Ajker Patrika

চিনি ও তেলের দাম চড়া, ক্রেতার স্বস্তি সবজিতে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
চিনি ও তেলের দাম চড়া, ক্রেতার স্বস্তি সবজিতে

সরকার চিনি ও সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিলেও ময়মনসিংহের বাজারে চিনির সংকট রয়েছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া সয়াবিন তেল খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২০৫ থেকে ২১০ টাকা কেজি ধরে। ঊর্ধ্বগতির বাজারে ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তিতে সবজির দামে। একের পর এক পণ্যের দাম বাড়ার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানান ক্রেতারা।

 জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেছেন, চিনির বাজারসহ সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত কাজ করছে পুরো জেলায়। কয়েক দিন আগে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভালুকা, ফুলবাড়িয়া, ফুলপুরে অভিযান চালিয়ে  জরিমানা করা হয়।

ময়মনসিংহ মহানগরীর সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার মেছুয়া বাজার। গতকাল শুক্রবার সকালে বাজারে ঘুরে দেখা যায়, খুচরা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে। অনেক দোকানে চিনি নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারেরা তাঁদের চিনি দিচ্ছেন না। অনেকের গুদামে চিনি থাকলেও তা বিক্রি করা হচ্ছে না।

ছোট বাজারের পাইকারি দরে চিনি বিক্রেতা মেসার্স সুরুজ ট্রেডার্সের মোহাম্মদ মিজান বলেন, ‘গত কয়েক দিন চিনি বস্তাপ্রতি পাইকারি দামে ৪ হাজার ৯৫০ থেকে ৪ হাজার ৯৮০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন সরকার নির্ধারিত দামে চিনির মূল্য আরও বাড়বে। আটা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৬৫০ টাকা বস্তা, ময়দা ৭৪ কেজির বস্তা ৪ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিদ্যুতের কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। যাতায়াত ভাড়াও বাড়তি। আসলে সিন্ডিকেট বলে কিছু নেই। দাম কমলেও আমরাও কমে বিক্রি করতে পারব।’

সয়াবিন তেলের পাইকারি ব্যবসায়ী তপন পাল বলেন, ‘সরকার গত বৃহস্পতিবার তেলের যে দাম নির্ধারণ করেছেন আমরা সেই দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করছি। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা এখান থেকে তেল নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। আমরা লসে বিক্রি করছি।’

ক্রেতা কাউসার হোসেন বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দোহাই দিয়ে পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত। বাজারে সবজির দাম কিছুটা কম থাকলেও চিনি এবং সয়াবিন তেলের দাম খুব চড়া। চিনি ১১৫ টাকা কেজি এবং সয়াবিন তেল ২০৫ টাকা কেজি দরে কিনেছি।’

মেছুয়া বাজারের সবজি বিক্রেতা আসাদুল মিয়া বলেন, নতুন বেশ কয়েক প্রকার সবজি বাজারে এসেছে। এগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি।

তবে অন্যান্য সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

আসাদুল মিয়া বলেন, বেগুন কেজি ৬০ টাকা, করলা ৬০, টমেটো ১২০, গাজর ৮০, শিম ১৪০, কাঁচা কলা হালি ৩০, মুখিকচু কেজি ৬০ টাকা। একই বাজারের আব্দুল হালিম বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সোনালি মুরগি ৩২০ ও সাদা কক ২৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মেছুয়া বাজারের মাছ বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, মাছের দামে তেমন ওঠানামা নেই। তিনি বলেন, বাটা মাছ ২০০ টাকা, গুলশা ৫০০, কাচকি ৩০০, দেশি চিংড়ি ৭০০, দেশি ট্যাংরা ৪০০, ছোট রুই ৩০০ ও কাতল মাছ ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, চিনির বাজারসহ সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত কাজ করছেন পুরো জেলায়। কয়েক দিন আগে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভালুকা, ফুলবাড়িয়া ও ফুলপুরে অভিযান পরিচালনা করে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের দাম স্থিতিশীল রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত