Ajker Patrika

সার্ভে সনদ ছাড়াই চলছে নৌযান

সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৪৭
সার্ভে সনদ ছাড়াই চলছে নৌযান

সার্ভে সনদ নেই, তারপরও মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল দিয়ে অবৈধভাবে পণ্য পরিবহন করে চলেছে বিভিন্ন নৌযান। হচ্ছে দুর্ঘটনার শিকারও। সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর রাতে এ চ্যানেলের হারবাড়িয়া এলাকায় বিদেশি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গেছে কয়লা বোঝাই একটি বাল্কহেড। চলতি বছরের ১১ মাসেই মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে পাঁচটি নৌযান ডুবির ঘটনা ঘটেছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ৭৫০ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে এম ভি বিবি-১১৪৮, ৩০ মার্চ ৫১০ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে এম ভি ইফসিয়া মাহিন, ৮ অক্টোবর ১ হাজার ২০০ মেট্রিকটন পাথর নিয়ে এম ভি বিউটি অব লোহাগড়া-২ এবং একই দিনে ৮৫২ মেট্রিকটন ডিওপি সার নিয়ে এম ভি দেশবন্ধু ডুবে যায়।

সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর রাতে ৩৭০ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে হারবাড়িয়া এলাকায় ডুবে যায় ফারদিন-১ নামে একটি বাল্কহেড। এতে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন দুজন। দুর্ঘটনার শিকার এসব নৌযান চলাচলের জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কোনো সার্ভে সনদ ছিল না।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ও সচিব কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দিন বলেন, মোংলা বন্দর চ্যানেলে চলতি বছরে মোট পাঁচটি নৌ যান ডুবির ঘটনা ঘটেছে। ১৫ নভেম্বর ডুবে যাওয়া ফারদিন নামে বাল্কহেডটির কোনো সার্ভে সনদসহ আমদানি হওয়া পণ্য পরিবহনের অনুমতি ছিল না। বেআইনিভাবে চলা দুর্ঘটনার শিকার এই বাল্কহেডটিকে বন্দরের পশুর চ্যানেল থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ওঠাতে এর মালিককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বন্দরের নিরাপদ নৌ চ্যানেলের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি এলাকার বাসিন্দা এম ভি ফারদিন-১-এর মালিক ফজলুল হক খোকন এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইতিমধ্যে নৌযানটি উত্তোলন করতে কাজ শুরু করেছেন তিনি। ১৫ দিন সময় লাগবে না দাবি করে তিনি বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই এটি ওঠানো সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, এই বাল্কহেডটি মানিক নামে এক ব্যক্তিকে ভাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু এটি বালু পরিবহনের জন্য, কীভাবে কয়লা পরিবহন হচ্ছিল সেটি তিনি বুঝতে পারছে না বলেও জানান তিনি।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের (ডিজি শিপিং) পরিচালক বদরুল হাসান লিটন বলেন, পণ্য পরিবহনের জন্য বিভিন্ন নৌযানের সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন তাঁরা দিয়ে থাকেন, কিন্তু যেসব নৌযান সার্ভে সনদ না নিয়ে নদীতে চলাচল করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়া দায়িত্ব শুধু তাঁদের একার নয়। তিনি দাবি করেন, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ অবৈধভাবে চলা নৌযানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে মেরিন কোর্টে মামলা দেবে। আর সার্ভে সনদ না থাকা নৌযানের বিরুদ্ধে ৩৩ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আছে বলেও জানান তিনি। কিন্তু এসব সংস্থার দায়িত্বে অবহেলা আছে কি না সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে মোংলা বন্দরের পশুর নদীর হারবাড়িয়া এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজের ধাক্কায় কয়লাবাহী বাল্কহেড জাহাজডুবির ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ও সচিব কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দিন বলেন, কর্তৃপক্ষের সহকারী হারবার মাস্টার আমিনুর রহমানকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠ পাইলট রিয়াজুর রহমান ও নির্বাহী প্রকৌশলী (নৌ নির্মাণ) অনুপ চক্রবর্তী। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

টেলিটক এখন গলার কাঁটা পর্যায়ে চলে এসেছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত