Ajker Patrika

ভাগ্যরেখা

শহীদ আ ন ম গোলাম মোস্তফা
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৪০
ভাগ্যরেখা

আ ন ম গোলাম মোস্তফা ছিলেন পূর্বদেশের সাংবাদিক। ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে চারদিকে শুধু আগুনের কুণ্ডলী আর ধোঁয়া। বাড়ির পাশেই ছিল বস্তি, সেখানে আগুন লাগিয়ে দিল পাকিস্তানি সেনারা। অফিসে ফোন করে কোনো সাড়াশব্দ পেলেন না গোলাম মোস্তফা। তখন বাড়ির আলো নিভিয়ে দিয়ে খাওয়ার ঘরে সবাই মিলে রাত কাটালেন।

পরদিন সকালে গোপীবাগ ছাড়লেন। বেরিয়ে পড়লেন অজানার উদ্দেশ্যে। সামনেই খোলা মাঠে মৃতদেহের সারি। আজিজ নামে এক অজানা যুবকের সঙ্গে দেখা হলো। তিনিই বেগুনবাড়িতে আশ্রয় দিলেন পরিবারটিকে। প্রায় এক মাস সেখান থেকে মতিঝিলের অফিসে যাওয়া-আসা করতেন মোস্তফা। এপ্রিলের শেষ দিকে গোপীবাগে ফিরে এলেন।

দেশ যে স্বাধীন হচ্ছে—এ কথা তিনি বলতেন সব সময়। দেশ ছাড়তে রাজি ছিলেন না। ঢাকায় বসেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন।

ভাগ্যে বিশ্বাস ছিল না মোস্তফার। বলতেন, ‘আমার সাফল্যকে রুখবে কে? এমন ভাগ্যরেখা আর কার আছে?’

দেশের পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছিল। সবাই আঁচ করতে পারছিলেন, পাকিস্তানি বাহিনী আর কুলিয়ে উঠতে পারছে না। খুব শিগগির স্বাধীন হবে দেশ। এ রকমই একটা সময়ে ১০ ডিসেম্বর রাত পেরিয়ে ১১ ডিসেম্বর ভোরে মসজিদ থেকে ভেসে আসছিল আজানের ধ্বনি। ছেলে অভি বাবার কোল ছাড়ছিল না। ওকে নিয়ে হাঁটছিলেন তিনি বাড়ির লনে। এ সময় দশ-বারোজন ইউনিফর্ম পরা বন্দুক হাতে মানুষ এসে জানতে চায়, ‘এটা কি মোস্তফা সাহেবের বাড়ি?’

বাড়ি চেনানোর জন্য তারা গোলাম মোস্তফার সম্বন্ধীকে ধরে এনেছিল। মোস্তফার পরিচয় পেয়ে তারা বলে, ‘ভয়ের কিছু নেই। আমাদের সঙ্গে আসুন।’

সাংবাদিকদের কেউ ক্ষতি করতে পারে, সে কথা মোস্তফা একবারও ভাবেননি। হাত দেখে একদিন এক বন্ধু বলেছিল, ‘মোস্তফা, তুমি একদিন খুব বিখ্যাত হবে।’

দেশের জন্য জীবন দিয়ে বিখ্যাত হলেন আ ন ম গোলাম মোস্তফা।

সূত্র: গুণীজনডটওআরজি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত