Ajker Patrika

বিচারের আশায় ১০ বছর

নরসিংদী প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৪৮
বিচারের আশায় ১০ বছর

নরসিংদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর আজ ১ নভেম্বর। ২০১১ সালের এই দিনে তাঁকে দলীয় কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি বিচারকাজ। মামলার দীর্ঘসূত্রতায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে লোকমান হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে জনবন্ধু শহীদ লোকমান পরিষদ। প্রয়াত লোকমান হোসেনের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া, গণভোজ, বিনা মূল্যে চিকিৎসাসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম চলবে সংগঠনের উদ্যোগে।

মামলার বাদী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১ নভেম্বর পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ১৪ জনের নামে হত্যামামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ মণ্ডল প্রায় আট মাস তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৪ জুন সালাহউদ্দিনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। তবে অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত ১১ আসামিকে বাদ দেওয়া হয়।

এদিকে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ২০১২ সালের ২৪ জুলাই নরসিংদীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে নারাজি দেন মামলার বাদী মো. কামরুজ্জামান কামরুল। আদালত ২৫ জুলাই সেই নারাজি আবেদন খারিজ করে অভিযোগপত্র বহাল রাখেন। পরে ২৮ আগস্ট নারাজি আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী। আদালত ২ সেপ্টেম্বর সেই আবেদন গ্রহণ করে ৪ নভেম্বর শুনানি শেষে ফের নারাজি আবেদন খারিজ করেন। এরপর উচ্চ আদালতে যান বাদী। তিনি ওই অভিযোগপত্র বাতিল করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে নিম্ন আদালতে বিচারকার্য স্থগিত রাখতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। আদালত বাদীর আবেদনটি আমলে নিয়ে বিচারকার্য স্থগিত করে দেন।

এদিকে আসামিরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি আসামিদের করা রিট পিটিশনটি নিষ্পত্তি করে বাদীর নারাজি আবেদন গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন আদালত। ওই বছর ২৫ জুন দুপুরে নরসিংদী জজ আদালতের মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. রবিকুল ইসলাম শুধুমাত্র বাদী কামরুজ্জামানের জবানবন্দি গ্রহণ করে তদন্ত শেষ করে দেন। পরে বাদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন। তা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আসাদ আলী বলেন, প্রায় ৭ বছর পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে অভিযোগপত্রের ওপর বাদীর দায়ের করা নারাজি আবেদন আদালত গ্রহণ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আদালত শুধুমাত্র বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলার পুনঃতদন্ত শেষ করে দেন। তাই আমরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেছি। বর্তমানে তা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

মামলার বাদী কামরুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি সঠিক ছিল না। সেখানে অভিযুক্ত ১৪ আসামির মধ্যে ১১ আসামিকেই বাদ দেওয়া হয়েছিল। যত দিন পর্যন্ত প্রকৃত আসামিদের বিচারের আওতায় না আনা হবে তত দিন আমরা আইনি লড়াই করে যাব।’

নিহত লোকমান হোসেনের স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা সাংসদ তামান্না নুসরাত বুবলী বলেন, ‘দীর্ঘদিনেও সুষ্ঠু বিচার না পাওয়ার কষ্ট আমরা বয়ে বেড়াচ্ছি। আশা করছি খুব দ্রুত সুষ্ঠু বিচার পাব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত