসা-যাওয়া এবং গত কয়েক মাস থাকার খরচ বাবদ ইমরান শরীফ আগামী সাত দিনের মধ্যে এরিকো নাকানোকে ১০ লাখ টাকা দেবেন। সেই সঙ্গে সমাজসেবা কর্মকর্তা শিশুদের তদারকি অব্যাহত রাখবেন এবং প্রতি তিন মাস পরপর হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবর এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেবেন। দুই শিশুকে ফিরে পেতে মা এরিকোর করা রিটটি চলমান থাকবে উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, যেকোনো পক্ষ চাইলে আদালতে আসতে পারবে।

রায় ঘোষণার আগে হাইকোর্ট বলেন, ‘রায়ে কোনো না কোনো পক্ষ ভিকটিম হবে। তবে সবচেয়ে বেশি ভিকটিম হবে এই দুই কন্যাশিশু। আমরা আশা করব বাবা-মা উভয় পক্ষই যেন শিশুদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। আমরা শিশুদের সঙ্গে তিনবার কথা বলেছি। মনে করেছি, বাচ্চাদের বর্তমান পর্যায়ে তাদের কল্যাণের বিষয়টি রেখেই আদেশ দেওয়া সমীচীন।’

রায়ের বিষয়ে এরিকো নাকানোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আজকের পত্রিকাকে বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তাঁরা আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই ইমরান ও এরিকোর বিয়ে হয়। তাঁদের তিন মেয়ে। গত ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দেশে চলে আসেন তিনি। ১৮ জুলাই আসেন এরিকো। দুই মেয়েকে ফিরে পেতে তিনি গত ১৯ আগস্ট রিট করেন। পরে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে আরেকটি রিট করেন ইমরান। পৃথক এই দুই রিটের শুনানি শেষ হয় গত ৩১ অক্টোবর। এরপর গতকাল রায় দিলেন আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত