Ajker Patrika

লবণদানার সমান ক্যামেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৪৬
লবণদানার সমান ক্যামেরা

প্রবাদে আছে, সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। সময়কে ধরে রাখতে না পারলেও অতীত কিংবা ভবিষ্যতে ঘুরে আসার চেষ্টা বিজ্ঞানীরা অনেক বছর ধরেই করছেন। যদিও টাইম মেশিন নামের ওই যন্ত্র আজও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির বিষয়বস্তুই রয়ে গেছে। তবে সময়কে ছবির ফ্রেমে ধরে রাখতে মানুষ ঠিকই শিখেছে। ক্যামেরার ক্লিকে চাইলেই এখন মুহূর্তকে আটকে ফেলা যায়। তবে এই ক্যামেরা কিন্তু উদ্ভাবনের সময় এখনকার মতো ছিল না। ঢাউশ আকারের সেই ক্যামেরা কালের পরিক্রমায় ছোট হতে হতে মুঠোফোনের কাঁধে চড়ে এখন ঢুকে পড়েছে মানুষের পকেটে। এখানেই কি শেষ? না, ক্যামেরা আরও ছোট হচ্ছে। এরই মধ্যে লবণদানার সমান আকারের ক্যামেরা উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা।

ক্যামেরা আবিষ্কার যে কেবল সময়কে ছবির ফ্রেমে আটকে দিয়েছে, তা কিন্তু নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞান, মহাকাশবিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সব কাজে আসছে ক্যামেরা। শরীরের ভেতরকার খবর পেতে ক্যামেরার ব্যবহার এখন যেন সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তবে কেবল শিরা-উপশিরার খবর নয়, বিজ্ঞানীরা চান মস্তিষ্কের নিউরনের ভেতরকার খবরও। এ কারণেই আণুবীক্ষণিক ক্যামেরা উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। লবণদানার সমান ক্যামেরা উদ্ভাবন করে অবশ্য সেই পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছেন বিজ্ঞানীরা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী সায়েন্স ফোকাসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যের পরিপূর্ণ চিত্র পেতে খুব ছোট ক্যামেরা উদ্ভাবন করেছেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় ও ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। লবণের দানার আকৃতির এ ক্যামেরায় তোলা যাবে পরিষ্কার রঙিন ছবি। প্রচলিত ক্যামেরা ক্ষুদ্রাকৃতির ওই ক্যামেরার চেয়ে ৫ লাখ গুণ বড়। তবে ক্ষুদ্রাকৃতির ওই ক্যামেরা প্রচলিত ক্যামেরার মতোই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন। 
লবণের দানার সমান এই ক্যামেরা উদ্ভাবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লেন্স বসানো।

এত ছোট জায়গায় অন্যান্য যন্ত্রাংশ স্থাপনও ছিল অত্যন্ত জটিল ও কঠিন। গবেষক দলের সদস্য ফেলিক্স হাইড বলেন, প্রথমেই তাঁদের নজর দিতে হয়েছে অপটিক্যাল সিস্টেমের দিকে। ইতিমধ্যে সেন্সর ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ ছোট করার পদ্ধতি বের করেছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে তাঁদের জন্য কিছু কাজ এগিয়েই ছিল। তবে অতি ছোট সেন্সর বানানো এত সহজ কাজ নয়। প্রচলিত ক্যামেরায় যে ধরনের লেন্স ব্যবহার করা হয়, ক্ষুদ্রাকৃতির ওই ক্যামেরা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সেই পথে হাঁটেননি বিজ্ঞানীরা। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে মেটাসারফেস নামের ন্যানো টেকনোলজি।

এ প্রক্রিয়ায় মাত্র আধা মিলিমিটার জায়গায় ১৬ লাখ নলাকার আণুবীক্ষণিক কাচ বসানো হয়। এদের মধ্য দিয়ে ক্যামেরায় আলো প্রবেশ করবে। এরপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তোলা হবে ছবি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এত ছোট ক্যামেরাতেও বসানো হয়েছে এসডি কার্ড (মেমোরি কার্ড)। তা না হলে তো আর ছবি জমা করে রাখা যাবে না।

ক্যামেরাপ্রেমীদের জন্য সুখবর হচ্ছে, চিকিৎসাবিজ্ঞান ছাড়াও এই ক্যামেরা কাজে লাগবে স্মার্টফোন প্রযুক্তিতেও। ছোট্ট জায়গায় একত্রে বসানো যাবে শত শত ক্যামেরা। প্রতিটি ক্যামেরা কাজ করবে আলাদাভাবে। ফলে কোনো বস্তুর পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে সহজেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত