Ajker Patrika

চট্টগ্রামে গ্যাস সংকটে চুলা জ্বলছে না ৪ ঘণ্টা

তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ১০
চট্টগ্রামে গ্যাস সংকটে  চুলা জ্বলছে   না ৪ ঘণ্টা

ভোর হতেই ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় সাহিদা আক্তারের। প্রথমে পরিবারের সবার জন্য নাশতা তৈরির তাড়া। সেটা শেষ করতে করতে বারবার তাকাতে হয় ঘড়ির দিকে। ঘড়ির কাঁটা ১০টা ছোঁয়ার আগেই শেষ করতে হবে দুপুরের রান্না। প্রায় এক মাস ধরে এটিই সকালের দৈনন্দিন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকার এই গৃহবধূর। কেননা, সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা—এই চার ঘণ্টা পাওয়া যাচ্ছে না গ্যাস।

শুধু বহদ্দারহাট নয়, নগরের বাকলিয়া, অক্সিজেন, খাঁজা রোড, লাভলেন, আশকার দীঘিরপাড়, পাহাড়তলী, সাগরিকা রোড, জামালখান, পতেঙ্গা, হালিশহর, কাট্টলীসহ বেশ কিছু এলাকায় এক মাস ধরে চলছে গ্যাস সংকট।

চট্টগ্রামে গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। গ্যাস সংকটের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। তবে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, শীত এলে গ্যাসসংকট দেখা দেয়। এখন শীত পড়ছে, তাই সেই সংকট প্রকট হয়েছে।

প্রতিবছর শীতকালে অন্যান্য সময়ের তুলনায় গ্যাসের ব্যবহার বেশি হয়। এ সময় অন্তত প্রায় ২০ শতাংশ অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার হয়। কারণ, শীতের কারণে রান্নার পাশাপাশি গোসল সারতে বাসাবাড়িতে গরম পানির ব্যবহারও বাড়ে। এ জন্যই সংকট তৈরি হয়।

কেজিডিসিএল জানিয়েছে, কোম্পানিটির বর্তমানে দৈনিক প্রায় ৪০ কোটি ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হয়। আবেদন করা গ্রাহকদের গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হলে সেই চাহিদা ৪৫ কোটি ঘনফুট ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু এই চাহিদার বিপরীতে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিড থেকে মাত্র ২৬ থেকে ২৭ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাচ্ছে কোম্পানিটি। আবার এর অর্ধেক গ্যাস চলে যায় কাফকো, সিইউএফএল, কর্ণফুলী পেপার মিল ও দুটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে। বাকি গ্যাস দিয়েই আবাসিকসহ অন্যান্য জায়গায় চাহিদা মেটাতে হয়।

গ্যাস না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে গ্রাহকেরা। যাঁরা বিভিন্ন ভবনে ভাড়া থাকছেন তাঁদের অনেককে বৈদ্যুতিক চুলার সাহায্যে রান্নাবান্না করতে হচ্ছে। আবার যাঁরা বস্তি এলাকায় বসবাস করছেন, তাঁরা বেছে নিয়েছেন মাটির চুলা।

নগরের খাঁজা রোডের আমিনের দোকান এলাকার বাসিন্দা মুজিবুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতি মাসেই গ্যাসের জন্য ৯৭৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অথচ প্রতিদিন নিয়ম করে চার ঘণ্টা গ্যাস পাচ্ছি না। গ্যাস না থাকায় প্রায় প্রতিদিনই বৈদ্যুতিক চুলার সাহায্যে রান্নাবান্না সারতে হচ্ছে। সে জন্য এখন বিদ্যুৎ খরচও দ্বিগুণ হয়েছে।’ একই কথা বলেছেন বাকলিয়া এলাকার একটি বস্তির বাসিন্দা রিকশাচালক শহিদুল ইসলাম।

কেজিডিসিএলের যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও বিতরণের অভাবে প্রতিবছর শীতে গ্যাস সংকট বাড়ে বলে মন্তব্য করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যাস সংকট নিরসনের দাবি নিয়ে আমরা বেশ কয়েকবার কেজিডিসিএলের সঙ্গে বসেছি। এরপরও তারা সমস্যার সমাধান করেনি। লিকেজ ও অপচয় কমাতে পারলে এই সংকট হতো না।’

কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আমিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শীতে গ্যাসের চাপ কিছুটা কম থাকে। এ কারণে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংকট দেখা যাচ্ছে। তবে কোনো গ্রাহক আমাদের কাছে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে গ্যাস সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

ভাগনের বিয়েতে ১ কেজি সোনা, ৪ বস্তা টাকা, ২১০ বিঘা জমি, পেট্রলপাম্প উপহার দিল মাড়োয়ারি পরিবার

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের এমডির অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে কর্মীরা

আস্থায় বাজিমাত ইসলামী ব্যাংক

চট্টগ্রামে র‍্যাব কর্মকর্তার লাশ: মাকে নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহে আত্মহত্যা বলে দাবি ভাইয়ের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত