Ajker Patrika

সেতু ভাঙা, সাঁকোয় পারাপার

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৪
সেতু ভাঙা, সাঁকোয় পারাপার

সুনামগঞ্জে গত বছর চার দফা বন্যা হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার বিভিন্ন এলাকার সড়ক, সেতু ও কালভার্ট। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার-ছাতক সড়কের নোয়াগাঁও অংশ ও একটি সেতু ভেঙে যায়। বন্যায় সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার-ছাতক সড়কের নোয়াগাঁও এলাকার ৫শ মিটার সড়ক ও একটি সেতু ভাঙনের দেড় বছর অতিবাহিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সংস্কারের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। আর তাতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তিন উপজেলার দুই লাখেরও বেশি মানুষ। ভাঙন কবলিত স্থানে দুটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো রয়েছে। এগুলোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

২০২০ সালের জুন মাসে পরপর চার দফা বন্যায় সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার-ছাতক সড়কের নোয়াগাঁও এলাকায় নির্মিত সেতু ও সড়ক ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ৫০০ মিটার সড়ক ও একটি সেতু ধসে পড়ে। সড়ক ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সরাসরি যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

চলাচলের সুবিধার জন্য এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে দুটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছে। এই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে পারাপার ও খেয়া নৌকায় করে মোটরসাইকেল এপার ওপার করছেন মানুষজন। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি খরচ হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সময়। সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার-ছাতক সড়কের দৈর্ঘ্য ২৮ কিলোমিটার।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিগত বছরের বন্যায় প্রায় ৯শ কিলোমিটার সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারা বাজার, জামালগঞ্জ, ছাতক, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার কাঁচা-পাকা সড়কে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। খানাখন্দে ভরে গেছে সড়ক। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সড়কের জরুরি মেরামত কাজ হলেও পরিপূর্ণ কাজ এখনো শুরু না হওয়ায় জনভোগান্তি রয়েই গেছে।

ছাতক দোয়ারাবাজার সড়কের নোয়াগাঁও এলাকার সড়কটি এখনো সংস্কার না হওয়ার ছাতক বা দোয়ারাবাজার থেকে জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যান চলাচল বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এই সড়কের ভাঙা অংশ দিয়ে নৌকা আর ছোট বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে জনসাধারণকে।

এই সড়কে চলাচলকারী ছাতক উপজেলার নোয়রাই গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, ‘জেলা সদরে জরুরি কাজে আমরা এই সড়কটাই ব্যবহার করি। এটি জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল দ্রুত সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া। কিন্তু দেড় বছর হয়ে গেছে, কোনো কাজ হয়নি। ব্রিজ ভাঙা থাকার করণে বিকল্প উপায়ে জেলা সদরে যেতে হচ্ছে আমাদের। এতে বাড়তি টাকা খরচ হয়। সময়ও বেশি লাগে।’

দোয়ারাবাজার উপজেলার বিয়ানিবাজার গ্রামের বজলুল রশিদ বলেন, ‘কোনো অসুস্থ রোগীকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া দরকার।

নোয়াগাঁও গ্রামেরই বাসিন্দা খালেক আহমদ বলেন, ‘সড়ক ভাঙা থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়। দ্রুত এই সড়ক ও সেতুটি সংস্কার করা দরকার।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম জানান, গত বছর কয়েক দফা বন্যায় সুনামগঞ্জে অনেকগুলো সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এর সঙ্গে সেতু ও কালভার্টও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে বেশ কিছু সড়কে সংস্কার কাজ হয়েছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কের ভাঙন সংস্কার ও সেখানে সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে আছে। ছাতক দোয়ারাবাজার সড়কের ভাঙন এলাকায় কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগ হলে দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া জেলার অন্যান্য সড়কের কাজের জন্য ডিপিপি আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত