Ajker Patrika

হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠক: গুরুত্ব পাবে বিদ্যুৎ-বাণিজ্য-পানি

সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২, ০৮: ২৫
হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠক: গুরুত্ব পাবে বিদ্যুৎ-বাণিজ্য-পানি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক শীর্ষ বৈঠকে বসবেন। এই বৈঠকে যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে ৫ সেপ্টেম্বর তাঁর ভারতের রাজধানীতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। উভয় পক্ষের কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস বলেছেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে বৈঠক হবে, এটি ধরে নিয়ে প্রস্তুতি চলছে। সফরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে উভয় পক্ষে মন্ত্রী, সচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন সভা হচ্ছে। অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়টি বাংলাদেশের অন্যতম অগ্রাধিকার হওয়ায় ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে পানিসম্পদমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক। দীর্ঘ ১২ বছর পর কমিশনের এই বৈঠক হচ্ছে বলে এর প্রতি সরকারের বেশ আগ্রহ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে মনু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি ভাগাভাগির লক্ষ্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির কাঠামো এবং কুশিয়ারা নদী থেকে সেচের পানি পাওয়ার জন্য দুই দেশের সীমান্ত ছুঁয়ে যাওয়া রহিমপুর খাল খননের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক নিয়ে আলোচনা হবে। দুই দেশের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সদ্ব্যবহার প্রসঙ্গে একটি সমীক্ষার অগ্রগতি নিয়েও কথা হবে। এ ছাড়া, ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তির নবায়ন অথবা পর্যালোচনার বিষয়টিও আসতে পারে আলোচনায়। আগামী ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

বহুল আলোচিত তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগির জন্য খসড়া চুক্তি নিয়ে যৌথ নদী কমিশনের ২০১০ সালের বৈঠকে ঐকমত্য হওয়ায় এবার কমিশনের বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচনার জন্য আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অবশ্য গত ১২ বছরেও চুক্তিটি স্বাক্ষর না হওয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষ পর্যায়ের সব বৈঠকে তিস্তার বিষয়টি উত্থাপন করে থাকে। 
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি ভারতীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন।

দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ পরামর্শমূলক কমিশনের বৈঠকসহ বিভিন্ন বৈঠক ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।

এ ছাড়া ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লির বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সকল প্রকার পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক ও অশুল্ক বাধা সরানো, সে দেশে পাট রপ্তানির প্রতিকূলে আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কের অপসারণ, ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি এবং একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনার বিষয়গুলো আসবে। 
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের আগ্রহের দিকগুলো হলো সে দেশের পশ্চিমাংশের সঙ্গে পূর্বাংশের সমন্বিত আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সড়ক, রেল, নৌ ও সমুদ্রপথে আন্তসংযোগ-সুবিধা দ্রুত বাড়ানো ও সহজ করা। এ ছাড়া, প্রতিরক্ষা ঋণচুক্তিসহ বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সব ঋণচুক্তির দ্রুত বাস্তবায়ন এবং সীমান্তের বিভিন্ন অংশে বিশেষ ধরনের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আপত্তির অবসানের বিষয়গুলোও আসতে পারে আলোচনায়।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার ভারতে এটি চতুর্থ দ্বিপক্ষীয় সরকারি সফর। এর আগে ২০১০, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে তিনি দ্বিপক্ষীয় সফরে দিল্লি গিয়েছিলেন। অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনমোহন সিং ২০১১ সালে এবং নরেন্দ্র মোদি ২০১৫ ও ২০২১ সালে দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকায় এসেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত