Ajker Patrika

পানি সরবরাহ শুরু আজ

বাবলু মোস্তাফিজ, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ২১
পানি সরবরাহ শুরু আজ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দেশের অন্যতম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষে (জিকে) পানি সরবরাহ শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার থেকে। এতে করে আগামী ১০ মাস নিরবচ্ছিন্ন সেচসুবিধা পাবেন চার জেলার কয়েক লাখ কৃষক। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। তবে তিনি জানান, তিনটি পাম্পের মধ্যে ২ নম্বরটি মেকানিক্যাল সমস্যার কারণে এখন চালু হচ্ছে না।

এদিকে চার বছর ধরে অকেজো হয়ে থাকা ৩৭ হাজার হর্স পাওয়ারের ৩ নম্বর পাম্পটি গত নভেম্বরে মেরামতের পর সচল হয়েছে।

সেচ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে স্থাপিত তিনটি পাম্প দিয়ে বছরের ১০ মাস (১৫ জানুয়ারি-১৫ অক্টোবর পর্যন্ত) ২৪ ঘণ্টা পানি সরবরাহ করা হয়। বাকি দুই মাস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়। নদী থেকে প্রধান খালে পানি উত্তোলনের জন্য তিনটি মূল পাম্পের প্রতিটির নির্ধারিত পানি উত্তোলন ক্ষমতা ৩৭ কিউসেক। এর সঙ্গে ১২টি সম্পূরক পাম্প রয়েছে, যার প্রতিটির নির্ধারিত পানি উত্তোলন ক্ষমতা ৩ দশমিক ৫ কিউসেক। পানি উত্তোলনে এ ১৫টি পাম্পের সর্বমোট পানি উত্তোলন ক্ষমতা ১৫৩ কিউসেক।

এদিকে ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে ৩ নম্বর পাম্প অকেজো হয়ে যায়। চার বছর দুটি পাম্প দিয়ে পানি সরবরাহ করা হয়েছিল। অকেজো হয়ে যাওয়া ৩৭ হাজার হর্স পাওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন ৩ নম্বর পাম্পটি মেরামতের জন্য জাপান থেকে ইবারা কোম্পানির একটি প্রতিনিধিদল আসে। ইতিপূর্বে এ কোম্পানি পাম্প তিনটি স্থাপন করেছিল। কোম্পানিটি মেরামত বাবদ ১৭ কোটি টাকার প্রস্তাব পেশ করে। এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সরকারি প্রতিষ্ঠান বিটাকের কাছ থেকেও মেরামতের প্রস্তাব পায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিটাকের সঙ্গে চুক্তি হয়। বিটাক এ সময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অটোকন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে মেরামতের জন্য ৩ কোটি ৭১ লাখ টাকায় চুক্তি করে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলীরা গত ১২ নভেম্বর ৩ নম্বর পাম্পটি সচল করেন।

নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, পাম্পটি চালু হওয়ায় চার জেলার কৃষকেরা আগামী ১০ মাস নিরবচ্ছিন্ন সেচসুবিধা পাবেন। এতে ফসল ভালো হবে। বিটাকসহ মূল সাপোর্টে ছিল অটোকন ইঞ্জিনিয়ারিং। এ দুটি প্রতিষ্ঠান ভালো কাজ করায় পাম্পটি চালু হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জিকে সেচ প্রকল্পের অধীনে রয়েছে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরার ১৩টি উপজেলা। উপজেলাগুলো হলো ভেড়ামারা, মিরপুর, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া সদর, কুমারখালী, খোকসা, চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহ সদর, হরিণাকুণ্ডু, শৈলকুপা, মাগুরা সদর এবং শ্রীপুর। সেচযোগ্য জমির পরিমাণ ১ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর। চার জেলায় ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল রয়েছে। এ ছাড়া ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খাল বা নালা রয়েছে। জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান এবং শাখা খালে পানি থাকলে সেচসুবিধাসহ এ অঞ্চলের জলাশয়, পুকুরে পানি স্বাভাবিক থাকে। টিউবওয়েলেও ভালোভাবে পানি পাওয়া যায়।

কৃষকেরা জানান, প্রকল্পের শুরুতে আমন ফসলকে প্রধান ফসল হিসেবে গণ্য করে ওই সময়েই পানি সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে বোরো ফসল প্রধান। এ জন্য বোরো মৌসুমেও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

সেচ সুবিধা থাকার পরও নানা কারণে কৃষকেরা সুফল পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন ভেড়ামারা জিকে প্রজেক্ট পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বুলবুল কবির। তিনি বলেন, ‘কৃষকেরা নামকাওয়াস্তে পানি পান। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে। এ ছাড়া নালাগুলো (প্রশাখা খাল) দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার নেই। অনেক নালা বা খাল দখল হয়ে গেছে। এগুলো দেখভাল বা তদারকি নেই প্রজেক্ট সংশ্লিষ্টদের। ফলে জমিতে পানি পৌঁছাতে পারে না।’

সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে পানি পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন বুলবুল কবির।

পানি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নিয়ে কাজ করেন সেচ প্রকল্পের উপপ্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মতিন। তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘পানি সরবরাহ শুরু হচ্ছে। এতে করে কৃষকেরা সুফল পাবেন। যেখানে সমস্যা রয়েছে সেখানে পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

মানবিক করিডর না ভূ-রাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত