Ajker Patrika

গল্প ও জীবন

সম্পাদকীয়
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২২, ১৩: ০৩
গল্প ও জীবন

সোমেন চন্দের জন্ম ঢাকার কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামে। এটা ছিল তাঁর নানাবাড়ি। মাত্র চার বছর বয়সে মা হিরণবালাকে হারিয়েছিলেন তিনি। এরপর বাবা নরেন্দ্রকুমার চন্দ বিয়ে করেছিলেন ডা. শরৎচন্দ্র বসুর মেয়ে সরযুদেবীকে। সরযুদেবীর কাছেই বেড়ে ওঠেন সোমেন।

ঢাকার তাঁতীবাজারে কেটেছিল শৈশব। পোগোজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেছিলেন। ইন্টারমিডিয়েটের পর ভর্তি হয়েছিলেন মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি।

‘নিখিল ভারত প্রগতি লেখক সংঘ’ গঠিত হলে সোমেন চন্দ তাতে যোগ দেন। রণেশ দাশগুপ্ত তাঁকে বিশাল সাহিত্যজগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। অসাধারণ সব গল্প লিখেছেন তিনি। তাঁর লেখা ‘ইঁদুর’ ‘দাঙ্গা’, ‘বনস্পতি’সহ সব গল্পই একজন সৃষ্টিশীল লেখককে পরিচিত করে দেবে।

হিটলারের নাৎসি বাহিনী সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করার পর ‘ফ্যাসিবিরোধী লেখক সংঘ’ গড়ে ওঠে। ঢাকায় এই সংগঠনের সম্পাদক ছিলেন সোমেন চন্দ। কমিউনিস্টদের বিপক্ষে দাঁড়ায় ফরোয়ার্ড ব্লক ও আরএসপি। তারা মনে করতেন আন্দোলনটা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে, তাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তা ব্রিটিশদের হাত শক্তিশালী করবে।

ঢাকার সূত্রাপুরে ফ্যাসিবিরোধী সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল ১৯৪২ সালের ৮ মার্চ। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্যই সোমেন চন্দ রেলওয়ে কলোনি থেকে একটি মিছিল নিয়ে আসছিলেন। লক্ষ্মীবাজারের কাছে মিছিলটা পৌঁছালে ফ্যাসিবাদের পক্ষের রাজনৈতিক দলের আক্রমণের মুখে পড়ে। সেখানে সোমেন চন্দকে ছুরি ও শাবলের আঘাতে হত্যা করা হয়।

‘বনস্পতি’ গল্পে সোমেন লিখেছিলেন, ‘সতীন মিত্র চিৎকার করে কেবল এইটুকুই বলতে পেরেছেন, “ভাই সব, এদের চিনে রাখুন, এরা সেই জমিদারদেরই ভাড়াটে গুন্ডা, লাঠি চালিয়ে আমাদের মুখ বন্ধ করতে এসেছে।” এর বেশি আর বলা হয়নি। লাঠির ঘা খেয়ে নিচে পড়ে গেছে। রক্তে তাঁর শরীর ও মাটি লাল হয়ে গেল।’

১৯৪০ সালে লেখা গল্পে নিজের মৃত্যুর কথাই কি তিনি লিখেছিলেন?

সূত্র: মণি সিংহ, জীবনসংগ্রাম, পৃষ্ঠা ১৫২-১৫৩

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত