Ajker Patrika

সেতু ভাঙা, সাঁকোয় পার

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ১৩
সেতু ভাঙা, সাঁকোয় পার

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় একটি সেতু পাহাড়ি ঢলে ধসে যায় ১৪ বছর আগে। এরপর সেতুটি আর পুনর্নির্মাণ হয়নি। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ওই এলাকার ১০ গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সেতুটি নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জানা গেছে, স্থানীয় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালে ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের ঘাগড়া কবিরাজপাড়া এলাকায় খালের ওপর ৪০ ফুট লম্বা একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। কিন্তু সেতুটি নির্মাণের কয়েক মাস পরই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মাটি সরে সেতুটি ধসে যায়।

এরপর দীর্ঘ ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুটি পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। এতে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েন আশপাশের ১০ গ্রামের অন্তত ২৫ হাজার মানুষ। পরে স্থানীয়রা যাতায়াতের জন্য কাঠ ও বাঁশ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করেন। এখন তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশ-কাঠের তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকোটি। ওই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন কবিরাজপাড়া, পটলপাড়া, মণ্ডলপাড়া, সরকারপাড়া, শাকপাড়া, মাছপাড়া, তালতলাসহ ১০টি গ্রামের মানুষজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই এলাকায় কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। পাকা সেতু না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া গ্রামের বৃদ্ধ মানুষও ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হচ্ছেন।

ঘাগড়া কবিরাজপাড়া গ্রামের মণ্ডল মিয়া বলেন, সেতুটি ঠিক করার জন্য আমরা এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বারবার বললেও কোনো কাজ হয় নাই। কয়েক দিন আগে এই সাঁকো পার হতে গিয়ে একজন খালের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করি।

কৃষক হায়দার আলী বলেন, ‘আমরা ভোগান্তি থাইকা মুক্তি চাই।’

ঘাগড়া পুটলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার বলেন, ‘এখানে সেতু না থাকায় এই ভাঙা বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হইতে অনেক ভয় করে। কিন্তু তারপরও আমাদের বিদ্যালয়ে যাইতেই হয়। অনেকেই ভয়ে বিদ্যালয়ে যেতে চায় না।’

ঘাগড়া পুটলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘খালের ওইপাড় থেকে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আসে। পাকা সেতু না থাকায় তাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

স্থানীয় হাতিবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আকবর আলী জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য আমরা ইউনিয়ন পরিষদের তরফ থেকে বারবার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কিন্তু এখনো সেতুটি নির্মাণে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সেতুটি নির্মাণের দাবি জানান তিনি।’

এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল বলেন, ‘আমি ভেঙে পড়া সেতুটি পরিদর্শন করেছি। সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলেই সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।’

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ নিরসনে ওই খালের ওপর সেতুটি পুনর্নির্মাণে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত