ফারুক মেহেদী, ঢাকা
সবকিছু ছাপিয়ে এখন আলোচনা দেশের অর্থনীতি। এটি কী শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে, নাকি নড়বড়ে–দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী থেকে মহল্লার চায়ের দোকানি পর্যন্ত এখন এ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এ আলোচনা উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজনীতিতেও। তবে অর্থনীতি নিয়ে যতই আলোচনা-সমালোচনা বা বিতর্কই হোক না কেন–সরকারের ভেতরে এ নিয়ে কিছুটা হলেও আতঙ্ক কাজ করছে।
এরই মধ্যে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট, মুডিসসহ বিশ্বখ্যাত সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতি যে সহজে গতি হারাবে না–তা স্পষ্ট করার পরও নির্ভার থাকতে পারছে না সরকার। কেন সরকার কৃচ্ছ্রসাধন, ডলার খরচে কৃপণতা আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচে সতর্ক হয়েছে–সরকারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী তা পরিষ্কার করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হয়েছে যে, সাশ্রয়ের পাশাপাশি ঋণ নিয়ে হলেও ডলারের মজুত বাড়ানোই এখন লক্ষ্য।
বিভিন্ন ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ আর বিশ্লেষকদের সঙ্গে রিজার্ভ, ডলারসহ সমসাময়িক অর্থনীতি নিয়ে কথা হয়। তাঁরা মনে করেন, সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো যদি রিজার্ভ থাকে তাহলেই অর্থনীতি নিরাপদ আছে বলে মনে করা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ আছে, তা অন্তত পাঁচ মাসের অধিক আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট। সুতরাং তাদের এই বক্তব্য ঠিক থাকলে অর্থনীতি ঝুঁকিমুক্ত—এটা বলা যায়।
তাহলে সরকার আমদানিতে কেন এত কড়াকড়ি আরোপ করল, কেন বাজারে বিপুল চাহিদার মধ্যেও কম কম করে ডলার ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, কেন তবে সরকারি-বেসরকারি সর্বত্র কৃচ্ছ্রসাধনের নির্দেশ, বিদ্যুৎ রেশনিং করছে—এই সব প্রশ্ন সর্বত্র। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায়। তিনি বলেছেন, এটি আসলে সরকারের আগাম সতর্কতা। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে ৯ মাসের খাদ্যশস্য কেনার সক্ষমতা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে চাহিদার চেয়েও বেশি অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশ বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হয়েছে। আমরা যাতে আরও মহাবিপদে না পড়ি সে জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।’
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসও সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, রিজার্ভসহ সবকিছু ঠিক আছে। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ও একই দিনে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, তাদের ৩৬ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে, আর পাইপলাইনে আছে ছয় মাসের জ্বালানি। অর্থাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ অন্য খাতে ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি থাকার পরও সরকার লোডশেডিং করছে। জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ শতাংশ আমদানি ব্যয় হয় জ্বালানি খাতে। এ খাতে ব্যয় কমাতেই লোডশেডিং করা হচ্ছে। জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করা হয়েছে। ফলে জ্বালানি খাতে মহার্ঘ ডলার সাশ্রয় হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং–সানেমের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কোনোভাবেই তুলনীয় নয়। বাংলাদেশের অবস্থান যথেষ্ট শক্ত ও স্থিতিশীল। তবে এরপরও সরকার যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করেছে, এটা খুবই ইতিবাচক দিক। তিনি বলেন, ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে না দেওয়ায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অনেকে ডলার সংকটের আশঙ্কায় মজুত করে থাকতে পারেন। বলা যায় এটা নিয়ে একটা কারসাজির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে খোলাবাজারে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে অভিযানও চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি কঠিন হওয়ার আগেই তা করা দরকার ছিল।
সেলিম রায়হান বলেন, ডলারের মজুত বাড়াতে আইএমএফসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাব ইতিবাচক। সুদের হার কম হওয়ায় এ ঋণ সামনে বাজেটারি সহায়তা হিসেবে সরকার খরচ করতে পারবে। যদিও ঋণের শর্ত যাতে কঠিন না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। সবকিছুর পরও তিনি মনে করেন, জ্বালানিতে ভর্তুকি কমিয়ে, দাম কিছুটা সমন্বয় করা দরকার। এতে সরকারের ওপর চাপ কমবে।
ডলার কারসাজির সন্দেহ করছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন। তিনি গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ডলারের বাজারে নৈরাজ্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এর পেছনে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই নাজুক হচ্ছে। আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থা মন্দার আশঙ্কা করছেন। উন্নত দেশগুলোও এ মন্দা থেকে রেহাই পাবে না। তাই আমদানিনির্ভর বাংলাদেশের এ জন্য আগাম সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। তা ছাড়া শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থা থেকে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকট দেখেই সরকার আরও বেশি সতর্ক হয়ে, আগেভাগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে সরকার নিজেদের কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করা, গাড়ি ব্যবহারে কড়াকড়ি, উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ কাটছাঁটসহ নানান উপায়ে খরচ কমানো শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক দফায় দফায় ডলার সাশ্রয়ে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে লাগাম টানা, বড় ঋণপত্র খোলায় নজরদারিসহ সব স্তরে ব্যয় সাশ্রয়ের রাশি রাশি নির্দেশনা এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে। এতে ফলও পাওয়া যাচ্ছে। আমদানি অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
তবে বিশ্ববাজারে এখনো দ্রব্যমূল্য সহনীয় না হওয়ায় এর পুরো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। ডলারের চাহিদা কমছে না। দাম খোলাবাজারে ১১২-১১৩ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। বিপুল চাহিদার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এর দাম ৯৪ টাকার মধ্যে ধরে রেখে অল্প অল্প করে বাজারে ছাড়ছে। এতে খোলাবাজার আর ব্যাংকের দরের মধ্যে বড় পার্থক্য হওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহও সন্তোষজনক হচ্ছে না। অথচ এক বছরে রেকর্ড ১০ লাখ কর্মী বিদেশে গিয়েছে। তাদের রেমিট্যান্সের প্রতিফলন বৈধ চ্যানেলে দেখা যাচ্ছে না। দামের বড় পার্থক্যের কারণে প্রশ্ন উঠেছে কারসাজির।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পর্ষদ পরিচালক ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জামালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ডলার কারসাজিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও কারও সংশ্লিষ্টতাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তারা ডলারকে আটকে রাখছে, অথচ অসাধু চক্র মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। ব্যাংকও এখানে দায় এড়াতে পারে না। সুদের হারের নয়ছয়ের কারণে অনেকে ব্যাংকে টাকা না রেখে ডলারে বিনিয়োগ করে বাড়তি মুনাফা করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দেশের সার্বিক অর্থনীতি নিয়ে ঝুঁকি না থাকলেও সরকারের আগাম সতর্কতাকে তিনিও ইতিবাচক মনে করছেন।
সবকিছু ছাপিয়ে এখন আলোচনা দেশের অর্থনীতি। এটি কী শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে, নাকি নড়বড়ে–দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী থেকে মহল্লার চায়ের দোকানি পর্যন্ত এখন এ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এ আলোচনা উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজনীতিতেও। তবে অর্থনীতি নিয়ে যতই আলোচনা-সমালোচনা বা বিতর্কই হোক না কেন–সরকারের ভেতরে এ নিয়ে কিছুটা হলেও আতঙ্ক কাজ করছে।
এরই মধ্যে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট, মুডিসসহ বিশ্বখ্যাত সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতি যে সহজে গতি হারাবে না–তা স্পষ্ট করার পরও নির্ভার থাকতে পারছে না সরকার। কেন সরকার কৃচ্ছ্রসাধন, ডলার খরচে কৃপণতা আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচে সতর্ক হয়েছে–সরকারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী তা পরিষ্কার করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হয়েছে যে, সাশ্রয়ের পাশাপাশি ঋণ নিয়ে হলেও ডলারের মজুত বাড়ানোই এখন লক্ষ্য।
বিভিন্ন ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ আর বিশ্লেষকদের সঙ্গে রিজার্ভ, ডলারসহ সমসাময়িক অর্থনীতি নিয়ে কথা হয়। তাঁরা মনে করেন, সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো যদি রিজার্ভ থাকে তাহলেই অর্থনীতি নিরাপদ আছে বলে মনে করা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ আছে, তা অন্তত পাঁচ মাসের অধিক আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট। সুতরাং তাদের এই বক্তব্য ঠিক থাকলে অর্থনীতি ঝুঁকিমুক্ত—এটা বলা যায়।
তাহলে সরকার আমদানিতে কেন এত কড়াকড়ি আরোপ করল, কেন বাজারে বিপুল চাহিদার মধ্যেও কম কম করে ডলার ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, কেন তবে সরকারি-বেসরকারি সর্বত্র কৃচ্ছ্রসাধনের নির্দেশ, বিদ্যুৎ রেশনিং করছে—এই সব প্রশ্ন সর্বত্র। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায়। তিনি বলেছেন, এটি আসলে সরকারের আগাম সতর্কতা। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে ৯ মাসের খাদ্যশস্য কেনার সক্ষমতা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে চাহিদার চেয়েও বেশি অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশ বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হয়েছে। আমরা যাতে আরও মহাবিপদে না পড়ি সে জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।’
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসও সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, রিজার্ভসহ সবকিছু ঠিক আছে। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ও একই দিনে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, তাদের ৩৬ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে, আর পাইপলাইনে আছে ছয় মাসের জ্বালানি। অর্থাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ অন্য খাতে ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি থাকার পরও সরকার লোডশেডিং করছে। জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ শতাংশ আমদানি ব্যয় হয় জ্বালানি খাতে। এ খাতে ব্যয় কমাতেই লোডশেডিং করা হচ্ছে। জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করা হয়েছে। ফলে জ্বালানি খাতে মহার্ঘ ডলার সাশ্রয় হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং–সানেমের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কোনোভাবেই তুলনীয় নয়। বাংলাদেশের অবস্থান যথেষ্ট শক্ত ও স্থিতিশীল। তবে এরপরও সরকার যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করেছে, এটা খুবই ইতিবাচক দিক। তিনি বলেন, ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে না দেওয়ায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অনেকে ডলার সংকটের আশঙ্কায় মজুত করে থাকতে পারেন। বলা যায় এটা নিয়ে একটা কারসাজির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে খোলাবাজারে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে অভিযানও চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি কঠিন হওয়ার আগেই তা করা দরকার ছিল।
সেলিম রায়হান বলেন, ডলারের মজুত বাড়াতে আইএমএফসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাব ইতিবাচক। সুদের হার কম হওয়ায় এ ঋণ সামনে বাজেটারি সহায়তা হিসেবে সরকার খরচ করতে পারবে। যদিও ঋণের শর্ত যাতে কঠিন না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। সবকিছুর পরও তিনি মনে করেন, জ্বালানিতে ভর্তুকি কমিয়ে, দাম কিছুটা সমন্বয় করা দরকার। এতে সরকারের ওপর চাপ কমবে।
ডলার কারসাজির সন্দেহ করছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন। তিনি গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ডলারের বাজারে নৈরাজ্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এর পেছনে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই নাজুক হচ্ছে। আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থা মন্দার আশঙ্কা করছেন। উন্নত দেশগুলোও এ মন্দা থেকে রেহাই পাবে না। তাই আমদানিনির্ভর বাংলাদেশের এ জন্য আগাম সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। তা ছাড়া শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থা থেকে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকট দেখেই সরকার আরও বেশি সতর্ক হয়ে, আগেভাগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে সরকার নিজেদের কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করা, গাড়ি ব্যবহারে কড়াকড়ি, উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ কাটছাঁটসহ নানান উপায়ে খরচ কমানো শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক দফায় দফায় ডলার সাশ্রয়ে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে লাগাম টানা, বড় ঋণপত্র খোলায় নজরদারিসহ সব স্তরে ব্যয় সাশ্রয়ের রাশি রাশি নির্দেশনা এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে। এতে ফলও পাওয়া যাচ্ছে। আমদানি অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
তবে বিশ্ববাজারে এখনো দ্রব্যমূল্য সহনীয় না হওয়ায় এর পুরো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। ডলারের চাহিদা কমছে না। দাম খোলাবাজারে ১১২-১১৩ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। বিপুল চাহিদার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এর দাম ৯৪ টাকার মধ্যে ধরে রেখে অল্প অল্প করে বাজারে ছাড়ছে। এতে খোলাবাজার আর ব্যাংকের দরের মধ্যে বড় পার্থক্য হওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহও সন্তোষজনক হচ্ছে না। অথচ এক বছরে রেকর্ড ১০ লাখ কর্মী বিদেশে গিয়েছে। তাদের রেমিট্যান্সের প্রতিফলন বৈধ চ্যানেলে দেখা যাচ্ছে না। দামের বড় পার্থক্যের কারণে প্রশ্ন উঠেছে কারসাজির।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পর্ষদ পরিচালক ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জামালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ডলার কারসাজিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও কারও সংশ্লিষ্টতাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তারা ডলারকে আটকে রাখছে, অথচ অসাধু চক্র মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। ব্যাংকও এখানে দায় এড়াতে পারে না। সুদের হারের নয়ছয়ের কারণে অনেকে ব্যাংকে টাকা না রেখে ডলারে বিনিয়োগ করে বাড়তি মুনাফা করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দেশের সার্বিক অর্থনীতি নিয়ে ঝুঁকি না থাকলেও সরকারের আগাম সতর্কতাকে তিনিও ইতিবাচক মনে করছেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪