Ajker Patrika

৮০ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ মে ২০২২, ১৬: ২৭
৮০ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন

ঘূর্ণিঝড় অশনির ক্ষতি এড়াতে খুলনার কৃষকেরা দ্রুত ফসল ঘরে তুলছেন। তাঁরা এখন ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। অশনির ক্ষতি এড়াতে এর আগে মাঠ থেকে দ্রুত বোরো ধান কাটার পরামর্শ দেয় কৃষি বিভাগ।

ঘূর্ণিঝড় অশনির ছোবলে ধানের ক্ষতি হবে। তাই মাঠের ধান দ্রুত ঘরে ওঠানোর তাগাদা দেয় কৃষি বিভাগ। গত রোববার থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে সরাসরি ধান কাটা মনিটরিং করেন। মাঠে গিয়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেন তাঁরা। সোমবার পর্যন্ত ৮০ শতাংশ ধান কাটা সম্ভব হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নে কচুবুনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ ব্যাপারে কৃষক মিলন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কৃষি বিভাগের তাগাদায় ধান কাটতে হচ্ছে। তা না হলে আরও দু-এক দিন পরে কাটতেন বলে তিনি জানান। অপর দিকে বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রবিউল হোসেন বলেন, গত দুদিনে তাঁর উপজেলার বেশির ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। মাঠপর্যায়ে সরাসরি তদারকি করছেন তিনিসহ অন্য কর্মকর্তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে যাতে ফসলের ক্ষতি না হয়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে। কৃষকদের তাগাদা দেওয়া হচ্ছে খেতের ফসল দ্রুত ওঠানোর জন্য। এবার খুলনা জেলায় ৬২ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪৮ হাজারের বেশি হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকি ধান দ্রুত কাটা হয়ে যাবে। এ ছাড়া জেলায় ১৪ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। ১০ হাজার হেক্টর জমির তরমুজ খেত থেকে ওঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে খুলনা জেলাজুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। গত সোমবার সকাল থেকেই এ বৃষ্টি শুরু হয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বৃষ্টির পরিমাণ। এই হঠাৎ বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন ধানচাষিরা। আগামী বৃহস্পতিবার সুপার সাইক্লোন হয়ে উপকূলে আঘাত হানার কথা রয়েছে ঘূর্ণিঝড় অশনির। খুলনা ও বাগেরহাটসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় অশনি কিছুটা উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শক্তি বাড়িয়ে ক্যাটাগরি ১ ক্ষমতাসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে এখন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের টানা গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা সর্বোচ্চ দমকা হাওয়ার আকারে ১৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সাগর উত্তাল রয়েছে।

এটি গত সোমবার দুপুর পর্যন্ত মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮০৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়ের বাইরের দিকের মেঘমালা ইতিমধ্যে দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত চলে এসেছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই মেঘমালা দেশের সব এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে।

১২ বা ১৩ মে ভারতের দক্ষিণ ওডিশায় ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত করার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলার কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর তীরবর্তী যেসব এলাকায় এখনো টেকসই বেড়িবাঁধ হয়নি, সেসব গ্রামে বসবাসকারী পরিবারগুলোর মধ্যে ‘অশনি’ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়িয়েছে। তাদের অধিকাংশের নেই দুর্যোগ সহনীয় বাড়িঘর। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২০ হাজার পরিবারের অনেকেই এখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। এর মধ্যে আরেকটি দুর্যোগের সতর্কতা সংকেত তাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাখাইনে মানবিক করিডর: জান্তার আপত্তিতে সরকারে দ্বিধা

নারীর প্রতি অবমাননা: হেফাজতকে তিন এনসিপি নেত্রীসহ ৬ নারীর লিগ্যাল নোটিশ

মানবিক করিডরে বাংলাদেশের ফায়দা কী

রোগী দেখতে হবে কমপক্ষে ১০ মিনিট, অতিদরিদ্রদের জন্য বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা

সন্ধ্যায় বাজারে গিয়ে নিখোঁজ, ভোরে কালভার্টের নিচে মিলল নারীর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত