Ajker Patrika

সংঘর্ষে ঝরল যুবকের প্রাণ

পাবনা ও মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৮
সংঘর্ষে ঝরল যুবকের প্রাণ

পাবনার বেড়া পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গত বুধবার রাতে পৌরসভার হাতিগাড়া চৌরাস্তা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে নওগাঁর মান্দায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত যুবক এমরান হোসেন রানার মৃত্যু হয়েছে।

বেড়ায় আহত ব্যক্তিরা হলেন নৌকার সমর্থক মুন্নাফ আলী, আল মাহমুদ, আরিফুল ইসলাম, শাহাদত প্রামানিক, মিলন ফকির, ফারুক খান, শাহিন খাঁ ও দুলাল প্রামাণিক। অন্যদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নৌকার প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জন বলেন, বুধবার রাতে বেড়া পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারের লক্ষ্যে তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি হাতিগাড়া চৌরাস্তা মোড়ে পৌঁছায়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল বাতেন ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা আরেকটি মিছিল নিয়ে আসেন। তাঁরা অতর্কিতে নৌকার মিছিলে হামলা করেন। মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হলে আব্দুল বাতেনের সমর্থকেরা নৌকার নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে বেড়া থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে বাতেন ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা পালিয়ে যান।

তবে এ বিষয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল বাতেন বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী জনবিচ্ছিন্ন হয়ে একের পর এক মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছেন। আমাদের প্রচার মিছিলে হামলা করেন নৌকার লোকজন। এ সময় আমার অনেক কর্মী-সমর্থককে মারধর করেন। আবার তাঁরাই উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নৌকার প্রার্থী ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা।’

বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, দুটি মিছিল মুখোমুখি হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও বেড়া পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাঁরা সবাইকে বলে আসছেন। কোনো প্রকার সহিংসতা না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কেউ সংঘর্ষে লিপ্ত হন, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে মান্দায় ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় আহত যুবক এমরান হোসেন রানা (৩৬) মারা গেছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর সতীহাট এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সংঘাত এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এমরান হোসেন রানা উপজেলার গণেশপুর ইউপির উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দের দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সতীহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী হানিফ উদ্দিন মণ্ডলের পাঁচ কর্মী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরীর তিন কর্মী আহত হন। এমরান ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী।

এমরানের মা রেজিয়া বিবি বলেন, তাঁর ছেলে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তিনি বাবুল চৌধুরীর বিআর সুপার পরিবহনের সুপারভাইজার ছিলেন।

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, এমরানের মৃত্যুর ঘটনায় এজাহার পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত